“প্রতিটা বুটই কোনও না কোনও দারুণ ঘটনার সাক্ষী। এ বার সেই তালিকায় আর একটা যোগ করতে চাই।” —মেসি।
পেলে পারেননি। মারাদোনা পারেননি। জিকো পারেননি। কেমপেস পারেননি। গ্যারিঞ্চাও পারেননি।
ফুটবল ইতিহাসে লাতিন আমেরিকার সবথেকে বড় নামের মালিক। যাঁদের ক্যাবিনেটে অনেক বড় বড় ট্রফি থাকলেও নেই কোপা আমেরিকা। লাতিন আমেরিকার সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্ট জিততে গিয়েই হোঁচট খেতে হয়েছে তাঁদের। গত দু’বার চেষ্টা করেও কোপা ক্যাবিনেটে তুলতে পারেননি লিওনেল মেসিও। তিন বারে কি ভাগ্য খুলবে এলএম টেনের? পারবেন কি অভিশাপমুক্ত হতে?
শনিবার চিলির বিরুদ্ধে ফাইনালে নামার আগে আর্জেন্তিনার মানুষের এখন একটাই প্রার্থনা, যাতে মেসি সেই তালিকা থেকে নিজের নাম মুছে ফেলতে পারেন। শেষ করতে পারেন আর্জেন্তিনার ট্রফি-খরা। এ দিন সান্তিয়াগোতে পৌঁছে আবার লিও মেসি সমর্থকদের আশ্বস্ত করলেন। নিজের ব্যক্তিগত সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে ছবি পোস্ট করেন এলএম টেন। তাঁর সামনে সেই সব বুটের জোড়া যা পরে অসংখ্য স্মরণীয় মুহূর্ত উপভোগ করেছেন। ‘‘প্রতিটা বুটই কোনও না কোনও দারুণ ঘটনার সাক্ষী। এ বার সেই তালিকায় আর একটা যোগ করতে চাই,’’ লেখেন মেসি।
এলএম টেন যখন ট্রফি জয়ের স্বপ্ন দেখছেন, কোপা ফাইনালের আগে আবার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে পড়ছে। আর্জেন্তিনা ও চিলির মধ্যে সম্পর্ক খুব একটা ভাল নয়। নানা রাজনৈতিক ব্যাপারেই ঝামেলায় জড়িয়েছে দুই দেশ। দুই দেশের খারাপ সম্পর্কের রেশ দুই দেশের সমর্থকদের উপর পড়ে কি না, সেটা নিয়ে চিন্তায় কনমেবল।
এমনিতেই প্যারাগুয়ে-আর্জেন্তিনা ম্যাচ দেখতে এসে বিতর্কের প্রথম বীজ পুতে দিয়ে গিয়েছিল চিলি। অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করা শুরু করেছিল আর্জেন্তিনার ফুটবলারদের। ফাইনালে দুই দেশের জঙ্গি সমর্থকেরা মুখোমুখি হলে কী হতে পারে, তা নিয়ে কিন্তু আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। সমর্থকদের শান্ত করতে ময়দানে ইতিমধ্যেই নেমে পড়েছেন জাভিয়ার মাসচেরানোর মতো ফুটবলার। যিনি বলে দিচ্ছেন, এটা ‘যুদ্ধ’ নয়। ‘‘আমার মনে হয় সবাই বুঝতে পারবে ফুটবল একটা খেলা, যুদ্ধ নয়। আগে যা হয়েছে, তা হয়েছে। রাজনীতির সঙ্গে খেলাকে মেশালে চলবে না। চিলি আর আর্জেন্তিনা একে অপরের ভাই। পরস্পরকে শ্রদ্ধা দেখাতে হবে।’’
কোপার অর্ধেক ম্যাচেই দেখা গিয়েছে মাঠে ফুটবলারদের তর্কাতর্কি। রেফারির দিকে ফুটবলারদের তেড়ে যাওয়া। লাল কার্ড। তবে ফাইনালে একটা শান্তিপূর্ণ ম্যাচ খেলতে চান সেই কথাই জানালেন আর্জেন্তিনার মিডফিল্ডার। ‘‘আগ্রাসী মনোভাবকে কোনও সময় বাড়তে দিলে চলে না। চাই একটা ভাল ফাইনাল ম্যাচ দেখুন সবাই,’’ বলছেন মাসচেরানো।
মাসচেরানো যখন শান্তি বজায় রাখতে ব্যস্ত, তাঁর সতীর্থ সের্জিও আগেরো মরিয়া ফাইনালে গোলের ফর্ম ধরে রাখতে। সোনার বুট পাওয়ার লড়াইয়ে টিকে থেকে কোপায় এখনও পর্যন্ত তিন গোল করেছেন ম্যাঞ্চেস্টার সিটির ফরোয়ার্ড। তবে আগেরো বলছেন, তাঁর করা গোলের কোনও দাম থাকবে না আর্জেন্তিনা হেরে গেলে। ‘‘অবশ্যই আমরা সবাই খুব মরিয়া কোপা জিততে। ফাইনালে পৌঁছতে পেরে খুবই ভাল লাগছে। তার উপরে আমরা দারুণ খেলেছি, এটাও আত্মবিশ্বাস বাড়াচ্ছে।’’
তবে চিলি যে কঠিন চ্যালেঞ্জে ফেলতে পারেন তাঁদের, সেটা জানেন আগেরো। যাদের দলেও প্রতিভার অভাব নেই। অ্যালেক্সিস সাঞ্চেজ, আর্তুরো ভিদালের মতো তারকারা যে কোনও বিপক্ষকে বিপদে ফেলতে পারেন, সেই কথাই মনে করছেন মেসির বন্ধু। ‘‘চিলির সঙ্গে ম্যাচটা খুবই কঠিন হবে। ওরা ভাল দল। তার উপরে নিজেদের দেশে খেলছে বলে আত্মবিশ্বাসও থাকবে ওদের,’’ বলছেন আগেরো। চিলির বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক ম্যাচই আশা করছেন আগেরো। যাঁর মতে, রক্ষণে অনেক ফাঁকা জায়গা পাবে আর্জেন্তিনা। ‘‘খুব আক্রমণাত্মক খেলা আশা করছি। অনেক ফাঁকা জায়গাও পাওয়া যাবে। টাটা মার্টিনো নিশ্চয়ই কোনও প্ল্যান করে রেখেছেন কী ভাবে ওই ফাঁকা জায়গাগুলো কাজে লাগিয়ে চিলিকে বিপদে ফেলা যায়,’’ বলছেন আগেরো। ২২ বছর কোনও বড় ট্রফি নেই। শেষ কোপা আমেরিকা এসেছে ১৯৯৩ সালে। এই দলের হাত ধরেই কি ফের লাতিন আমেরিকার শৃঙ্গে উঠবে আর্জেন্তিনা? আগেরোর সাফ জবাব, ‘‘নিশ্চয়ই। না ওঠার কোনও কারণ নেই।’’
কোপা ফাইনাল
আর্জেন্তিনা বনাম চিলি (শনিবার রাত ১-৩০)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy