Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
ফিরতে চাইছেন না বেইতিয়াদের বান্ধবী-স্ত্রীরা
Coronavirus

গ্রানাদায় গৃহবন্দি মারিয়োর পরিবার

দুই প্রধান মিলিয়ে এই মুহূর্তে কলকাতায় রয়েছেন এগারো জন স্পেনীয়।

সতর্ক: হোটেলে ঢোকার আগে পরীক্ষা কোলাদোকে। ছবি : সুদীপ্ত ভৌমিক

সতর্ক: হোটেলে ঢোকার আগে পরীক্ষা কোলাদোকে। ছবি : সুদীপ্ত ভৌমিক

শুভজিৎ মজুমদার
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২০ ০৬:৫০
Share: Save:

করোনা-আতঙ্কে বিপর্যস্ত ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগানের অন্দরমহল। কলকাতায় কার্যত গৃহবন্দি মারিয়ো রিভেরা, কিবু ভিকুনা, খাইমে সান্তোস কোলাদো, জোসেবা বেইতিয়ারা, স্পেনে তাঁদের পরিবারের সদস্যেরাও।

দুই প্রধান মিলিয়ে এই মুহূর্তে কলকাতায় রয়েছেন এগারো জন স্পেনীয়। এর মধ্যে ইস্টবেঙ্গলের সাত জন। এঁরা হলেন কোচ মারিয়ো রিভেরা, সহকারী কোচ মার্সাল সেভিয়ানো ও ফিজিক্যাল ট্রেনার কার্লোস নোদার। চার ফুটবলার—কোলাদো, মার্কোস খিমেনেস দে লা এসপারা মার্তিন, খুয়ান মেরা গঞ্জালেস ও ভিক্তর পেরেস আলন্সো। সবুজ-মেরুন শিবিরে রয়েছেন চার স্পেনীয়। কোচ কিবু-সহ তিন ফুটবলার হলেন ফ্রান গঞ্জালেস, ফ্রান মোরান্তে ও বেইতিয়া। প্রতেকটা মুহূর্ত আতঙ্কে কাটছে তাঁদের। ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে ইটালিতে সব চেয়ে বেশি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন মানুষ। দ্বিতীয় স্থানেই রয়েছে স্পেন। অনেকেই শহর ছেড়ে কম জনবসতিপূর্ণ অঞ্চলে চলে গিয়েছেন। যেমন ইস্টবেঙ্গল কোচের পরিবার!

মাদ্রিদের বাসিন্দা মারিয়ো বলছিলেন, ‘‘গ্রানাদায় একটি হৃদের পাশে আমাদের বাড়ি আছে। মাদ্রিদে থাকার ঝুঁকি না নিয়ে এখন সেখানেই গৃহবন্দি হয়ে রয়েছে আমার স্ত্রী ও পরিবারের অন্য সদস্যেরা।’’ বিষণ্ণ মারিয়ো যোগ করলেন, ‘‘১৩ মার্চ আমার মা ও স্ত্রীর কলকাতায় আসার কথা ছিল। করোনাভাইরাসের আক্রমণ থেকে বাঁচতে নিজেদের দশ দিন গৃহবন্দি করে রেখেছিল ওরা। কিন্তু কলকাতা রওনা হওয়ার চব্বিশ ঘণ্টা আগে ওদের ভিসা বাতিল হয়ে যায়। এখন ওরা আবার গৃহবন্দি।’’ লাল-হলুদ কোচ নিজেও কার্যত নিউ টাউনের ফ্ল্যাটের বাইরে বেরোচ্ছেন না। বলছিলেন, ‘‘চেষ্টা করছি, জনবহুল অঞ্চল এড়িয়ে যাওয়ার। কখন যে কী হয়ে যাবে, তা কেউ জানে না। এই পরিস্থিতিতে ঝুঁকি নেওয়া সম্ভব নয়।’’

মোহনবাগানকে আই লিগে চ্যাম্পিয়ন করা কোচ কিবুরও পরিবারের সদস্যেরা স্পেনে রয়েছেন। যদিও তাঁর বাড়ি যেখানে, সেই গিপুসকোয়া অঞ্চলের চিজ়ুরকুইল শহরের অবস্থা মাদ্রিদের মতো অতটা ভয়াবহ নয় এখনও পর্যন্ত। উদ্বিগ্ন কিবু বলছিলেন, ‘‘পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর। সব চেয়ে খারাপ অবস্থা মাদ্রিদের। সেই তুলনায় আমাদের শহরের অবস্থা কিছুটা ভাল। কিন্তু কখন যে তা বদলে যাবে, কেউ জানে না। এই কারণেই আমার পরিবারের সদস্যেরা সকলে নিজেদের গৃহবন্দি করে রেখেছেন।’’

মোহনবাগানের স্পেনীয় ফুটবলারদের উৎকণ্ঠা বাড়ছে অন্য কারণে। ক্লাবের সঙ্গে বেইতিয়াদের চুক্তি রয়েছে চলতি বছরের ৩১ মে পর্যন্ত। কিন্তু মোহনবাগানের আই লিগ জয়ের সাক্ষী থাকার জন্য তাঁদের স্ত্রী, সন্তান ও বান্ধবীরা কলকাতায় এসেছিলেন। তাঁদের ভিসার মেয়াদ শেষ হতে বেশি দিন বাকি নেই। কিন্তু করোনা-আতঙ্কে তাঁরা কেউ স্পেনে ফিরতে রাজি নন এই মুহূর্তে। গঞ্জালেস, মোরান্তেরাও কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছেন না। ঘনিষ্ঠমহলে তাঁরা বলেছেন, ‘‘পরিস্থিতি যে রকম ভয়ঙ্কর, তাতে স্পেন পৌঁছনোর আগেই হয়তো পরিবারের সদস্যেরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হবে। কলকাতা অনেক নিরাপদ। আমাদের কাছেই রাখতে চাই ওদের।’’ সূত্রের খবর, মোহনবাগানের তরফে ইতিমধ্যেই চেষ্টা শুরু করে হয়ে গিয়েছে স্পেনীয় ফুটবলারদের স্ত্রী, সন্তান ও বান্ধবীদের ভারতে থাকার ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর।

একই ছবি লাল-হলুদ শিবিরেও। স্পেনীয় ফুটবলারদের সকলের পরিবারের সদস্যেরাই গৃহবন্দি হয়ে রয়েছেন। অনুশীলন ও ম্যাচ স্থগিত হয়ে যাওয়ায় কোলাদোরাও নিউ টাউনের ফ্ল্যাটের বাইরে কার্যত পা রাখছেন না। যদিও ইস্টবেঙ্গলের কোচ বলছিলেন, ‘‘আমাদের চার ফুটবলারের কারও বাড়ি মাদ্রিদে নয়। ওদের অঞ্চলে এখনও পর্যন্ত সংক্রমণ সে ভাবে ছড়িয়ে পড়েনি। তবুও কেউ ঝুঁকি নিচ্ছে না। সকলের পরিবারের সদস্যরাই স্পেনে গৃহবন্দি হয়ে রয়েছেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Mario Rivera Granada
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy