আগমন: রঞ্জি খেলে ‘মাস্ক’ পরে ফিরলেন ঋদ্ধিমান। নিজস্ব চিত্র
রাজকোটের বিমানে ওঠার পরেই ফোন বেজে ওঠে ঈশান পোড়েলের। জানিয়ে দেওয়া হয়, ইরানির কাপের দলে সুযোগ পেয়েছেন তিনি। তাঁর সঙ্গেই দলে রয়েছেন ঋদ্ধিমান সাহা, আকাশ দীপ ও শাহবাজ আহমেদ।
অনুষ্টুপ মজুমদার ও মনোজ তিওয়ারির ফোন নিঃশব্দ। তাই সতীর্থরা আনন্দ করবেন না মনোজ, অনুষ্টুপদের পাশে দাঁড়াবেন, আন্দাজ করতে পারছিলেন না। রঞ্জি মরসুমের কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল ও ফাইনালে দুরন্ত পারফর্ম করার পরে কেন অনুষ্টুপকে রাখা হল না, উত্তর খুঁজে পাচ্ছিলেন না। পরেই বোর্ডের পক্ষ থেকে ই-মেল মারফত জানানো হয়, করোনা আতঙ্কের জেরে স্থগিত রাখা হয়েছে ইরানি কাপ। তাই দল নির্বাচনেরও প্রশ্ন নেই।
রাজকোট থেকে মুম্বই হয়ে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দেয় তাঁদের বিমান। সেই উড়ানেই আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের বৈঠক সেরে ফেরেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও। করোনা আতঙ্কের জেরে বাংলা দলের প্রত্যেকের সঙ্গী মুখাবরণ। রাজকোট বিমানবন্দরে মুখাবরণ না দেখলে প্রচুর প্রশ্নের মুখেও পড়তে হয়েছে। বাংলার ক্রিকেটারদের প্রত্যেকেই নিয়ম মেনে মুখাবরণ পরে প্রবেশ করেন বিমানবন্দরে। বিমানের মধ্যে অনুষ্টুপ, ঋদ্ধি মজে তাঁদের গেম নিয়ে। ওয়েব সিরিজে ডুবে মনোজ। ঈশান, অভিমন্যু ঈশ্বরনেরা খুনসুটিতে ব্যস্ত। কিন্তু সবার মুখে একটাই আক্ষেপ, ডিআরএস কেন আংশিক!
রঞ্জির ফাইনালে যা নিয়ে বাংলা ও সৌরাষ্ট্র দু’দলকেই সমস্যায় পড়তে হয়েছে। সৌরাষ্ট্রের মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান অর্পিত বাসবড়া বাংলার বিরুদ্ধে সেঞ্চুরি করেছেন। কিন্তু শুরুতেই তাঁর এলবিডব্লিউ সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক হয়। আংশিক ডিআরএস তা প্রমাণ করতে পারেনি। বাংলার ইনিংসের শুরুতেই এলবিডব্লিউ হন অভিমন্যু ঈশ্বরন। ডিআরএস নেওয়ার পরে দেখা যায়, ইনসুইং আছড়ে পড়ছে তাঁর প্যাডে। তাঁর পা ছিল লেগ স্টাম্পে। বল ট্র্যাকিং থাকলে কোনও ভাবেই আউট হতেন না ঈশ্বরন। তৃতীয় ও চতুর্থ উদাহরণ ঋদ্ধিমান সাহা। চতুর্থ দিনের শুরুতেই উনাদকাটের বলে আউট দেওয়া হয় তাঁকে। ডিআরএস নেওয়ার পরে টিভি আম্পায়ারের সন্দেহ হয় ঋদ্ধির ব্যাটে লেগেছে বল। নেই ‘আল্ট্রা এজ’ অথবা ‘হটস্পট’। কী ভাবে প্রমাণ করবেন? শব্দও ঠিক মতো শোনা যায়নি। তবুও নটআউট দেওয়া হয় ঋদ্ধিকে। পরে আবার ৩৩ রানের মাথার উনাদকাটের ইনসুইং আছড়ে পড়ে ঋদ্ধির পিছনের পায়ে। বল ট্র্যাকিংয়ের অভাবে প্রমাণ করা যায়নি, তিনি আউট।
এই কয়েকটি ঘটনা ম্যাচের চিত্রনাট্য অনেকটাই বদলে দিয়েছে। তাই বাংলার কোচ অরুণ লাল বলছিলেন, ‘‘অর্পিতকে আউট দেওয়া হলে এত রান হয়? কখন ওরা অলআউট হয়ে যায়!’’ সৌরাষ্ট্রের কোচ কার্সন ঘাউড়িও মানতে পারছেন না আংশিক ডিআরএস। তাঁর কথায়, ‘‘আংশিক ডিআরএস নিয়ে কোনও লাভ অন্তত হতে দেখিনি। তবুও কিছু না থাকার থেকে তো ভাল!’’
ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহালি বলেছিলেন, ঋদ্ধিমান তাঁর ডিআরএস ক্যাপ্টেন। কিন্তু রঞ্জিতে আংশিক ডিআরএস নিয়ে খুশি নন ঋদ্ধিও। তাঁর মত, ‘‘ডিআরএস থাকলে পুরো থাকুক। না হলে আগের মতো বাকি ম্যাচে আম্পায়ারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের উপরই ভরসা করতে রাজি। ডিআরএস নেওয়া হয় আম্পায়ারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য। কিন্তু আংশিক ডিআরএস-এ সেই উদ্দেশ্য পূরণ হচ্ছে না।’’
রঞ্জি চ্যাম্পিয়ন চেতেশ্বর পুজারাও ক্ষুব্ধ। ম্যাচ শেষে বললেন, ‘‘আংশিক ডিআরএস আরও সমস্যা তৈরি করছে। ঠিক কোন কোন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়া উচিত বোঝা যাচ্ছে না। আশা করি, পরের বার এ রকম কিছু হবে না।’’
ভারতীয় বোর্ডের ক্রিকেট অপারেশনস জেনারেল ম্যানেজার আশ্বাস দিয়েছেন, এ বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন। বাংলার ক্রিকেটারদের আর্জি, পরের বার রঞ্জিতে যেন এই ধরনের বিভ্রান্তিমূলক ব্যবস্থা না থাকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy