সুখস্মৃতি: সেপ ব্লাটার ও প্রফুল্ল পটেলের (ডানদিকে) সঙ্গে ভাইচুং।
চার বছর ধরে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের (এআইএফএফ) টেকনিক্যাল কমিটির চেয়ারম্যান থাকার পরে গুরুত্বপূর্ণ এই পদ থেকে সরানো হতে পারে ভাইচুং ভুটিয়া-কে। ফেডারেশনের সর্বোচ্চ স্তরে এমনই চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে।
চার বছর আগে মহা ধূমধামের সঙ্গে ভাইচুংকে টেকনিক্যাল কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছিল। অনেকেই তখন বলেছিলেন, দেশের সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলারকে এমন গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হল। এর চেয়ে ভাল পদক্ষেপ আর কী হতে পারে?
এখন কিন্তু শীর্ষস্থানীয় কর্তাদের মধ্যে স্বপ্নভঙ্গের ছোঁয়া। কারও কারও মতে, ভারতীয় ফুটবলের উন্নতির স্বার্থে ভাইচুং যতটা সময় দেবেন বলে আশা করা হয়েছিল, তা তিনি দিতে পারেননি। সম্প্রতি অনূর্ধ্ব ১৭ ভারতীয় দলের কোচ নিকোলাই অ্যাডাম-কে নিয়ে তৈরি হওয়া বিতর্কে ভাইচুংয়ের ভূমিকা নিয়েও সকলে সন্তুষ্ট নন। নতুন কোচ নিয়োগ নিয়েও শীর্ষস্থানীয় কর্তাদের সঙ্গে তাঁর মতবিরোধ ও ব্যবধান তৈরি হয় বলেও খবর।
ফেডারেশনের সচিব কুশল দাস-কে যোগাযোগ করা হলে তিনি ভাইচুংয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছু বলতে চাননি। ভাইচুংকে সরিয়ে দেওয়ার ভাবনা রয়েছে কি না জিজ্ঞেস করায় কুশল বললেন, ‘‘কে থাকবে না থাকবে, এ ভাবে আমি বলতে পারি না। এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে এগজিকিউটিভ কমিটি।’’ মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে এগজিকিউটিভ কমিটির সভা বসতে পারে। তখনই সম্ভবত ভাইচুং নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। সর্বোচ্চ স্তরে মনোভাব বদল না হলে ভাইচুংকে সরেই যেতে হতে পারে।
ঘটনা হচ্ছে, ভাইচুংকে টেকনিক্যাল কমিটির চেয়ারম্যান থেকে সরানো মানে সচিন-সৌরভদের ক্রিকেটের উপদেষ্টা কমিটি থেকে বাদ দেওয়ার মতো বিস্ফোরক ঘটনা। এত বড় সিদ্ধান্ত শুধুই কর্তাদের ক্ষোভ বা এগজিকিউটিভ কমিটির সদস্যরা নিতে পারবেন বলে মনে হয় না। সত্যিই এমন চাঞ্চল্যকর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কি না, তা নির্ভর করবে ভারতীয় ফুটবলের সর্বময় কর্তা প্রফুল্ল পটেলের মনোভাবের ওপর। তিনি চূড়ান্ত অনুমোদন না দিলে ভাইচুংকে সরানোর প্রশ্নই নেই।
ফেডারেশন প্রেসিডেন্ট প্রফুল্ল পটেল-কে শনিবার দুপুরে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে মনে হল, অদূর ভবিষ্যতেই যদি শোনা যায় ভাইচুং নিয়ে তাঁরও স্বপ্নভঙ্গ ঘটেছে, খুব অবাক হওয়ার থাকবে না। আনন্দবাজার তাঁকে সরাসরি প্রশ্ন করেছিল, ১) টেকনিক্যাল কমিটির চেয়ারম্যান হিসাবে ভাইচুংয়ের ভূমিকায় কি আপনি খুশি? ২) এটা কি ঠিক যে, ভাইচুংয়ের বিকল্প হিসাবে ফেডারেশন নতুন কাউকে আনার কথা ভাবছে? প্রফুল্ল বললেন, ‘‘নির্দিষ্ট করে কোনও একটি বিশেষ কমিটি বা বিশেষ কোনও ব্যক্তিকে নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না। তবে এটুকু বলতে পারি, প্রত্যেকটা কমিটির পারফরম্যান্সই আমরা রিভিউ করি।’’ এক বারের জন্যও প্রশ্ন উড়িয়ে দিয়ে বলেননি, ‘‘এমন খবর ঠিক নয়, ভাইচুংকেই আমরা রেখে দিচ্ছি।’’ কিছুটা ইঙ্গিতপূর্ণ ভাবেই এর পর যোগ করলেন, ‘‘আমরা রিভিউ করি। যোগ্য অনেক ব্যক্তিকেই সুযোগ দিই।’’
টেকনিক্যাল কমিটির চেয়ারম্যান ছাড়াও ফেডারেশন প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত পরামর্শদাতা হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন ভাইচুং। টেকনিক্যাল কমিটির পদ ছিল সাম্মানিক। কিন্তু পরামর্শদাতা হিসেবে ফেডারেশন থেকে বেতন পেতেন তিনি। সেই পদের চুক্তি নবীকরণ হওয়ার কথা ছিল জানুয়ারিতে। বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, চুক্তি নবীকরণ হয়নি। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, প্রফুল্ল নিজেও যে ভাইচুংকে নিয়ে খুব প্রসন্ন নন, চুক্তি নবীকরণ না হওয়া থেকেই তা পরিষ্কার।
ভাইচুংয়ের সঙ্গে শনিবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি (এ ব্যাপারে তাঁর প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেলেই তা প্রকাশ করা হবে)। তবে জানা গিয়েছে, ফেডারেশেন যে এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারে সেই ইঙ্গিত তাঁর কাছেও পৌঁছেছে। একটা সম্ভাবনার কথা শোনা যাচ্ছে যে, ভাইচুংকে টেকনিক্যাল কমিটির চেয়ারম্যান পদ থেকে সরানো হলেও কমিটিতে থাকার প্রস্তাব দেওয়া হবে শুধু সদস্য হিসেবে। সেই প্রস্তাবে তিনি রাজি হবেন নাকি কমিটিতেই আর থাকতে চাইবেন না, সেটাও দেখার। তারও আগে দেখার, প্রফুল্লের মনোভাব একই থাকে কি না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy