শ্রীবৎস রান আউট হওয়ার পরে উৎসব ক্রুনালের। নিজস্ব চিত্র
রাঁচীর হাইওয়ে পিচ থেকে ইডেনের গতি ও বাউন্সে ভরা বাইশ গজ। সঙ্গে ফ্লাডলাইটের আলো আর শিশির-সমস্যা। প্রশ্নপত্র কঠিন হতেই নড়ে গেল বাংলার ভিত! মনোজ তিওয়ারিদের ব্যাটিং ধারাবাহিকতার দফা রফা।
এই ক’দিন হল, আঞ্চলিক পর্বে বাংলাকে অপরাজিত রেখেছিলেন ব্যাটসম্যানরা। মাত্র দিন সাতেক গিয়েছে। বদলেছে শুধু পরিবেশ। সেই ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতাতেই জাতীয় টি টোয়েন্টির মূলপর্বের শুরুতেই হোঁচট খেল রঞ্জি ট্রফির সেরা চারের অন্যতম দল। ক্রুনাল পাণ্ড্যদের ১৪৯-৯-এর জবাবে অশোক ডিন্ডারা অল আউট ১৩২ রানে। ১৮ রানে হারল বাংলা।
যে ওপেনিং জুটির ব্যাটে ভর করে টানা চার ম্যাচ জিতে এসেছে বাংলা, তাঁদের অন্যতম শ্রীবৎস গোস্বামী ছন্দ ধরে রাখলেও বিবেক সিংহ কিন্তু পারলেন না। ১২ বলে ১৪ রান তুলে দুর্বল শটে বল সোজা বোলারের হাতে জমা করে দেন। বরং শ্রীবৎস এ দিন অনেক সাবলীল ছিলেন। উল্টোদিকে সতীর্থদের একের পর এক আত্মসমর্পণ দেখেও অবিচল ছিলেন বাংলার কিপার-ওপেনার। আধ ডজন বাউন্ডারি-সহ ৪৩ বলে ৫৮ রান করেন তিনি। বেশ কয়েকটি দর্শনীয় শট নেন।
কিন্তু ২৬ বছর বয়সি বাঁ হাতি পেসার লুকমান মেরিওয়ালা (৩-২৬) ও হার্দিকের বড়দা ক্রুণাল পাণ্ড্যর (৩-১৪) দাপটে অন্য দিক থেকে বাংলার ব্যাটিংয়ে ধস নেমে যায়। সুদীপ চট্টোপাধ্যায় প্রথম বলেই এলবিডব্লিউ। অধিনায়ক মনোজকেও ফুটওয়ার্ক ভুলে ব্যাট করার মাশুল দিতে হয় এলবিডব্লিউ হয়ে। রঞ্জি ট্রফিতে ধারাবাহিক সাফল্য পাওয়া অনুষ্টুপ মজুমদারকে বল করতে এসেই ফেরান পাণ্ড্য। তাঁর বলেই মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান ঋত্বিক চট্টোপাধ্যায়ও। একশোয় পৌঁছনোর আগেই বঙ্গ ব্যাটিংয়ের অর্ধেক প্যাভিলিয়নে! অষ্টম ওভারে ৫০ পেরনোর পর থেকেই বাংলার ব্যাটিংয়ে এই ধস নামা শুরু।
শেষ চার ওভারে জয়ের জন্য বাংলার দরকার ছিল ৩৬ রান। এই সময়েই প্রমোদ চাণ্ডিলার সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে শ্রীবৎস রান আউট হয়ে ফিরে যেতেই বাংলার জয়ের আশাও সম্পূর্ণ শেষ হয়ে যায়। অবশ্য এই ওভারেই দু’বার চান্ডিলার ক্যাচ না পড়লে সেটা আগেই হত। শেষ ওভারে বাংলার প্রয়োজন ছিল ১৮ রান। এই ওভারেই ছয় হাঁকাতে গিয়ে দীপক হুডার হাতে ধরা পড়ে ফিরে যান চান্ডিলা। ততক্ষণে অবশ্য বাংলার লড়াই শেষ হয়ে গিয়েছে।
রাতে মনোজ তিওয়ারি হারের ব্যাখ্যা দিলেন, ‘‘পরিবেশটা কঠিন হয়ে যাওয়ায় এ রকম হল। দলের অনেকেই আগে সাদা বলে, ফ্লাড লাইটে এই স্তরের ক্রিকেট খেলেনি। সেই অনভিজ্ঞতাটাই সমস্যা হল।’’ এ ছাড়াও বঙ্গ অধিনায়কের অদ্ভুত যুক্তি, ‘‘ম্যাচ টিভিতে দেখানোয় বোধহয় দলের কেউ কেউ চাপে রয়েছে।’’ তাঁর এই ধারণায় প্রশ্ন উঠতে পারে এ বার আইপিএলে বাংলার কেউ সুযোগ পেলে তখন কী হবে? বোলাররা দিনটা ভাল শুরু করলেও পরের দিকে একসঙ্গে অনেক রান দিয়ে দেন। ‘‘এই বাড়তি ৩০ রানই হারের অন্যতম কারণ’’, বলছেন মনোজ। কণিষ্ক, ডিন্ডা, মুকেশ, সায়নদের দাপটে ৫২ রানের মধ্যে চার উইকেট পড়ে যায়। মনোজ হাত ঘুরিয়ে জোড়া উইকেট তুলে নেন। কিন্তু শেষ চার ওভারে তাঁরা ৪০ রান দিয়েই ম্যাচ হাতছাড়া করে ফেলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy