সিরাজের সঙ্গে উচ্ছ্বাস কোহলির। ছবি: রয়টার্স।
এক দিনে পড়ল ২৩টি উইকেট। চার ইনিংসের টেস্ট ম্যাচের প্রায় আড়াই ইনিংস শেষ এক দিনেই। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে কোনও দিনই যে জিনিস দেখা যায়নি, তাই হল বুধবার। কেপ টাউনে সিরিজ়ে সমতা ফেরানোর লক্ষ্যে খেলতে নেমেছিল ভারত। আগে ব্যাট করতে নামা দক্ষিণ আফ্রিকাকে দু’ওভারে গুটিয়ে দিয়েছিল ৫৫ রানে। কিন্তু নিজেরাও তার সুবিধা নিতে পারল না। ভারতের প্রথম ইনিংস শেষ হল ১৫৩ রানে। জবাবে দ্বিতীয় ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকা ৩ উইকেট হারিয়ে ৬২। হাতে ৭ উইকেট। পিছিয়ে ৩৬ রানে।
টেস্টে এ রকম ঘটনাবহুল দিন খুব একটা আসে না। আবার এটাও ঠিক, একই দিনে এত ঘটনা ঘটলে টেস্ট ক্রিকেটের সেই মজাটাও থাকে না। টেস্ট ক্রিকেট লোকে দেখতে আসেন পাঁচ দিনের জন্যেই। কিন্তু ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্ট দু’দিনেই শেষ হওয়ার মুখে। কেউ রুখে না দাঁড়ালে বৃহস্পতিবারই টেস্ট শেষ হয়ে যাওয়ার কথা।
প্রথম দিনের শেষে মহম্মদ সিরাজের বোলিং যদি আলোচনার বিষয় হয়, তা হলে তাকে ছাপিয়ে যাবে ভারতের ব্যাটিং তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়া। চা-বিরতির পর একটা সময় ভারতের রান ছিল ১৫৩-৪। তার পরে মাত্র ১১ বলের ব্যবধানে ভারতের বাকি ৬টি উইকেট পড়ে। দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের দাপটে শেষ কয়েক মিনিটে যে ভাবে এতগুলি উইকেট পড়েছে তাতে চমকে গিয়েছেন অনেকেই। মাত্র কয়েক মিনিটের ব্যবধানে গুটিয়ে যায় ভারতের ইনিংস।
তবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ভারতের প্রথম ইনিংসটা খারাপ শুরু হয়নি। যশস্বী জয়সওয়াল আবার ব্যর্থ হলেও দ্বিতীয় উইকেটে রোহিত শর্মা এবং শুভমন গিল খেলাটা ধরে নেন। রোহিত শুরু করেছিলেন আগ্রাসী ভঙ্গিতে। দেখে মনে হচ্ছিল বিশ্বকাপের রোহিত ফিরে এসেছেন, যিনি প্রথম বল থেকে আগ্রাসন করতে শুরু করেছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের কোনও মতেই মাথার উপরে উঠতে দেননি ভারতের অধিনায়ক।
কিন্তু রোহিতের ইনিংস দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। অর্ধশতরানের কাছাকাছি এসে আরও এক বার ফিরে যান তিনি। নান্দ্রে বার্গার আসতেই তাঁর বলে মার্কো জানসেনের হাতে ক্যাচ দেন। বিরাট কোহলির সঙ্গে শুভমনের জুটি জমে উঠবে উঠবে করছিল। কিন্তু শুভমনও নিজের ইনিংস বেশি দূর টানতে পারেননি। বার্গারের বলে একই ভাবে জানসেনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন শুভমন।
তার পরের ওভারেই আউট হন শ্রেয়স। ঘাতক সেই বার্গার। উইকেটকিপার কাইল ভেরেনের হাতে ক্যাচ দেন শ্রেয়স। খাতাই খুলতে পারেননি। বাধ্য হয়ে ত্রাতার ভূমিকায় নামতে হয় রাহুলকে। দক্ষিণ আফ্রিকার জোরে বোলারদের সামলে কোহলির সঙ্গে জুটি বেধে বেশ খেলতে থাকেন। কিন্তু চা-বিরতির কিছু ক্ষণ পরে যে কী এমন হল তা কেউই বুঝে উঠতে পারছেন না।
ধ্বংসের শুরুটা হয় ৩৪তম ওভার থেকে। লুনগি এনগিডির প্রথম বলেই আউট হন রাহুল (৮)। এর পর ভারতীয় ব্যাটারদের স্রেফ আসা-যাওয়ার পালা চলতে থাকে। একই ওভারে কোনও রান না করে ফিরে যান রবীন্দ্র জাডেজা এবং যশপ্রীত বুমরা। ১৫৩-৪ থেকে ১৫৩-৭ হয়ে যায় ভারত।
পরের ওভারে বাকি কাজটা সেরে দেন কাগিসো রাবাডা। দ্বিতীয় বলে ফেরান কোহলিকে। চতুর্থ বলে রান আউট সিরাজ। পঞ্চম বলে আউট প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ। ১১ বলে ৬টি উইকেট হারায় ভারত
তার আগে, বোলিংয়ের সময় ৬ উইকেট তুলে নেন মহম্মদ সিরাজ। এই নিয়ে তিন বার টেস্টে এক ইনিংসে ৫ বা তার বেশি উইকেট তুলে নিলেন তিনি। দিনের শুরু থেকেই উইকেট নেয় ভারত। এডেন মার্করামকে ফিরিয়ে শুরুটা করেছিলেন সিরাজই। এর পর ডিন এলগার, টোনি ডি জর্জি, ডেভিড বেডিংহ্যাম, কাইল ভেরেইন এবং মার্কো জানসেনকে আউট করেন তিনি। প্রথম ইনিংসে সিরাজ ৯ ওভারে ১৫ রান দিয়ে নেন ৬ উইকেট।
সিরাজ ছাড়াও উইকেট নেন যশপ্রীত বুমরা এবং মুকেশ কুমার। দু'টি করে উইকেট নেন তাঁরা। শার্দূল ঠাকুরকে বসিয়ে এই ম্যাচে মুকেশকে দলে নেয় ভারত। সেই ম্যাচে কোনও রান না দিয়ে ২ উইকেট তুলে নেন বাংলার পেসার। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সব থেকে বেশি রান উইকেটরক্ষক ভেরেনের। ১৫ রান করেন তিনি। ভেরেন এবং বেডিংহ্যাম ছাড়া আর কোনও ব্যাটার দু'অঙ্কের রানে পৌঁছতে পারেননি। শূন্য রানে আউট হন একমাত্র জানসেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার দ্বিতীয় ইনিংসে মাতিয়ে দিচ্ছেন মুকেশ কুমার। তিনি ২৫ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন। ফিরিয়েছেন ডিন এলগার এবং টোনি ডি’জর্জিকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy