Advertisement
১২ অক্টোবর ২০২৪

সিএবি-তে ‘টিম সৌরভ’ গড়া নিয়ে জলঘোলা শুরু

ময়দানে জোর আলোচনা চলছে সিএবি-র নির্বাচনী যুদ্ধ নিয়ে। নানা জায়গায় সভা চলছে, খবর ছড়াচ্ছে মাঝেমধ্যেই। এখনও ইডেন কিন্তু শান্ত। সেখানে ঢুকে বোঝার উপায় নেই, সতেরো দিন বাদে ধুন্ধুমার কিছু হতে পারে।

রাজীব ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৬ ০৩:৩২
Share: Save:

ময়দানে জোর আলোচনা চলছে সিএবি-র নির্বাচনী যুদ্ধ নিয়ে। নানা জায়গায় সভা চলছে, খবর ছড়াচ্ছে মাঝেমধ্যেই। এখনও ইডেন কিন্তু শান্ত। সেখানে ঢুকে বোঝার উপায় নেই, সতেরো দিন বাদে ধুন্ধুমার কিছু হতে পারে।

পরিস্থিতি এমন যে, যুযুধান দু’পক্ষে যুদ্ধ-প্রস্তুতি চললেও আদৌ তাদের যুদ্ধক্ষেত্রে নামা হবে কি না, সেটাই হলফ করে কেউ বলতে পারছে না। কারণ যত দিন না লোঢা কমিটির বৈপ্লবিক সুপারিশ নিয়ে মামলার রায় দিচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট, তত দিন এই যুদ্ধের কোনও নিশ্চয়তা নেই। কিন্তু নির্বাচনী যুদ্ধের দামামা বাজলে কী হবে, এখন এই নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে।

সিএবি প্রেসিডেন্ট পদে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের কোনও প্রতিদ্বন্দ্বী নেই মাঠে। এখনও পর্যন্ত যা খবর, তাতে নবান্নের আশীর্বাদ নিয়ে তিনিই সম্ভবত বাংলার ক্রিকেট প্রশাসনের সর্বোচ্চ পদে থাকছেন। কিন্তু বাকি পদে কী হবে? অপর গোষ্ঠীর কোনও প্রার্থীকে প্রশাসনে রেখে সিএবি চালানোর পক্ষপাতী নন সৌরভ। ঘনিষ্ঠমহলে নাকি তেমনই বলেছেন তিনি। সিএবি সূত্রের খবর, অপর গোষ্ঠী থেকে তাঁর কাছে রফাসূত্রের প্রস্তাব এলেও তিনি নাকি তা ফিরিয়ে দিয়েছেন। তিনি নির্বাচনী যুদ্ধ জিতেই সিএবি-তে ‘টিম সৌরভ’ তৈরি করতে চান বলে খবর। তাই দুই গোষ্ঠীই এখন ঘুঁটি সাজাচ্ছে। কিন্তু নির্বাচন হলে সৌরভ তাঁর অনুগামী প্রার্থীদের জিতিয়ে আনতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সিএবি-র একাংশে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।

যুগ্ম সচিব পদে অভিষেক ডালমিয়া দু’পক্ষেরই পছন্দ। অপর যুগ্ম সচিব পদের জন্য লড়াইয়ে নামতে পারেন কোষাধ্যক্ষ বিশ্বরূপ দে। কিন্তু তিনি গত দশ বছর ধরে সিএবি-র শীর্ষপদে। তাই লোঢা কমিটির আট বছরের বেশি শীর্ষপদে না থাকার সুপারিশ কোর্ট মানতে বললে তাঁর এই লড়াইয়ে নামাই আটকে যেতে পারে। তাই অপর যুগ্ম সচিব পদে প্রাক্তন সহ-সচিব প্রবীর চক্রবর্তীকে তৈরি রেখেছেন সৌরভ।

এই হিসেবও অবশ্য উল্টে যেতে পারে। যদি মোহনবাগান সহ সচিব সৃঞ্জয় বসু এই যুদ্ধে নামেন। শোনা যাচ্ছে, তিনি সৌরভের সমর্থক হিসেবেই নামবেন। সিএবি-তে আসার পর সৌরভ বাংলার ক্রিকেটের জন্য যা যা করেছেন, সৃঞ্জয় তার বড় সমর্থক। অন্য দিকে তাঁরই শিবিরের আর এক সিনিয়র কর্তা ও সৃঞ্জয়ের আত্মীয় চিত্রক মিত্রও তাঁর পাশেই থাকবেন বলে শোনা যাচ্ছে। সৃঞ্জয়-চিত্রক জুটি সৌরভের দিকে ঝুঁকে থাকলে এঁদের অনুগামীদের ভোটই নির্বাচনে ফ্যাক্টর হয়ে উঠতে পারে।

অপর গোষ্ঠীর অঙ্ক আবার, সৃঞ্জয়দের আনতে গিয়ে বেশ কিছু ভোট খোয়াতে পারেন সৌরভরা। ১৮টি জেলা সংস্থার ভোট গড়ে দিতে পারে পার্থক্য এবং জেলার বেশির ভাগ ভোট তাঁরাই পাবেন। যদিও সৌরভ জেলা সংস্থাগুলিকে বড় আর্থিক অনুদানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে রেখেছেন। কিন্তু অপর গোষ্ঠীর নেতাদের সঙ্গে জেলার কর্তাদের সম্পর্কের ভিত্তিতে তাঁরা আত্মবিশ্বাসী জেলা থেকে বেশির ভাগ ভোটই তাঁদের দিকে পড়বে। বিভিন্ন জেলায় এখনও প্রচার চালাচ্ছেন তাঁরা। তাদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও যাচ্ছেন। যোগাযোগ রেখে চলেছেন ময়দানের ক্লাবগুলির সঙ্গেও। যে যোগাযোগ অবশ্য সৌরভ গোষ্ঠীও রাখছে। নবান্ন থেকে শেষ পর্যন্ত কোনও কড়া ফতোয়া না এলে জেলার বেশির ভাগ ভোট নাকি সৌরভ গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে পড়তে পারে।

সম্প্রতি সিএবি কর্মীদের বেতন বাড়ানো নিয়ে সৌরভের সুপারিশ মানেনি সিএবি-র ফিনান্স কমিটি। মাত্র দু’জন কর্মীর বেতন বাড়ানোর পক্ষে ছিলেন সৌরভ। যার উত্তরে ফিনান্স কমিটি জানায়, এ ভাবে শুধু দু’জনের বেতন বাড়ানো অনৈতিক। শেষ পর্যন্ত সকলেরই বেতন বাড়ানোর সুপারিশে সায় দিতে বাধ্য হন সৌরভ। অরুণলালকে জীবনকৃতি সম্মান দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েও সিএবি প্রেসিডেন্ট পিছু হঠতে বাধ্য হন ট্রাস্টি বোর্ড তা নাকচ করে দেওয়ায়। টুর্নামেন্টের পুরস্কার অর্থ নিয়েও জলঘোলা হয়েছিল ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে।

এই ঘটনাগুলিতে সিএবি-র অন্দরমহলে সৌরভের জনপ্রিয়তা কিছুটা কমলেও তাঁর অনুগামীদের বিশ্বাস, এ সব সামলানো কোনও ব্যাপার নয় মহারাজের কাছে। কারণ, সিএবি-কে পাঁচ-পাঁচটি স্পনসর এনে দিয়েছেন যিনি, তাঁর অনুরোধ কেউ ফেলতে পারবেন না। সে জেলা সংস্থাই হোক বা ক্লাব। কোষাধ্যক্ষ পদেও তাই নরেশ ওঝাকে নিয়ে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী সৌরভ-গোষ্ঠী।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE