প্যাট কামিন্স। —ফাইল চিত্র।
প্রতি বছর ২৬ জানুয়ারি পালিত হয় ‘অস্ট্রেলিয়া ডে’। এই দিন ছুটি থাকে সে দেশে। সাধারণ মানুষ উৎসবের মেজাজে থাকেন। তার আগের দিন ২৫ জানুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া-ওয়েস্ট ইন্ডিজ় দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচ। উৎসবের দিন খেলা নিয়ে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সে দেশের ক্রিকেট সংস্থা) চিফ এক্সিকিউটিভ নিক হকলের বক্তব্যে তৈরি হয় বিতর্ক। তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে বিতর্কের উত্তাপ বৃদ্ধি করেছেন অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। তার পর ক্রিকেটারদের কথা বলার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া।
‘অস্ট্রেলিয়া ডে’ শুরু হয়েছিল ব্রিটিশ শাসনের সময়। ইংল্যান্ড থেকে নিয়ে আসা বন্দিদের মুক্তির প্রথম দিন হিসাবে। ১৭৮৮ সালের ২৬ জানুয়ারি অস্ট্রেলিয়ার পোর্ট জ্যাকসনে পৌঁছেছিল আসামি বোঝাই ইংল্যান্ডের ১১টি জাহাজ। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে বন্দিরা মুক্তির স্বাদ পেয়েছিল। তার পর থেকে প্রতি বছর এই দিনটি ‘অস্ট্রেলিয়া ডে’ হিসাবে পালন করা হয়। ১৯৯৪ সাল থেকে জাতীয় ছুটি হিসাবে ঘোষণা করা হয় ‘অস্ট্রেলিয়া ডে’-কে। তবে ‘অস্ট্রেলিয়া ডে’ নিয়ে প্রথম থেকে আপত্তি রয়েছে সেখানকার আদি বাসিন্দাদের। অস্ট্রেলিয়ার মূল বাসিন্দাদের বক্তব্য, ২৬ জানুয়ারি ‘অস্ট্রেলিয়া ডে’ পালন করার অর্থ তাঁদের সংস্কৃতি, ইতিহাসকে অপমান করা। বিশ্বের সামনে আসল অস্ট্রেলীয়দের আড়াল করে রাখার চেষ্টা। বিষয়টি নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় রাজনৈতিক এবং সামাজিক বিতর্ক রয়েছে।
ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার চিফ এক্সিকিউটিভ হকলে বলেছিলেন, ‘‘২৬ জানুয়ারি আমাদের জাতীয় ছুটির দিন। তবে আমরা চাই সে দিন সবাই মুক্ত মনে খেলা দেখতে আসুন। সবাই যাতে স্বস্তিতে খেলা দেখতে পারেন, তা আমরা নিশ্চিত করব।’’ তিনি আরও বলেছিলেন, ‘‘আমার মতে, ভুল দিনে ‘অস্ট্রেলিয়া ডে’ পালন করা হয়। সরকারকে অনুরোধ করব আরও উপযুক্ত দিন খোঁজার।’’ তাঁর এই বক্তব্য ঘিরে তৈরি হয়েছে নতুন বিতর্ক। তবে হকলের পাশে দাঁড়িয়েছেন কামিন্স। তাঁরও বক্তব্য, পরিবর্তন করা হোক ‘অস্ট্রেলিয়া ডে’-র দিন।
কামিন্স বলেছেন, ‘‘আমার ব্যক্তিগত মত বলতে পারি। আমি অস্ট্রেলিয়াকে ভীষণ ভালবাসি। আমার কাছে এটাই বিশ্বের সেরা দেশ। বাকি সবার থেকে অনেক এগিয়ে। আমিও অস্ট্রেলিয়া ডে-র পক্ষে। তবে আমার মতে, অস্ট্রেলিয়া ডে পালন করার জন্য আরও উপযুক্ত একটা দিন খোঁজা দরকার।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘আমার মনে হয়, ২৬ জানুয়ারি অস্ট্রেলিয়া ডে পালন করা ঠিক নয়। কারণ, এই দিনটার অর্থ বিভিন্ন মানুষের কাছে বিভিন্ন রকম। আমরা এই দেশে সবাই মিলেমিশে থাকি। আমরা সবাই অস্ট্রেলিয়াকে ভালবাসি। এই দেশে থাকতে পারায় নিজেকে ভাগ্যবান মনে হয়। বিশেষ অধিকারও ভোগ করি। তবে ২৬ জানুয়ারি দিনটা সংবেদনশীল। কারও কারও জন্য দিনটা একটু কঠিন।’’ তাঁর এই বক্তব্যে বিদ্রোহের ইঙ্গিত পেয়েছেন অনেকে।
অন্য দিকে, ২৬ জানুয়ারি খেলা রাখায় ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার সমালোচনা করেছিলেন স্কট বোল্যান্ড এবং অ্যাশ গার্ডনার। তাঁরা প্রশ্ন তোলেন জাতীয় ছুটির দিনে কেন খেলতে হবে? তাঁদের বক্তব্য, যে দিন সারা দেশের মানুষ উৎসবের আমেজে থাকেন, সে দিন খেলতে বাধ্য করার অর্থ ক্রিকেটারদের ছুটির অধিকার কেড়ে নেওয়া। কারণ ক্রিকেটই তাঁদের পেশা, কাজ।
যুক্তি-পাল্টা যুক্তি, বক্তব্য-পাল্টা বক্তব্য ঘিরে পরিবেশ ক্রমশ উত্তপ্ত হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আপাতত ক্রিকেটারদের কথা বলার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy