Advertisement
০৮ নভেম্বর ২০২৪
Abishek Porel

Abishek Porel: ঋদ্ধিদা অভিনন্দন জানিয়েছে, দলে ফিরলে তো ও-ই খেলবে: আনন্দবাজার অনলাইনকে অভিষেক

বিরাট কোহলীর খেলা দেখতে পছন্দ করা অভিষেক উইকেটরক্ষক হিসাবে পছন্দ করেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি এবং ঋদ্ধিমান সাহাকে।

ঋদ্ধির দেখে শিখতে চান অভিষেক।

ঋদ্ধির দেখে শিখতে চান অভিষেক। —ফাইল চিত্র

শান্তনু ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৫:৩৩
Share: Save:

রঞ্জিতে অভিষেক ইনিংসেই বাংলার হয়ে ম্যাচ জিতিয়েছেন অভিষেক পোড়েল। ১৯ বছরের তরুণ উইকেটরক্ষক কি দলে এসেই চাপ বাড়িয়ে দিলেন ঋদ্ধিমান সাহার? ব্যক্তিগত কারণে রঞ্জি খেলতে চাননি ঋদ্ধি। ভারতীয় দলেও যে তাঁকে ভাবা হচ্ছে না, তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তা হলে আইপিএল-এর পর রঞ্জি খেলবেন ঋদ্ধি?

ঋদ্ধিমান বাংলা দলে ফিরলে যে তাঁকে বসতে হবে তা ভাল ভাবেই জানেন অভিষেক। আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি বললেন, “ঋদ্ধিদা ফিরলে যে ও খেলবে তা জানি। ও পৃথিবীর অন্যতম সেরা উইকেটরক্ষক। কিন্তু তাতে আমার কোনও আফসোস নেই। ও দলে এলে আমি অনেক কিছু শিখতে পারব। কিপিং নিয়ে অনেক কিছু শেখার আছে ওর থেকে।” ঋদ্ধির সঙ্গে কথা হয়েছে অভিষেকের? বাংলার তরুণ উইকেটরক্ষক বললেন, “আমার সঙ্গে সামনা সামনি দেখা হয়নি। তবে বরোদার বিরুদ্ধে ভাল খেলার পর টেক্সট করে শুভেচ্ছা জানিয়েছিল। ওইটুকুই কথা হয়েছে।”

বিরাট কোহলীর খেলা দেখতে পছন্দ করা অভিষেক উইকেটরক্ষক হিসেবে পছন্দ করেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি এবং ঋদ্ধিমান সাহাকে। তাঁদের খেলা দেখে শিখতে চান তিনি। অভিষেক বললেন, “এই মুহূর্তে আমার পছন্দের ক্রিকেটার বিরাট কোহলী। বিশ্বকাপের সময় আমাদের সঙ্গে কথাও হয়েছিল। ওর কাজ করার নীতি আমার খুব পছন্দের। সেটা দেখে বিরাট ভাইকে ভাল লাগে। উইকেটরক্ষক হিসাবে ধোনি ভাই, ঋদ্ধিদাদের খেলা দেখি। ওদের থেকে যদি কোনও পরামর্শ পাই তা হলে আমার জন্য খুব ভাল হবে। পরে কাজে লাগাতে পারব।”

করণ লাল, মনোজের সঙ্গে অভিষেক।

করণ লাল, মনোজের সঙ্গে অভিষেক। ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে

অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপের রিজার্ভ দলে থাকাও বিরাট অভিজ্ঞতার বলে জানালেন অভিষেক। তিনি বললেন, “আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কেমন হয় তার একটা আভাষ পাওয়া যায় অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ থেকে। সেটা দেখার সুযোগ হয়েছে আমার। আমাদের দল যে ভাবে খেলেছে তা অনবদ্য। যশ ঢুলকে অভিনন্দন জানিয়েছি রঞ্জিতে দুই ইনিংসে শতরান করার পর। আমরা সকলে এই এক মাসেই বন্ধু হয়ে গিয়েছি।”

আন্তর্জাতিক মঞ্চের সেই অভিজ্ঞতা রঞ্জিতে কাজে লাগাচ্ছেন অভিষেক। বরোদার বিরুদ্ধে ম্যাচ জেতানো অপরাজিত ৫৩ রানের ইনিংসের মালিক বললেন, “যশদের দেখেই শিখেছি কী ভাবে একটা ইনিংস গড়তে হয়। সেই দেখাগুলোই আমাকে শিখিয়েছে। নিজে খেলার সময় সেইগুলো কাজে লাগানোর চেষ্টা করি।”

চন্দননগরের পোড়েল পরিবারে কবাডি খেলার পরিবেশ ছিল। অভিষেকের দাদু-বাবা, ঈশানের বাবা-জেঠু, সকলেই কবাডি খেলতেন। ঈশান প্রথম ক্রিকেট খেলার দিকে যান। দাদাকে দেখেই সেই পথে যান অভিষেক। তিনি বললেন, “টিভিতে ক্রিকেট দেখে খেলতে ইচ্ছা করত। এর পর দাদা খেলতে শুরু করায় আরও আগ্রহ বেড়ে গেল।”

বরোদার বিরুদ্ধে জয় অতীত। এ বার সামনে হায়দরাবাদ। কী ভাবে তৈরি হচ্ছেন অভিষেকরা। তিনি বললেন, “আমাদের লক্ষ্য হায়দরাবাদ ম্যাচ জেতা। নিজেরা এত দিন যা করে এসেছি সেটাই অনুশীলন করছি। নিজেদের খেলাটা খেলতে চাই। আগের ম্যাচে জয় পেয়েছি। সেটাই ধরে রাখতে চাই।”

গত ম্যাচে তিনি যখন মাঠে নামছেন বাংলার স্কোর ছিল ২৪২/৬। জয়ের জন্য তখনও ১০৭ রান প্রয়োজন ছিল বাংলার। সেই চাপের মুখ থেকে বাংলাকে ম্যাচ জিতিয়েছেন অভিষেক এবং শাহবাজ আহমেদ। দাদা ঈশান পোড়েল হোক বা বাংলা দলের অন্য ক্রিকেটাররা, সকলের মতেই অভিষেক বেশ পরিণত এবং প্রতিভাবান। বড়দের থেকে কী শিখতে চান অভিষেক? তিনি বললেন, “এই দলে সিনিয়রদের থেকে শিখতে চাই চাপের মুখে কী ভাবে খেলতে হয়। রঞ্জি ট্রফি কেন অন্য প্রতিযোগিতার থেকে আলাদা, সেটাও বুঝতে চাই।”

অভিষেককে নিয়ে উচ্ছ্বসিত বাংলা দলও। বরোদার বিরুদ্ধে জয়ের পর কোচ অরুণ লাল বলেছিলেন, “নতুন ছেলেটা স্পেশাল। একদম ম্যাচ উইনার। ভয়হীন ক্রিকেট খেলল।” সহকারী কোচ সৌরাশিসও উচ্ছ্বসিত। তিনি বলেছিলেন, ‘‘অভিষেক ম্যাচেই এমন কৃতিত্ব। দলের জয়ে অবদান রাখল। ব্যাটিং, কিপিং দুটোই দারুণ করল।” দলের সিনিয়র ব্যাটার মনোজ তিওয়ারি প্রশংসা করলেন অভিষেকের মানসিকতার। তিনি বলেন, “অনেক দিন পর একটা ছেলে দেখলাম, যে প্রতিপক্ষকে চাপে রেখে খেলতে চায়।” বাংলার অধিনায়ক অভিমন্যু ঈশ্বরণ বলেছেন, “অভিষেক ম্যাচেই এমন খেললে আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়ে যায়।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE