বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে শতরানের পর রচিন রবীন্দ্র। ছবি: রয়টার্স।
বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ৯ উইকেটে হারিয়ে দিল নিউ জ়িল্যান্ড। গত বারের বিশ্বকাপের ফাইনালে ইংল্যান্ড হারিয়ে দিয়েছিল নিউ জ়িল্যান্ডকে। এ বারের বিশ্বকাপের শুরুতে সেই ইংল্যান্ডকে হারিয়ে শুরু করল কিউইরা। আমদাবাদে প্রথমে ব্যাট করে ২৮২ রান করে ইংল্যান্ড। সেই রান সহজেই তুলে নেয় নিউ জ়িল্যান্ড। ডেভন কনওয়ে এবং রাচিন রবীন্দ্র ২৭৩ রানের জুটি গড়ে ম্যাচ জেতালেন।
২৩ বছরের রাচিনের নামকরণ হয়েছে ভারতের দুই প্রাক্তন ক্রিকেটার সচিন তেন্ডুলকর এবং রাহুল দ্রাবিড়ের নাম মিলিয়ে। শেষের জন ঘটনাচক্রে ভারতীয় দলের বর্তমান কোচ। নিউ জ়িল্যান্ডের ওয়েলিংটনে এক ভারতীয় পরিবারে জন্ম রাচিনের। তাঁর বাবা রবি কৃষ্ণমূর্তি পেশায় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। মা দীপা গৃহকর্ত্রী। ১৯৯০-এর দশকে বেঙ্গালুরু থেকে ওয়েলিংটনে চলে আসেন রবি। সেখানে তিনি হাট হকস ক্লাব প্রতিষ্ঠা করেন।
বেঙ্গালুরুতে থাকায় সময়েই ক্রিকেটের প্রতি ঝোঁক ছিল রবির। অল্পবিস্তর খেলাধুলোও করেছেন। ছেলেকেও ক্রিকেটার করার ইচ্ছা ছিল। পরিবারের সমর্থনে নিজেকে ক্রমশ ক্রিকেটার হিসেবে গড়ে তুলতে থাকেন রাচিন। আদতে তিনি অলরাউন্ডার। স্পিনার হিসাবেই বেশি পরিচিত ছিলেন। কিন্তু বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে তাঁকে তিন নম্বরে ব্যাট করতে পাঠিয়ে দেয় নিউ জ়িল্যান্ড। প্রস্তুতি ম্যাচে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ওপেন করতে নেমে ৯৭ রান করা ব্যাটার নিরাশ করেননি দলকে। ম্যাচ জিতিয়েই মাঠ ছাড়লেন রাচিন। অপরাজিত রইলেন ১২৩ রানে।
বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া বিশ্বকাপে আমদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে দর্শক খুবই কম ছিল। এক লাখ ৩০ হাজারের স্টেডিয়ামে মেরেকেটে হাজার বিশেক দর্শক ছিল খেলার শুরুর দিকে। পরে যদিও তা কিছুটা বাড়ে। তাতে মাঠ অর্ধেকও ভর্তি হয়নি। এর আগে কোনও বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে এ রকম শূন্যস্থান দেখা গিয়েছে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে।
তবে যে দর্শকেরা এসেছিলেন, তাঁরা দেখে গেলেন রাচিনকে। আগামী দিনে এই ভারতীয় বংশোদ্ভূত ক্রিকেটার তারকা হয়ে উঠতে পারবেন কি না, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার তিনি মন জয় করে নিলেন ক্রিকেটপ্রেমীদের। ১০ রানে প্রথম উইকেট হারানো নিউ জ়িল্যান্ডকে জেতালেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ডেভন কনওয়ে। যিনি ১৫২ রান করে অপরাজিত থাকলেন।
বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে টস জিতে ইংল্যান্ডকে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন কিউই অধিনায়ক টম লাথাম। এ দিন কেন উইলিয়ামসন খেলেননি। তাঁর চোট এখনও সারেনি। ইংল্যান্ড দলেও ছিলেন না বেন স্টোকস। হাল্কা চোট রয়েছে তাঁর। ইংল্যান্ড প্রথমে ব্যাট করে তোলে ২৮২ রান। কিউই বোলারদের দাপটে আরও কম রানে আটকে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল ইংল্যান্ডের। কিন্তু তা হয়নি লোয়ার অর্ডারেও ব্যাট করার মতো ক্রিকেটার দলে থাকায়। এক দিনের ক্রিকেটে প্রথম বার সব ১ থেকে ১১ নম্বর ব্যাটার, প্রত্যেকে দু’অঙ্কের রান করলেন। এমন রেকর্ড এর আগে কোনও দলের ছিল না।
ইংল্যান্ডের হয়ে সব থেকে বেশি রান জো রুটের। তিন নম্বরে নেমে তিনি ৭৭ রান করেন। ৪৩ রান করেন জস বাটলার। ইংল্যান্ডের ইনিংসের শুরুতেই ভাঙন ধরিয়েছিলেন ম্যাট হেনরি। দাউইদ মালানকে (১৪) আউট করেন তিনি। হেনরি নেন ৩ উইকেট। জনি বেয়ারস্টো (৩৩) এবং রুট যখন সবে ক্রিজে জমতে শুরু করেছেন তখনই, ইংরেজ ওপেনারকে ফেরান কিউই স্পিনার মিচেল স্যান্টনার। চমক দেন অলরাউন্ডার গ্লেন ফিলিপ্স। ৩ ওভার বল করে ১৭ রান দিয়ে ২ উইকেট তুলে নেন তিনি। স্যান্টনার নেন ২ উইকেট। একটি করে উইকেট নেন ট্রেন্ট বোল্ট এবং রাচিন।
২৮২ রানের লক্ষ্য মাথায় নিয়ে ব্যাট করতে নেমে ১০ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় নিউ জ়িল্যান্ড। কোনও রান না করেই আউট হন ওপেনার উইল ইয়ং। সেখান থেকে ২৭৩ রানের জুটি গড়ে ম্যাচ শেষ করে দেন রাচিন এবং কনওয়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy