প্রতিদ্বন্দ্বী: কে কাকে টক্কর দেবেন? প্রস্তুতিতে রুট ও স্মিথ। রয়টার্স।
শুক্রবার থেকে শুরু অ্যাশেজ়ে শুধু ইংল্যান্ড বনাম অস্ট্রেলিয়ার লড়াইয়ের উপরেই নজর থাকবে না ক্রিকেটমহলের, আরও দু’টো দ্বৈরথ দেখার জন্য মুখিয়ে থাকবে ক্রিকেটপ্রেমীরা।
প্রথমটি হল, জো রুট বনাম স্টিভ স্মিথ। এই প্রজন্মের অন্যতম সেরা দুই টেস্ট ব্যাটসম্যানের দ্বৈরথ। দ্বিতীয়টি, ইংল্যান্ডের ‘বাজ়বল’ বনাম অস্ট্রেলিয়ার পেস আক্রমণ।
ইংল্যান্ডের আছে রুট। বর্তমানে যে সব ব্যাটসম্যান খেলছে, তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রান সংগ্রাহক। অস্ট্রেলিয়ার স্টিভ স্মিথ। শতরান করা যাঁর অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। যাঁর ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছে জীবনের সেরা ছন্দে আছেন। এই দুইয়ের লড়াই কিন্তু ঠিক করে দিতে পারে অ্যাশেজ়ের ভাগ্য।
শুধু পরিসংখ্যানের বিচারে অনেকটাই এগিয়ে থাকবেন স্মিথ। অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন অধিনায়কের অ্যাশেজ়ে করা সেঞ্চুরির সংখ্যা ১১। মাত্র দু’জন স্মিথর আগে আছেন। অস্ট্রেলিয়ার ডন ব্র্যাডম্যান (১৯) এবং ইংল্যান্ডের জ্যাক হবস (১২)। অ্যাশেজ়ে রান করার ভিত্তিতে সর্বকালের সেরার তালিকায় স্মিথ রয়েছেন পঞ্চম স্থানে। ৩০৪৪।
অন্য দিকে, পরিসংখ্যানের বিচারে বেশ খানিকটা পিছিয়েই আছেন রুট। অ্যাশেজ়ে করেছেন মোটে তিনটে শতরান। তিনটেই ঘরের মাঠে। ২০১৫ সালের পরে অ্যাশেজ়ে আর শতরান নেই রুটের। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ইংল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়কের ব্যাটিং গড় ৩৮.৭৬। যেখানে বাকি দেশগুলোর বিরুদ্ধে রুটের ব্যাটিং গড় ৫৩.৮২।
ইংল্যান্ডের মাটিতে স্মিথের ব্যাটিং গড় ভাল বললেও কম বলা হবে। ৬৫.০৮। যেখানে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে তাঁর ব্যাটিং গড় ৫৪.৫০। পরিসংখ্যানই বুঝিয়ে দিচ্ছে, ইংল্যান্ডের মাটিতে স্মিথের ধারাবাহিকতা কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে। ২০১৯ সালের অ্যাশেজ়ে, ইংল্যান্ডের মাটিতে ৭৭৪ রান করেছিলেন স্মিথ। তাও মাথায় চোট লাগায় একটা টেস্ট খেলতে পারেননি। স্মিথের ব্যাটিং নিয়ে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী রুট বলেছেন, ‘‘২০১৯ সালে অবিশ্বাস্য ব্যাটিং করেছিল স্মিথ। ও বুঝিয়ে দিয়েছিল, কত ভাল ক্রিকেটার। ওর চারিত্রিক কাঠিন্যটাও বোঝা গিয়েছিল। স্মিথ অ্যাশেজ়ে নিজেকে মেলে ধরতে উন্মুখ হয়ে থাকে।’’
অ্যাশেজ় শুরুর আগে সামান্য চোট সমস্যা ছিল স্মিথের। কিন্তু তিনি তা পুরোপুরি কাটিয়ে উঠেছেন। বৃহস্পতিবার অস্ট্রেলিয়ার নেটে অনেকটা সময় ব্যাট করতে দেখা যায় স্মিথকে। তাঁর প্রতিপক্ষ সম্পর্কে স্মিথ বলেছেন, ‘‘রুট শুধু ইংল্যান্ড ক্রিকেটেই একটা মানদণ্ড নির্দিষ্ট করে দেয়নি, পুরো ক্রিকেটবিশ্বের সামনেও এই মানদণ্ড তুলে ধরেছে।’’
আরও একটা পরিসংখ্যান স্মিথের পক্ষে যাচ্ছে। ২০১৩ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত যত অ্যাশেজ় সিরিজ় হয়েছে, তার মধ্যে মাত্র একটা সিরিজ়েই স্মিথের চেয়ে বেশি রান করেছিলেন রুট। ২০২১-’২২ মরসুমে।
২০২১ সাল থেকে ভাল ছন্দে আছেন রুট। ১২টি শতরান-সহ তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ৩১৮১ রান। এই সময়ের মধ্যে আর কোনও ব্যাটসম্যান ২০০০ রান বা সাতটি শতরানের বেশি করেননি। কিন্তু বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে ভারতের বিরুদ্ধে দুরন্ত শতরান করে স্মিথ বুঝিয়ে দিয়েছেন, অ্যাশেজ় দ্বৈরথের জন্য তিনি তৈরি।
এই অ্যাশেজ়ে আর একটা লড়াইয়ের উপরে নজর থাকবে ক্রিকেটপ্রেমীদের। ‘বাজ়বল’ বনাম অস্ট্রেলীয় পেসারদের লড়াই। ব্রেন্ডন ম্যাকালাম কোচ হয়ে আসার পরেই আগ্রাসী ক্রিকেট খেলতে শুরু করেছে ইংল্যান্ড। যাকে বলা হচ্ছে, বাজ়বল। বেন স্টোকসের নেতৃত্বে এই ভয়ডরহীন ব্যাটিং ইংল্যান্ডকে পর পর টেস্ট জিতিয়ে চলেছে। কিন্তু অস্ট্রেলীয় পেসারদের বিরুদ্ধে কি সেই কৌশল সফল হবে ইংল্যান্ডের? স্টোকস ইঙ্গিত দিয়েছেন, তাঁরা আগ্রাসী ক্রিকেট থেকে সরবেন না।
এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে স্টোকস বলেছেন, ‘‘আমরা এত দিন যে মানসিকতা নিয়ে ক্রিকেট খেলে এসেছি, তা আমাদের সাফল্য এনে দিয়েছে। সেই ক্রিকেট থেকে সরে আসার কোনও প্রশ্নই নেই। তা প্রতিপক্ষ যে-ই হোক না কেন।’’ ইংল্যান্ড অধিনায়ক জানিয়েছেন, তিনি নিজেও পুরো সুস্থ হয়ে গিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy