প্রতীকী ছবি।
পিচে ঘাস দেখে এক শিবিরের চোখ কপালে। স্পিন-নির্ভর উইকেটের আশায় কল্যাণীতে খেলতে এসে তারা উপলব্ধি করে, তৃতীয় দিনের আগে এই পিচ থেকে কেউ সাহায্য পাবে না। অন্য শিবিরের অভিযোগ, পিচে যথেষ্ট পরিমাণে জল দেওয়া হয়নি। আজ, শনিবার বাংলা বনাম হায়দরাবাদ ম্যাচের আগের দিন স্পিনার-সহায়ক পিচ তৈরির জন্য নানা চেষ্টা দেখা গেল বেঙ্গল ক্রিকেট অ্যাকাডেমির মাঠে।
বোর্ডের পিচ প্রস্তুতকারক আশিস ভৌমিক তখন মাঠে ছিলেন না। মাঠকর্মীদের নির্দেশ দেওয়া ছিল পিচের ঘাস ছেঁটে ফেলার। কিন্তু ঘাস তোলার পদ্ধতি নজর কাড়ার মতো। শক্ত ঝাঁটা দিয়ে পিচের উপরের ঘাস তোলার চেষ্টা করা হয়। নিয়ে আসা হয় লোহার তারের ব্রাশ। তা দিয়েও পিচের প্রাণ কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে গেলেন মাঠকর্মীরা। চলতি মাসেই অসমের বর্ষাপাড়া স্টেডিয়ামে ভারত-শ্রীলঙ্কা ম্যাচের আগে পিচের জল শুকোতে গিয়ে হেয়ারড্রায়ার, ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ব্যবহার করা হয়েছিল। তার কিছুটা মিল দেখা গেল কল্যাণীতে পিচের ঘাস তোলার প্রচেষ্টায়।
তবুও কোচ অরুণ লাল নিশ্চিত নন, এই ম্যাচে ফল হবে কি না। বাংলার অনুশীলন শেষে কোচ বলেন, ‘‘রঞ্জি ট্রফির প্রত্যেক ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ। ফল না হলে কোনও লাভ নেই। এই পিচে চার দিনের পরেও কোনও ফল পাওয়া যাবে কি না তা নিয়ে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।’’ তিনি যোগ করেন, ‘‘একটি দল ৫০০ রান করল। অন্য দলটি ৪০০ করল। তা হলে কি কোনও লাভ হবে?’’ যদিও বাংলার স্পিন উপদেষ্টা উৎপল চট্টোপাধ্যায় দলের স্পিনারদের জানিয়েছেন, উইকেটে বল এক বার ঘুরতে শুরু করলে স্পিনাররা অনেক বেশি বাউন্স পাবেন। তাই হতাশার কোনও কারণ নেই।
হায়দরাবাদ শিবিরও প্রসন্ন নয় পিচ নিয়ে। তারা চেয়েছিল গতিময় পিচ। দলের মূল পেসার মহম্মদ সিরাজ ভারতীয় ‘এ’ দলের প্রতিনিধিত্ব করতে গিয়েছেন নিউজ়িল্যান্ডে। রয়েছেন সি ভি মিলিন্দের মতো বাঁ-হাতি পেসার ও রবি তেজার মতো অভিজ্ঞ বোলার। কিন্তু খেলতে হবে একেবারে ব্যাটসম্যানদের স্বর্গে। বাংলা যদিও তিন স্পিনার নিয়েই নামছে। অফস্পিনার অর্ণব নন্দী। সঙ্গে দুই বাঁ-হাতি স্পিনার শাহবাজ আহমেদ ও শ্রেয়ান চক্রবর্তীর উপরে ভরসা রাখা হচ্ছে। পেস বিভাগ সামলাবেন আকাশ দীপ সিংহ ও মুকেশ কুমার। পিচে ঘাস দেখেও কেন তিন স্পিনারে খেলার পরিকল্পনা? অরুণের ব্যাখ্যা, ‘‘প্রথম দিনের শুরুতে পেসাররা এক ঘণ্টা হয়তো সাহায্য পেতে পারে। তার পর থেকে ব্যাটিংয়ের আদর্শ হয়ে যাবে এই পিচ। তৃতীয় দিন থেকে বল ঘোরার সম্ভাবনা রয়েছে। সেটা মাথায় রেখেই তিন স্পিনার নিয়ে নামার পরিকল্পনায় রয়েছি।’’
গত ম্যাচের দলই কমবেশি রাখা হয়েছে। চোট পেয়ে ছিটকে যাওয়া ঋত্বিক রায়চৌধুরীর জায়গায় অভিষেক হতে চলেছে কাজি জুনেইদ সৈফির। ২২ বছর বয়সি বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান অনূর্ধ্ব-২৩ দলকে ভারতসেরা করেছেন অধিনায়ক হিসেবে। ব্যাটিংয়েও তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। এ বার বাংলার হয়ে তিন নম্বরে তাঁর নতুন পরীক্ষা। চার নম্বরে নামানো হবে মনোজ তিওয়ারিকে। তার পরে অনুষ্টুপ মজুমদার, শ্রীবৎস গোস্বামী, শাহবাজ, অর্ণবরা একে একে ব্যাটিং অর্ডার পাবেন।
তুলনামূলক সহজ বিপক্ষের বিরুদ্ধে রবিবার থেকে লড়াই অভিমন্যু ঈশ্বরনদের। পাঁচ ম্যাচে হায়দরাবাদের পয়েন্ট ছয়। গ্রুপ ‘এ’ ও ‘বি’ মিলিয়ে ১৬ নম্বরে তারা। ১২ পয়েন্ট নিয়ে বাংলা দশ নম্বরে। শেষ চার ম্যাচের দু’টি জিতলে কোয়ার্টার ফাইনালের আশা অনেকটা পরিষ্কার হয়ে যাবে বাংলার কাছে। তাই কল্যাণী থেকে যে কোনও মূল্যে ছয় পয়েন্ট নিয়ে ফিরতে প্রস্তুত অধিনায়ক অভিমন্যু ঈশ্বরন। বলছিলেন, ‘‘যে কোনও পিচেই ছয় পয়েন্ট পাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। শুরু থেকে আগ্রাসী ক্রিকেট খেলার চেষ্টা করব।’’
টস জিতলে যদিও শুরুতে ব্যাট করারই পক্ষে বাংলার কোচ। বলে দিলেন, ‘‘শুরুতে ব্যাট করে বড় রান করে ওদের ইনিংসে হারানোর পরিকল্পনাতেই রয়েছি। বাকিটা ক্রিকেটারদের উপরে নির্ভর করবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy