তামিম ইকবাল। — ফাইল চিত্র
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপে ২৯ ঘণ্টার মধ্যে অবসরের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার তামিম ইকবালের। বৃহস্পতিবার আচমকা সাংবাদিক বৈঠক ডেকে অবসর নিলেও শুক্রবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে তাঁর সঙ্গে দেখা করার পর সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেন তামিম। এক দিনের বিশ্বকাপের কথা ভেবে হাসিনা নিজে উদ্যোগী হয়ে বিষয়টির সমাধান করেছেন। কিন্তু ভবিষ্যতে তাতে কতটা কাজ হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে। কারণ, তামিমের সঙ্গে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের তিক্ত সম্পর্ক। আপাতত সমাধান করলেও সারা বছর হাসিনা দেশের ক্রিকেটের দেখাশোনা করবেন, এমন প্রত্যাশা কারও নেই। ঘর সামলাতে হবে সেই কর্তাদেরই। ফলে যেকোনও সময় আবার ঠোকাঠুকি লাগতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
শুক্রবার সকালেও তামিমের অবসরকে ‘নাটক’ বলেছেন পাপন। যদিও প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে তামিমের পাশেই ছিলেন তিনি। তাঁর সম্পর্কে তামিম ইতিবাচক কথাও বলেছেন। কিন্তু এত তাড়াতাড়ি তাঁদের সম্পর্ক ঠিক হয়ে যাবে, এমনটা কেউই মনে করছেন না। বিশেষ করে হাসিনা-তামিম সাক্ষাতের আগে পাপন যা মন্তব্য করেছিলেন, তা কি তামিম ভুলতে পারবেন?
তামিম সম্পর্কে ঠিক কী বলেছিলেন পাপন?
শুক্রবার সকালে বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে পাপনের সাক্ষাৎকার বেরোয়। সেখানে তামিমের অবসরের সিদ্ধান্তকে ‘নাটক’ বলে কটাক্ষ করেন পাপন। ‘প্রথম আলো’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “যা নাটক শুরু হয়েছে, আর ভাল লাগে না। অতিষ্ঠ হয়ে গেলাম।” তিনি আরও বলেন, “একটা সিরিজ চলছে। ওর এ রকম কোনও পরিকল্পনা থাকলে আলোচনা করতে অসুবিধা কোথায়? আমার সঙ্গে রোজই কথা হয়। কাউকে না জানিয়ে এ রকম কাজ করব, এই মানসিকতা থেকে ওরা কবে বের হবে! এটা করে ওদের কী লাভ হয় বুঝি না। তবে নিশ্চয়ই কোনও লাভ হয়। নইলে এমন করবে কেন? তুমি যদি অধিনায়কত্ব না-ই করতে চাও, এক বার আলোচনায় অন্তত বসো। কথা বলতে অসুবিধা কী! ও যদি অধিনায়কত্ব না করতে চাইত, তা হলে কি জোর করে খেলাতে পারতাম!”
মঙ্গলবার থেকে তামিম এবং পাপনের মধ্যে লেগে যায়। ম্যাচের আগে মঙ্গলবার তামিম জানিয়েছিলেন, তিনি পুরো ফিট নন। প্রথম ম্যাচে খেলে দেখে নিতে চান তিনি কতটা ফিট। কিন্তু তার আগেই তিনি নাকি বোর্ড সভাপতিকে বলেছিলেন, ফিট এবং খেলবেন। পাপন সে দিনই বলেছিলেন, “আমার সঙ্গে কথা হওয়ার সময় তামিম বলেছিল, ও ফিট। তাই খেলবে। আমি এর পর ফিজিয়োকেও জিজ্ঞেস করেছিলাম। ফিজিয়োও বলেছিল, তামিম একদম ফিট। কিন্তু খেলার আগের দিন তামিম নাকি বলছে চোট রয়েছে, ফিট নয়। কেন এটা বলল? এটা সংবাদমাধ্যমে বলে লাভ কী? ও আমাদের বলছে ফিট। আবার সংবাদমাধ্যমে খেলার আগে বলছে, ফিট নয়। এটা কোনও কথা হল?”
অনেকেই মনে করছেন যেকোনও দিন দু’জনের সম্পর্ক আবার তলানিতে ঠেকতে পারে।
এপার বাঙলায় ইস্টবেঙ্গলের ক্ষেত্রেও একই কাণ্ড ঘটেছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে দু’বার দু’টি ইনভেস্টর পেয়েছিল লাল-হলুদ। কিন্তু দু’টি ইনভেস্টরের সঙ্গেই সম্পর্ক খারাপ হয়েছিল লাল-হলুদের। শ্রী সিমেন্ট শেষ পর্যন্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে বেরিয়ে গিয়েছিল। ইমামির সঙ্গে খটাখটি লাগলেও মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপেই তারা এখনও টিকে আছে। মুখ্যমন্ত্রী এটা বুঝিয়ে দিয়েছেন, বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক রাখার দায়িত্ব লাল-হলুদ ক্লাবকর্তাদেরই। ভবিষ্যতে তিনি আর এতে হস্তক্ষেপ করবেন না।
বাংলাদেশেও অনেকেই মনে করছেন, প্রধানমন্ত্রী আপাতত পাপন-তামিম বিতর্কের সমাধান করে দিলেন। কিন্তু বার বার এরকম হলে তিনি আদৌ আর হস্তক্ষেপ করবেন কি?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy