Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Chetan Sharma

বিসিসিআইয়ের মুখ্য নির্বাচকের পদ থেকে ইস্তফা চেতনের, গোপন ক্যামেরায় মুখ খোলার পরিণাম?

নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যানের পদ থেকে ইস্তফা দিলেন চেতন শর্মা। সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর খবর অনুযায়ী, বোর্ড সচিব জয় শাহের কাছে ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন তিনি।

chetan sharma

মুখ্য নির্বাচকের পদ থেকে সরে গেলেন চেতন শর্মা। ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১১:০০
Share: Save:

নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যানের পদ থেকে ইস্তফা দিলেন চেতন শর্মা। সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর খবর অনুযায়ী, সচিব জয় শাহের কাছে ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন তিনি। পরে বোর্ডের এক কর্তা সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর কাছেও সেই খবর স্বীকার করেছেন। বলেছেন, “হ্যাঁ, বোর্ড সচিব জয় শাহের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছে চেতন। তা গ্রহণও করা হয়েছে। স্টিং অপারেশনের পর ওর ভবিষ্যৎ এমনিতেই টলোমলো ছিল। নিজে থেকেই পদত্যাগ করেছে। কেউ জোর করেনি।”

বোর্ড যে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে, সেই ইঙ্গিত আগেই ছিল। তবে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়ার কথাও ছিল। তার আগেই ইস্তফা দিয়ে দিলেন চেতন। কিছু দিন আগেই একটি টিভি চ্যানেলের ‘স্টিং অপারেশন’-এ নাম জড়িয়েছিল চেতনের। সেখানে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এবং বিরাট কোহলির মধ্যে ইগোর লড়াই, যশপ্রীত বুমরার বিরুদ্ধে ব্যথা কমানোর ইঞ্জেকশন নিয়ে জোর করে খেলা — ইত্যাদি নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছিলেন তিনি। তারই পরিণাম হিসাবে ইস্তফা দিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। তাঁর উপর থেকে বিশ্বাস চলে গিয়েছিল ভারতের কোচ, অধিনায়কের।

এই নিয়ে দ্বিতীয় বার প্রধান নির্বাচকের পদ গেল চেতনের। গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের ব্যর্থতার পর চেতন-সহ গোটা নির্বাচক কমিটিকেই অপসারিত করেছিল বোর্ড। নির্বাচক চেয়ে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল বোর্ডের ওয়েবসাইটে। তাতে আবেদন করেন চেতনও। আশ্চর্যজনক ভাবে তাঁকে নেওয়া তো হয়ই, নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যানও করে দেওয়া হয়। বোর্ডের সেই পদক্ষেপ অবাক করেছিল অনেককেই। নতুন করে নির্বাচক প্রধান হওয়ার কিছু দিনের মধ্যেই বিতর্কে জড়িয়ে পদ গেল চেতনের।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রথম বার প্রকাশ্যে আসে গোপন ক্যামেরায় চেতনের মুখ খোলার ভিডিয়ো। প্রধান নির্বাচক চেতনকে স্টিং অপারেশনের ওই ভিডিয়োয় বলতে শোনা যায়, “সৌরভ এবং বিরাটের মধ্যে একটা ইগোর লড়াই ছিল। সৌরভ এক সময় ভারতীয় দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। বিরাট সেই সময় নেতা ছিলেন। কে বড় তা নিয়ে একটা লড়াই ছিল।”

এ ছাড়াও গোপন ক্যামেরায় চেতন দাবি করেন, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজ়ে চোট পুরোপুরি না সারিয়েই খেলেছিলেন বুমরা। তিনি একটি ইঞ্জেকশন নিয়েছিলেন। ছোটখাটো চোটের ক্ষেত্রে খেলোয়াড়রা অনেক সময় এ রকম ইঞ্জেকশন নেন। বুমরা ব্যথা কমিয়ে খেলতে গিয়ে নাকি নিজের চোট আরও বাড়িয়ে ফেলেছেন। যে কারণে এখনও ভুগছেন তিনি।

টিভি চ্যানেলের ‘স্টিং অপারেশনে’ চেতনের বক্তব্য বোর্ডের কর্তারা মোটেই ভাল ভাবে নেননি। তাঁদের মতে, এতে সাংবাদিকদের সঙ্গে নির্বাচক এবং ক্রিকেটারদের সম্পর্ক আরও খারাপ হবে। বোর্ডের এক সূত্র সংবাদ সংস্থাকে বলেছেন, “এর পর আর কোনও ক্রিকেটার বা নির্বাচকের সঙ্গে হৃদ্যতা থাকবে না সাংবাদিকদের। বিশ্বাসের জায়গাটাই চলে গিয়েছে।”

চেতন এমন কিছু অবশ্য বলেননি, যা ভারতীয় ক্রিকেটে অজানা। কিন্তু ক্রিকেটাররা আর তাঁর প্রতি আস্থা রাখতে পারছেন না। বোর্ডের ওই সূত্রের ব্যাখ্যা, “চেতন একটু বেশিই কথা বলে ফেলেছে। ভারতের প্রথম সারির ক্রিকেটাররা কেউ ওর সঙ্গে কথা বলে না। আপনারা কি কোনও অনুশীলনে চেতনের সঙ্গে রাহুল দ্রাবিড়, বিরাট কোহলি বা রোহিত শর্মাকে প্রকাশ্যে কথা বলতে দেখেছেন? অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সময় অনুশীলনে এক কোণে দাঁড়িয়ে থাকত। কেউ ওর সঙ্গে কথা বলার প্রয়োজন বোধ করেনি।”

অনেক বিতর্ক নিয়েই হয়তো ভারতীয় ক্রিকেট থেকে বিদায় নিলেন চেতন।

অন্য বিষয়গুলি:

Chetan Sharma BCCI
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE