Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
বুম বুম সার্ভিস

খুয়ান দুরন্ত ছন্দে থাকলেও এগিয়ে রাখব জোকোভিচকে

শুরু থেকেই নাদালকে দেখে আমার খুব একটা ভাল লাগেনি। হাঁটুতে যে ওঁর সমস্যা হচ্ছিল, তা কোর্টে ওঁর হাঁটা, দৌড়নো দেখেই বোঝা যাচ্ছিল।

বরিস বেকার
শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:১২
Share: Save:

গ্র্যান্ড স্ল্যাম সেমিফাইনাল থেকে চোটের জন্য কাউকে বেরিয়ে যেতে দেখতে মোটেই ভাল লাগে না। তবে শুক্রবার রাফায়েল নাদালের ক্ষেত্রে যা হল, তাতে আমি খুব একটা অবাক হইনি।

আমি টিভি ধারাভাষ্য দিচ্ছিলাম ম্যাচটার। শুরু থেকেই নাদালকে দেখে আমার খুব একটা ভাল লাগেনি। হাঁটুতে যে ওঁর সমস্যা হচ্ছিল, তা কোর্টে ওঁর হাঁটা, দৌড়নো দেখেই বোঝা যাচ্ছিল। আসলে দোমিনিক থিমের বিরুদ্ধে যে প্রায় পাঁচ ঘণ্টার ম্যাচটা এর আগে খেলেছিলেন, সেটাই ওঁকে নিঙড়ে নিয়েছে। ওই ধকল কাটিয়ে ও আর পুরোপুরি চাঙ্গা হয়ে ফিরে আসতে পারেননি। তবে যদি পুরো ফিট থাকতেন নাদাল, তা হলেও খুয়ান মার্তিন দেল পোত্রোর সামনে ওঁকে বোধহয় কঠিন পরীক্ষার সামনে পড়তে হত।

গ্র্যান্ড স্ল্যামে সম্প্রতি খুব ভাল খেলছেন দেল পোত্রো। উইম্বলডনে তো নাদালকে প্রায় হারিয়েই দিয়েছিলেন তিনি। তা ছাড়া হার্ড কোর্ট ওঁর পছন্দের। এই প্রতিযোগিতায় এ পর্যন্ত দেল পোত্রো একটা মাত্র সেট হেরেছেন। যদিও গত দু’সপ্তাহে ওঁর পারফরম্যান্সের রেখচিত্র কিছুটা নীচে দিয়েই যাচ্ছিল, কিন্তু এখন গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেতাব থেকে মাত্র এক ধাপ দূরে। যে খেতাব তিনি শেষ জিতেছিলেন ন’বছর আগে।

কব্জির চোটের জন্য বহু দিন কোর্টের বাইরে থাকতে হওয়ায় একটা সময়ে মানসিক ভাবে খুবই ভেঙে পড়েছিলেন এই আর্জেন্টাইন। কিন্তু প্রচণ্ড মানসিক শক্তি ও ধৈর্য দিয়ে লড়াই করে কোর্টে ফিরে আসেন। আর এখন এই জায়গায় চলে এসেছেন। অনেকটা রূপকথার মতো শুনতে লাগলেও, এটাই সত্যি।

যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের ফাইনালে তাঁকে যাঁর বিরুদ্ধে লড়তে হবে, তিনিও আর এক লড়াকু নোভাক জোকোভিচ। বছরটা উনি শীর্ষে থেকে শেষ করুন বা না করুন, নিজেকে সেরা মনে করেই কোর্টে নামেন এই সার্বিয়ান। নিঃসন্দেহে ফাইনালে ও-ই ফেভারিট। হবে না-ই বা কেন? গত দু’মাস ধরে যে রকম নিখুঁত টেনিস খেলে যাচ্ছেন জোকার, তাতে এই ফাইনালে জয়টা ওরও প্রাপ্য।

প্রয়োজনে নিজের পারফরম্যান্সকে যে কোনও উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারেন জোকোভিচ। একই সঙ্গে মাথা অসম্ভব ঠাণ্ডাও রাখতে পারেন। অল-কোর্ট কভারেজ ও শক্তিশালী গ্রাউন্ডস্ট্রোকই ওঁকে এগিয়ে রাখছে। চোট সারিয়ে কোর্টে ফেরার পরে শেষ দু’বছরে জোকোভিচ মানসিক সমস্যায় বেশি ভুগছিলেন। টেনিসের প্রতি সেই ভালবাসা ও খিদে কোনওটাই অনুভব করতে পারছিলেন না। তবে সৌভাগ্যক্রমে দুটোই ফিরে এসেছে। পারিবারিক দিক থেকেও আগের চেয়ে ভাল জায়গায় আছেন তিনি। নিজের লোকেদের কাছ থেকে যে প্রেরণা পাওয়া যায়, সেটা এখন ভরপুর পাচ্ছেন প্রাক্তন এই চ্যাম্পিয়ন।

তবে এ বারও তরুণদের নিয়ে সেই একই সংশয় রয়ে গেল। শেষ পর্যন্ত কোনও তরুণ খেলোয়াড় উঠে আসতে পারলেন না সেমিফাইনাল বা ফাইনালে। থিম মনে ছাপ ফেলার মতোই পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন। নিকোলাস কিরিয়স ও আলেকজান্ডার জেরেভকে দ্বিতীয় সপ্তাহে খেলার সুযোগ পেতে না দেখে বেশ খারাপই লাগল। যার অর্থ সেই রাফা-রজার-নোভাক ত্রয়ীর দিকেই তাকিয়ে থাকতে হবে এখন সারা টেনিস দুনিয়াকে।

রবিবার ফাইনালে দেল পোত্রো কড়া চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেবেন ঠিকই। তবু বলব জোকোভিচই এগিয়ে থাকবেন। ফাইনালটা যে জমে যাবে, এই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। দুর্দান্ত কিছু গ্রাউন্ডস্ট্রোক দেখা যাবে। সঙ্গে কিছু উত্তেজক র‌্যালিও। যেই জিতুন, তিনি যে যোগ্য হিসেবেই জিতবেন, এই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। দু’জনেই যে বছরের বেশির ভাগ সময়েই ভাল খেলেছেন। তাই জয়টা দু’জনেই পেতে পারেন।

(গেমপ্ল্যান)

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE