২০১৪ সালে ইডেন গার্ডেনসের দেড়শ বছর পূর্তি উপলক্ষে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের আমন্ত্রণ রক্ষা করেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। আমন্ত্রনমূলক টুর্নামেন্টে দল পাঠিয়েছিল তারা। কিন্তু ইডেনের দেড়শ তম বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে সিএবি আয়োজিত টূর্নামেন্টের ম্যাচগুলোর একটিও হয়নি এখানে! কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে ম্যাচগুলো খেলেছে নাসির, মুমিনুলরা। তা নিয়ে কম আক্ষেপ করেনি বিসিবি একাদশ। দেশের মাটিতে গত দেড় দশকে বাংলাদেশের সঙ্গে একটিও দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলেনি ভারত। সেই আক্ষেপ ঘুচে যেতে আর আট মাস অপেক্ষা করতে হবে বাংলাদেশকে। নতুন বছরের অগস্টে ভারত সফরে একমাত্র টেস্ট ম্যাচটি খেলা হবে ইডেনে। এ বিষয়ে বিসিবিকে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে বিসিসিআই। ভারতের মটিতে প্রথম টেস্ট, তা-ও আবার ওপার বাংলার দর্শকদের সামনে। সেই ম্যাচে ভাল কিছু করে দেখাতে সাকিব, তামিম, মুশফিকুরর মুখিয়ে আছে। টি-২০ বিশ্বকাপে ধর্মশালার পরীক্ষায় পাস করে গ্রুপ রাউন্ডের বাধা টপকালেই সুপার টেন এ আগামী ১৬ মার্চ নিজেদের প্রথম ম্যাচটি খেলার সুযোগ পাবে স্বপ্নের ভেন্যু ইডেন গার্ডেন্সে। সেই ম্যাচে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নামবে মাশরাফিরা। সুপার টেনের স্বপ্ন অবশ্য এখন থেকেই দেখতে শুরু করেছে বাংলাদেশ। জগমোহন ডালমিয়ার আমলেই সিএবি-বিসিবি’র বয়স ভিত্তিক ক্রিকেটে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি। ১৯৮৪ সাল থেকে এখনও ওই চুক্তিতে বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের তরুণ ক্রিকেটাররা করছে সফর বিনিময়। কিন্তু ১৯৯০ সাল থেকে গত ১৫ বছরে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল মাত্র ৮টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছে ভারতে, আর সেখানে ইডেনে তারা খেলার সুযোগ পেয়েছে মাত্র একটি ম্যাচে। ১৯৯০ সালের ৩১ ডিসেম্বরে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে এশিয়া কাপের সেই ম্যাচটির ৩৫ তম বর্ষপূর্তি আজ। গত ২৫ বছর ধরে বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের হাতছানি দিচ্ছে ইডেন। ইডেনে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচে বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার কাছে ৭১ রানে হেরেও বাহবা পেয়েছিল। ম্যাচ হেরে গেলেও আতাহার আলীর ৯৫ বলে ৭৮ রানের ইনিংসে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কারও বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম।
একই ভাষাভাষী সমর্থকদের সামনে ২৫ বছর ১০৬ দিন পর আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগের সামনে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। আর তা নস্টালজিয়া ফিরিয়ে আনছে আতাহার আলীকে। তাঁর মতে, “ক্রিকেটার হিসেবে সবার স্বপ্ন থাকে লর্ডস, মেলবোর্ন এবং ইডেন গার্ডেন্সে খেলার। বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম ম্যান অব দ্য ম্যাচ আমি এবং তা ইডেন গার্ডেন্সে বাংলাদেশের প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচে। এখনও আমার চোখের সামনে ভেসে ওঠে সেই স্মৃতি। বিশাল স্টেডিয়াম, প্রচুর দর্শক, দলকে সবার সমর্থন, হেরেও পেয়েছি সবার হাততালি। এটা কি ভোলা যায়? এখনও কলকাতায় গেলে, ওই ইনিংসের কথা মনে পড়ে।” বাংলাদেশের এই প্রজন্মের ক্রিকেটারদের মধ্যে কলকাতা নাইট রাইডার্সের সদস্য বলে ইডেন সাকিবের খুব পরিচিত। বাংলাদেশের এই প্রজন্মের অন্য কারও এই অভিজ্ঞতা নেই এই ভেন্যুতে খেলার। তবে টি-২০ বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডের বাধা টপকে সুপার টেনে উঠে ইডেনে খেলার স্বপ্ন পূরন করবে বাংলাদেশ দল, এমটাই আশা করছেন আতাহার আলী। তাঁর মতে, “২০১৫ সালে বাংলাদেশ সত্যিই ইয়ার অব দ্য টাইগার্স। তাই ফর্মের ধারাবাহিকতা রেখে ইডেনে বাংলাদেশকে দেখা যাবে, এমনটাই আশা করছি।” টি-২০ বিশ্বকাপের সুপার টেনে উঠলে এই পর্বে চারটি ম্যাচের দু’টি বাংলাদেশ খেলবে ইডেনে। ১৬ মার্চ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে, ২৬ মার্চ নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে। ৬৬ হাজার আসন বিশিস্ট ইডেন গার্ডেনসে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলার সুযোগ পেলে সেই ম্যাচে দর্শক সমর্থন পুরোটাই পাবে বাংলাদেশ, এ ধারণা বদ্ধমূল আতাহার আলীর। তিনি বলেন, “যতটা জানি, সাকিব, মাশরাফি, তামিম, মুশফিকুরদের যথেস্ট ভালবাসে কলকাতার ক্রিকেট ফ্যানরা। যেহেতু দীর্ঘ ২৫ বছর পর বাংলাদেশ জাতীয় দল খেলবে ওখানে, তাই একই ভাষাভাষী ক্রিকেট ফ্যানদের সমর্থন তাই পুরোটাই পাবে বাংলাদেশ দল। প্রতিপক্ষ পাকিস্তান বলেই ইডেন গার্ডেনে খেলতে নেমে নিজেদের ভেন্যুই মনে করবে বাংলাদেশ।” সুপার টেন এ উঠলে মহান স্বাধীনতা দিবসে (২৬ মার্চ) বাংলাদেশ দল অবতীর্ণ হবে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। ৪৫তম স্বাধীনতা দিবসটি উদ্যাপনেও ইডেন গার্ডেনসে উজ্জীবিত বাংলাদেশকে দেখবে বিশ্ব, এ স্বপ্নও যে দেখতে শুরু করেছেন আতাহার আলী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy