সন্তুষ্ট: অস্ট্রেলিয়ায় নিজের ভূমিকায় খুশি পুজারা। ফাইল চিত্র
বাইশ গজে এমন সময়ও মাঝেমধ্যে আসে, যখন রান করার চেয়ে কত বল খেলা সম্ভব হল, সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। অস্ট্রেলিয়া সফরে সেই দর্শনে বিশ্বাস রেখেই ব্যাটিং করেছিলেন চেতেশ্বর পুজারা। ভারতীয় দলের তারকা জানিয়ে দিচ্ছেন, তাঁর স্ট্রাইক রেট নিয়ে আলোচনা তুলতে চাওয়াটা অতিশোয়ক্তি হয়ে পড়ছে।
দুই বছর আগে ডন ব্র্যাডম্যানের দেশে তাঁর অকল্পনীয় ব্যাটিং (মোট ৫২১ রান, ৩টি সেঞ্চুরি, স্ট্রাইক রেট ৪১.৪১) আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল ক্রিকেটবিশ্বে। সেই তুলনায় এ বার তাঁর সার্বিক পারফরম্যান্স কেমন যেন ফিকে। চার টেস্টের সিরিজে মোট রান ২৭১। রয়েছে তিনটি হাফ-সেঞ্চুরি, স্ট্রাইক রেট ২৯.২০। যদিও সেই তুলনায় যেতে রাজি নন পুজারা। সংবাদসংস্থা পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, “দুটো সফরই ভারতীয় দলের পক্ষে দুর্দান্ত ছিল এবং আমিও বেশ ভাল খেলেছি। কিন্তু মনে রাখতে হবে, দুই সফরের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের ছিল। এ বার কোভিড অতিমারির কারণে আট মাস আমাদের ক্রিকেটের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক ছিল না। সেই সময় প্রথম শ্রেণির ম্যাচ পর্যন্ত ছিল না।”
কিন্তু তার পরেও ব্রিসবেনের ঐতিহাসিক টেস্টে পুজারাই অস্ট্রেলীয় বোলারদের সামনে রীতিমতো প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। পেসারদের সমস্ত ধরনের আঘাত নিজের শরীরে তুলে নিয়ে তিনিই টেস্ট সিরিজ জয়ের পথ তৈরি করে দিয়েছিলেন। ৩১ বছরের তারকা বলেছেন, “যদি প্রস্তুতির নিরিখে বিষয়টাকে পর্যালোচনা করা হয়, তা হলে আমরা তৈরি হওয়ার পর্যাপ্ত সময় পাইনি। সেখানে অনেক আগে থেকে অস্ট্রেলিয়া দল আমাদের সকলের জন্য কী ভাবে বোলিং করা দরকার, তার পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা সেরে রেখেছিল। ছন্দে ফিরতে গেলেও তো খানিকটা সময় লাগে। তবে ভাগ্য ভাল যে, সমাপ্তিটা দারুণ হয়েছে।” সেখানেই না থেমে পুজারা আরও বলেছেন, “সংখ্যার দিক থেকে বিচার করলে হয়তো এই সিরিজটা আমার পক্ষে খুব ভাল ছিল না। কিন্তু যে ধরনের উইকেটে আমাদের খেলতে হয়েছে, তার চরিত্র বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে সেখানে খুব বেশি রানই ওঠেনি এ বার। নিঃসন্দেহে গত বারের চেয়ে এ বারের চ্যালেঞ্জ অনেক বেশি কঠিন ছিল।”
ভারতের হয়ে ৮১ টেস্ট খেলে ফেলা পুজারা জানিয়েছেন, গত অস্ট্রেলিয়া সফরে তিনি সামলেছিলেন ৯২৮ বল, যা এ বার বেড়ে দাঁড়ায় ১২৫৮। কিন্ত তার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল কী ধরনের উইকেটে কতটা গতির মোকাবিলা তাঁকে করতে হয়েছে। তারই সঙ্গে ছিল ধারাবাহিক চোটের কারণে ক্রিকেটারদের ছিটকে যাওয়ার ঘটনা। পুজারার কথায়, “ওই দুটো সফরের তুলনা করা খুব কঠিন। তবে এ বারের সফর আমার কাছে অনেক বেশি স্পেশ্যাল, কারণ আমাদের তারুণ্যের উপরে নির্ভর করতে হয়েছে বেশি। অস্ট্রেলিয়ার তুলনায় দুর্বলই ছিল ভারতীয় দল। তবে কখনওই বলব না, এটাই সেরা সিরিজ ছিল। এর আগে অস্ট্রেলিয়া সফর এবং ঘরের মাঠে ওদের বিরুদ্ধে সিরিজটাও খুব কঠিন ছিল।”
কিন্তু এ বার তাঁর মন্থর ব্যাটিং নিয়ে মাঝেমধ্যে প্রশ্ন তুলেছেন প্রাক্তন ক্রিকেটারেরাও। বিশেষ করে, তাঁর স্ট্রাইক রেট নিয়ে। যা নিয়ে পুজারার সাফ জবাব, “এমন সময়ও আসে যখন স্ট্রাইক রেট বিষয়টা গৌণ হয়ে পড়ে। প্রত্যেক ব্যাটসম্যানেরই নিজস্ব একটা ভূমিকা থাকে। হেড কোচ রবি ভাই বা ব্যাটিং কোচ ভিকি ভাই (বিক্রম রাঠৌর) অথবা অজিঙ্ক রাহানে, সকলেই কিন্তু আমাকে একটা কথা বলে দিয়েছিল, নিজের মতো ব্যাটিংটা করো।” যোগ করেছেন, “আমাদের কোণঠাসা করতে অস্ট্রেলীয় বোলাররা সব অস্ত্র প্রয়োগ করেছে। আমি তো বলব, ওরা কোনও সময়ে পাল্টা আক্রমণ করার জন্য কোনও লুজ বলই করেনি। ফলে পরিস্থিতি অনুযায়ী নিজের খেলায় পরিবর্তন আনতে হয়েছে। ভাল পিচ পেলে স্ট্রাইক রোটেটও করেছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy