Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
ICC World Cup 2023

বিশ্বকাপে চমক আফগানিস্তানের, রশিদদের সাফল্যে অবদান বিন্নী, শাহের ভারতীয় বোর্ডেরও! কী ভাবে?

যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানের ক্রিকেটকে প্রথম চিনে ছিল ভারত। বিসিসিআই কর্তারাই ক্রিকেট বিশ্বের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন আফগানদের। রশিদেরাও সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন দু’হাতে।

picture of Jay Shah and Roger Binny

(বাঁদিকে) জয় শাহ এবং রজার বিন্নী। ছবি: এক্স (টুইটার)।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২৩ ১৬:৪৪
Share: Save:

ক্রিকেট বিশ্বকে চমকে দিয়েছে আফগানিস্তান। রবিবার বিশ্বকাপের লড়াইয়ে ইংল্যান্ডকে ৬৯ রানে হারিয়ে অঘটন ঘটিয়েছে তারা। উচ্ছ্বসিত আফগান ক্রিকেটারেরা। আনন্দে ভাসছেন আফগানিস্তানের ক্রিকেটপ্রেমীরাও। তাদের এই সাফল্যের পিছনে রয়েছে ভারতেরও অবদান।

বিশ্বকাপে টেস্ট খেলে এমন কোনও দেশের বিরুদ্ধে এই প্রথম জয় পেল আফগানিস্তান। শুধু তাই নয়, প্রতিযোগিতার ইতিহাসে আফগানদের দ্বিতীয় জয় এসেছে রবিবার। গত বিশ্বকাপে আফগানিস্তানকে ১৫০ রানে হারিয়েছিল ইংল্যান্ড। আফগান বোলারদের পিটিয়ে ৫০ ওভারে ৩৯৭ রান তুলেছিল ইংরেজরা। চার বছর পর সেই আফগানিস্তানের কাছেই হারতে হল তাদের। বিশ্ব ক্রিকেটে আফগানিস্তানেই এই উত্থানের পিছনে রয়েছে ভারতের অবদান। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড আফগান ক্রিকেটের পাশে না দাঁড়ালে রশিদ খান, মহম্মদ নবিদের হয়তো ক্রিকেট দুনিয়ায় পরিচিতি পেতে আরও সময় লেগে যেত।

যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে খেলাধুলোর পরিবেশ প্রায় নেই। ক্রিকেটের কোনও আধুনিক পরিকাঠামোই নেই। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে লড়াই করার জন্য যে ধরনের অনুশীলন, সুযোগ-সুবিধা প্রয়োজন সে সব রশিদদের কিছুই দিতে পারেন না আফগানিস্তানের ক্রিকেট কর্তারা। তবে তাঁদের আবদনে ২০১৭ সালে সাড়া দিয়েছিলেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) কর্তারা। বাড়িয়ে দিয়েছিলেন সহযোগিতার হাত। দেশে আন্তর্জাতিক সিরিজ় আয়োজনের সুযোগ ছিল না আফগানিস্তানের। রশিদেরা হোম সিরিজ়গুলি খেলতেন ভারতে। আয়ারল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ়, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তাঁরা সিরিজ় খেলেছেন ভারতের মাটিতে। লখনউ, দেহরাদূন, গ্রেটার নয়ডার স্টেডিয়ামে আয়োজন করা হয়েছিল ম্যাচগুলি। আফগানদের খেলার সুবিধা করে দিতে, এই স্টেডিয়ামগুলিতে সে সময় ভারতীয় দলের খেলা খুব একটা দেওয়া হত না।

প্রায় সাড়া বছর আফগানিস্তানের জাতীয় দল থাকত এ দেশে। ভারতীয় ক্রিকেটের পরিকাঠামো ব্যবহার করে অনুশীলন করতেন ক্রিকেটারেরা। ভারতীয় কোচেরা তাঁদের সাহায্য করতেন। ভুল শুধরে দিতেন। স্থানীয় দলগুলির সঙ্গে নিয়মিত প্রস্তুতি ম্যাচও খেলত আফগানিস্তান। কয়েক বছরের চেষ্টায় ধীরে ধীরে উন্নতি করে তারা। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আসতে শুরু করে সাফল্য। সেই সাফল্যের সুবাদে আইসিসির কাছ থেকে টেস্ট খেলার ছাড়পত্রও পায় আফগানিস্তান। অর্থাৎ,আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আফগানিস্তানের উত্থান পর্বের একটা গুরুত্বপূর্ণ সময় পাশে দাঁড়িয়েছিল বিসিসিআই। সব ধরনের সুযোগ সুবিধা দিলেও বিসিসিআই কর্তারা আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের কাছ থেকে সে সময় মুনাফা করার কথা ভাবেননি। নাম মাত্র অর্থের বিনিময়ে দেওয়া হত সারা বছর পরিকাঠামো ব্যবহারের সুযোগ।

শুধু আফগানিস্তানের ক্রিকেট বোর্ডের পাশেই নয়, আফগান ক্রিকেটারদের পাশেও দাঁড়িয়েছিল বিসিসিআই। তাঁদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল আইপিএলের দরজা। বোর্ড কর্তাদের পরামর্শে আফগানিস্তানের প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের খোঁজ রাখত আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজ়িগুলিও। এই প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন দেশের সেরা ক্রিকেটারদের সঙ্গে খেলার সুযোগ, বিভিন্ন দেশের কোচদের পরামর্শ পেয়েছেন তাঁরা। আইপিএলে ভাল পারফরম্যান্স দরজা খুলে দিয়েছে অন্য দেশের ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি লিগেও। আফগান ক্রিকেটারেরাও দু’হাতে লুফে নিয়েছেন সুযোগ। সে সবের সুফল পাচ্ছেন তাঁরা।

সাফল্য পাওয়ার পরও বিসিসিআইয়ের সহযোগিতার কথা ভোলেননি আফগান ক্রিকেট কর্তারা। আফগান ক্রিকেটের সাফল্যের পিছনে ভারতের অবদান বা সাহায্যের কথা এক বাক্যে স্বীকার করেন তাঁরা।

অন্য বিষয়গুলি:

ICC World Cup 2023 Afghanistan BCCI
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE