আউট হয়ে ফিরছেন বিরাট কোহলী। ছবি: রয়টার্স
সামনে বাঁ হাতি জোরে বোলার দেখলেই কি ভারতীয় ব্যাটারদের বুকে কাঁপুনি শুরু হয়ে যায়? মনে তৈরি হয় দ্বিধাদ্বন্দ্ব? মানসিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়েন বিরাট কোহলীরা? না হলে বার বার বাঁ হাতি জোরে বোলার দেখলেই কী করে গুটিয়ে যায় ভারতের ‘তারকা-সমৃদ্ধ’ ব্যাটিং লাইন-আপ? বার বার কোনও এক শাহিন শাহ আফ্রিদি বা দিলশান মদুশঙ্কেরা কী ভাবে বিপদে ফেলে দেন ভারতীয় ব্যাটারদের?
পাকিস্তানের দলে এ বার ছিলেন না কোনও শাহিন আফ্রিদি। ফলে দু’দলের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কিছুটা হলেও এগিয়ে থেকে নেমেছে ভারত। সুপার ফোরে তবু পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হার এড়ানো যায়নি। প্রতিযোগিতায় প্রথম বার কোনও বাঁ হাতি জোরে বোলারের সামনে পড়তেই কেঁপে গেলেন রোহিত শর্মা, কোহলীরা। ভারতের দুর্বলতার কথা নিশ্চয়ই জানতেন শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক দাসুন শনাকা। তাই প্রথম ওভারেই লেলিয়ে দেন মদুশঙ্ককে। কেঁপে যান রোহিত এবং কেএল রাহুল। রোহিত তবু পরের দিকে সামলে নেন। রাহুলকে তো শুরু থেকেই নড়বড়ে লাগছিল। কোনও মতে ঠেকাচ্ছিলেন মদুশঙ্কের বল। ভেতরে ঢুকে আসা ডেলিভারিতে বেশ অস্বস্তিতে দেখাচ্ছিল তাঁকে। প্রথম ওভারে মাত্র চার রান এল। তার মধ্যে দু’রান ওয়াইডেই।
অবাক লাগতে পারে কোহলীকে দেখে। প্রতিযোগিতায় ছন্দেই ছিলেন। আগের দু’টি ম্যাচে অর্ধশতরান করেছেন। মঙ্গলবার মাঠে নেমে মদুশঙ্কের প্রথম দু’টি বল ব্যাটে ঠেকালেন। তৃতীয় বল ওয়াইড। সেটা নিয়েও বিস্তর জলঘোলা। কোহলী উইকেটকিপারের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন কি না, তা বুঝতে পারেননি শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটাররা। ডিএরআএসের সময় পেরিয়ে যেতে ওয়াইড ডাকলেন আম্পায়ার। পরের বলে সেই সুযোগ দিলেন না মদুশঙ্ক। তাঁর লেংথ বল মিড উইকেটের উপর দিয়ে চালাতে গিয়েছিলেন কোহলী। ব্যাট এবং প্যাডের মাঝে যে যোজন দূরত্ব তৈরি হল, তা কোহলীর দু’টি স্টাম্প ফেলে দিল অনায়াসে। মাথা নাড়তে নাড়তে ফিরলেন ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক।
মদুশঙ্ক বাকি দু’টি উইকেট পেলেন এমন সময়ে, যখন শ্রীলঙ্কার অতিরিক্ত একজন ফিল্ডার রয়েছেন ৩০ গজ বৃত্তের মধ্যে। ১৯তম ওভারের প্রথম বলে হঠাৎই উইকেট ছেড়ে অফের দিকে চলে গিয়ে শট খেলতে গেলেন দীপক হুডা। পুরো স্টাম্প দেখতে পেয়ে হাত থেকে বল বেরনোর আগেই তার গতিপথ ঠিক করে নিলেন মদুশঙ্ক। বল গিয়ে ভেঙে দিল স্টাম্প। দু’বল পরেই ফিরলেন ঋষভ পন্থ। তৃতীয় বলে মদুশঙ্ক স্লোয়ার দিয়েছিলেন। গায়ের জোরে পুল মেরেও মাঠ পেরোতে পারলেন না পন্থ। ধরা পড়লেন পাথুম নিসঙ্কের হাতে।
অতীতে শ্রীলঙ্কার চামিন্ডা ব্যাস প্রচুর ভুগিয়েছেন ভারতকে। এ ছাড়া পাকিস্তানের ওয়াসিম আক্রম থেকে মহম্মদ ইরফান, মহম্মদ ইরফানরা তো রয়েছেনই। বাঁ হাতি বোলার দেখলেই হাঁটু কেপে যেত ভারতীয়দের। দেখা গেল, এখনও সেই রোগ সারেনি। এর একটা প্রধান কারণ হতে পারে, দলে যথেষ্ট পরিমাণে বাঁ হাতি বোলার না থাকা। আইপিএলে বিখ্যাত হওয়ার সুবাদে কিছু দিন আগেও খলিল আহমেদ, টি নটরাজনকে জাতীয় দলে সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তাঁরা যে কোথায় হারিয়ে গিয়েছেন কেউ জানেন না। আইপিএলে ভাল খেলার কারণেই অর্শদীপ সিংহকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাঁর বলে এমনও গতি নেই, যা পাল্লা দিতে পারে শাহিন বা মদুশঙ্কের সঙ্গে।
জাহির খান, আশিস নেহরা বা ইরফান পাঠানের পরে সে ভাবে প্রতিভাবান বাঁ হাতি জোরে বোলার পাচ্ছেই না ভারত। ঘরোয়া ক্রিকেট থেকেও সে ভাবে প্রতিভাবান কেউ উঠে আসছেন না। ফলে নেটেও সে ভাবে কোনও বোলারকে খেলার সুযোগ নেই। এটাই কি আরও বিপদে ফেলে দিচ্ছে ভারতীয় ব্যাটারদের? প্রশ্নটা উঠছেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy