Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Cricket

পোপ আবিষ্কারে বঙ্গ কোচের হাত 

তৃতীয় টেস্টে দুই ওপেনার মন্থর গতিতে ইনিংস শুরু করায় চাপে পড়ে গিয়েছিল ইংল্যান্ড। বেন স্টোকস ও জো রুট দ্রুত আউট হওয়ায় বড় রান করার দায়িত্ব নিতে হয় পোপকেই।

পাশে: অলি পোপের সঙ্গে ময়দানে খেলে যাওয়া সিদ্ধার্থ (ডান দিকে)। 

পাশে: অলি পোপের সঙ্গে ময়দানে খেলে যাওয়া সিদ্ধার্থ (ডান দিকে)। 

ইন্দ্রজিৎ সেনগুপ্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২০ ০৬:৩২
Share: Save:

ইংল্যান্ড বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে একটি নাম বহু চর্চিত। অলি পোপ। তৃতীয় টেস্টে তাঁর ৯১ রানের ইনিংসের প্রশংসা করেছেন সচিন তেন্ডুলকর। লিখেছেন, ‘‘পোপের মধ্যে ইয়ান বেলের ছোঁয়া দেখতে পাচ্ছি।’’ প্রাক্তন ইংল্যান্ড অধিনায়ক অ্যান্ড্রু স্ট্রস বলেছেন, ‘‘আমাদের ভবিষ্যতের তারকা।’’

অনেকেরই জানা নেই, এই অলি পোপের সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছেন এক বাঙালি। তিনি সিদ্ধার্থ লাহিড়ী। বেহালার বাসিন্দা সিদ্ধার্থ সিএবি প্রথম ডিভিশন লিগে খেলতেন। আনন্দবাজার পত্রিকা স্পোর্টস ক্লাব, দক্ষিণ কলিকাতা সংসদ, কাস্টমস, মিলন সমিতির হয়ে খেলেছেন অনেক দিন। পরে ইংল্যান্ড চলে যান নিজের কোচিং জীবন সফল করে তোলার জন্য। সারেতে স্টার ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে কাজ করতে শুরু করেন সিড (এই নামেই বেশি পরিচিত)। বর্তমানে সেই অ্যাকাডেমির মালিকানা রয়েছে রাজস্থান রয়্যালসের হাতে। এই অ্যাকাডেমি থেকেই উত্থান ইংল্যান্ডের নতুন মিডল অর্ডার ব্যাটিং প্রতিভা পোপের। সারে থেকে ফোনে সিদ্ধার্থ বলছিলেন, ‘‘মাত্র সাত বছর বয়সে পোপ আমাদের ক্যাম্পে এসেছিল। উইকেটকিপার হিসেবে জীবন শুরু করেছিল ও। কিন্তু ব্যাটিংয়ের প্রতি বরাবর আকর্ষণ ছিল বেশি। ছোটবেলা থেকেই ও স্ট্রোকমেকার। উইকেট কামড়ে পড়ে থাকার ক্রিকেটার নয়। যতক্ষণ ক্রিজে থাকবে, স্কোরবোর্ড সচল রাখবে।’’

পোপের এই আগ্রাসী মনোভাব নষ্ট হতে দিতে চাননি বাঙালি কোচ। প্রয়াত গোপাল বসুর ছাত্র ছিলেন সিদ্ধার্থ। তাঁর কাছ থেকেই শেখা, ‘প্লে টু স্কোর, নট টু সারভাইভ’। অর্থাৎ রান করার জন্য ব্যাট করো, টিকে থাকার জন্য নয়। সিড বলছিলেন, ‘‘গোপাল স্যরের সেই শিক্ষা কখনও ভুলিনি। ছোট থেকেই আগ্রাসী মনোভাবের সঙ্গে এগোতে শিখিয়েছিলেন উনি। পোপদের সেই মতোই তৈরি করার চেষ্টা করেছি। বরাবর ওকে বলে এসেছি, মাঠে গিয়ে কিন্তু রান করতে হবে। উইকেট কামড়ে পড়ে থাকলে দল চাপে পড়ে যাবে।’’ সিডের ব্যাখ্যা, ‘‘ছোটবেলা থেকে অনেক কোচের কাছেই তো যেতে হয়েছে পোপকে। কেউ কেউ হয়তো উইকেট কামড়ে পড়ে থাকার শিক্ষা দিত। ও বলত, শুরুতেই ব্যাকফুটে চলে যাচ্ছি। শট খেলার বলেও ব্যর্থ হচ্ছি। আমি তখন বুঝিয়েছিলাম, শুরুতেই যদি কেউ ভেবে নেয় আউট হব না, সে আর শট নিতে পারবে না।’’ যোগ করেন, ‘‘মস্তিষ্কই পেশির চলাচল মন্থর করে দেবে। এটা পোপ ছোটবেলাতেই বুঝে গিয়েছিল। তাই লক্ষ্য করবেন, ওকে কিন্তু ক্রিজে দমিয়ে রাখা যায় না।’’

তৃতীয় টেস্টে দুই ওপেনার মন্থর গতিতে ইনিংস শুরু করায় চাপে পড়ে গিয়েছিল ইংল্যান্ড। বেন স্টোকস ও জো রুট দ্রুত আউট হওয়ায় বড় রান করার দায়িত্ব নিতে হয় পোপকেই। ১৫০ বলে ৯১ রানের ইনিংস পাল্টা চাপে ফেলে দেয় হোল্ডারের দলকে। সিড বলছিলেন, ‘‘ছোটবেলা থেকেই পোপ এ ধরনের পরিস্থিতি পছন্দ করে। মিডল অর্ডারে ব্যাট করলে অনেক বেশি চাপ নিতে হয়। ও কিন্তু আমাকে বরাবর বলত, চাপ সামলানো উপভোগ করে। বিপক্ষ আক্রমণ করলে প্রতিআক্রমণ করতে দু’বার ভাবে না। তার অন্যতম কারণ অবশ্যই ওর শট খেলার প্রবণতা।’’

২২ বছর বয়সি ব্যাটসম্যানের স্বপ্ন, নিয়মিত ইংল্যান্ডের হয়ে খেলার। কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টেস্টে পোপের কোচ লক্ষ্য করেছেন, টেকনিকে সামান্য পরিবর্তন হয়েছে তাঁর। সিড বলছিলেন, ‘‘মিডল স্টাম্প থেকে ব্যাট নামাচ্ছে ও। সেটা সামান্য ঘুরিয়ে প্রথম স্লিপ অঞ্চল থেকে নামাতে হবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে সিরিজ শেষ হলেই এটা নিয়ে ওর সঙ্গে কাজ করব।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Cricket England Nick Pope
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy