ধর্ম সঙ্কটে পড়েছেন দলজিত সিংহ।
রবিবার ঘরের মাঠে বিশ্বকাপের ‘ডু অর ডাই’ ম্যাচে নাকি ‘টেলরমেড’ উইকেট চেয়েছে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট। যে উইকেটে তাদের স্পিনাররা বনবন করে বল ঘোরাতে পারবেন।
অন্য দিকে আইসিসি-র কড়া নজরে এখন চলতি বিশ্বকাপের সব উইকেট। নাগপুরে ভারত-নিউজিল্যান্ড ম্যাচের পর যেমন পিচ কিউরেটরকে সরিয়ে অন্য একজনকে আনা হয়েছে, রবিবার মোহালির উইকেট অদ্ভূত আচরণ করলে বোর্ডের পিচ কমিটির প্রধান দলজিতের আশঙ্কা, তাঁর ভাগ্যেও এমনই অপমান জুটতে পারে।
এখন কী করবেন তিনি? দেশ আগে, না নিজের সম্মান? সেটাই বোধহয় ঠিক করতে পারছেন না।
শনিবার মোহালির মাঠে প্র্যাকটিসে এসে উইকেট দেখে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে নাকি দলজিতকে বলা হয়, এত ঘাস রাখলে চলবে না। চেঁছে ফেলতে হবে। তাঁর এই অভিজ্ঞতা আগেও হয়েছে। পাঁচ মাস আগে এখানেই ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্টের আগেও এমনই ‘আবদার’ আসে তাঁর কাছে। চাপের মুখে ঘাস চেঁছে ঘূর্ণি উইকেট বানিয়েও দেন তিনি। যার ফলে তিন দিনে টেস্ট জিতে নেন বিরাট কোহালিরা।
সে দিন হাসিম আমলার দলকে যে ব্যর্থতা হজম করতে হয়েছিল, সেই জ্বালা অস্ট্রেলিয়া সহ্য করবে কি? এখন থেকেই অস্ট্রেলিয়ার মিডিয়া এই ঘটনার আঁচ পেয়ে ছুরিতে শান দিতে শুরু করেছে। আশঙ্কা দেখা দিয়েছে স্টিভ স্মিথদের শিবিরেও। প্রশ্ন উঠছে, দ্বিপাক্ষিক সিরিজে ‘টেলরমেড’ উইকেট বানিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারালেও আইসিসি-র টুর্নামেন্টে সেটা কী করে করবে ভারত?
অজি মিডিয়ার এক প্রতিনিধির কাছে এ দিন জানা গেল, শুক্রবার সন্ধ্যায় পাকিস্তানকে হারানোর পর অজিদের কোচ ড্যারেন লেম্যান নাকি মাঠের মাঝখানে গিয়ে সেই বাইশ গজ অঞ্চলটা দেখেন, যেখানে রবিবার ম্যাচ হওয়ার কথা। এবং সেই উইকেট দেখে নাকি খুব একটা খুশি হননি অজি কোচ। কারণ শুক্রবারের সেই ম্যাচের উইকেটে যতটা ঘাস ছিল, এই উইকেটে ঘাস তার চেয়ে অনেক কম।
শনিবার ভারতীয় দলের ক্যাপ্টেন ধোনি ও টিম ডিরেক্টর রবি শাস্ত্রী দলজিতের সঙ্গে অনেকক্ষণ আলাদা আলাদা কথা বলার পর সন্ধ্যায় দেখা গেল মেশিন দিয়ে উইকেটের ঘাস চাঁছা হচ্ছে। আরও একটু পরে সন্ধ্যার আবছা আলোয় দেখা গেল, উইকেটে হাল্কা জলও স্প্রে করা হচ্ছে। রবিবার সকালে আরও ঘাস তোলা হবে কি না, তা অবশ্য জানা নেই। তবে এই উইকেটেই যেহেতু দুপুরে ভারত ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মেয়েদের মধ্যে ম্যাচ হবে, তাই সেই ম্যাচেই বোঝা যাবে উইকেট কেমন দাঁড়াবে।
নিজে এই ব্যাপারে কথা বলতে চাইছেন না বোর্ডের পিচ কমিটির চেয়ারম্যান দলজিত। হয়তো বিতর্কের ভয়ে। কিন্তু তাঁর অধীনে থাকা মাঠকর্মীদের কেউ কেউ বলছেন, মোহালির কিউরেটর নাকি টিম ম্যানেজমেন্টকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন, ফের নাগপুর কাণ্ড হয়ে যেতে পারে এখানেও। কারণ, অস্ট্রেলিয়ার লেগস্পিনার অ্যাডাম জাম্পা ভাল ফর্মে রয়েছেন। আর পিচ ন্যাড়া করে দিলে আন্ডার প্রিপেয়ার্ড উইকেট হয়ে যেতে পারে। যা দেখে অস্ট্রেলিয়ার মিডিয়া বা আইসিসি কেউই ছেড়ে কথা বলবে না। তাতে কিছুটা হলেও বরফ গলেছে হয়তো। কিন্তু তাও নাকি যথাসম্ভব ঘাস ছাঁটতে বলে দেওয়া হয়েছে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে।
অস্ট্রেলিয়া শিবিরে উইকেট নিয়ে আশঙ্কা থাকলেও আগের ম্যাচের সফল বোলার জেমস ফকনার এই আবহে কোনও বাউন্সার দিতে চান না। উইকেট নিয়ে তিনি বলে দিলেন, ‘‘কেমন উইকেট পাব জানি না। যাই পাই, তাতে দুই দলকেই খেলতে হবে। পেস সহায়ক হোক বা স্পিন সহায়ক, আমাদের উইকেটের সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে নিতে হবে।’’
কিন্তু চলতি বিশ্বকাপে যখন সব ভেনুতে একই চরিত্রের উইকেট বানানোর নির্দেশ দিয়েছিল আইসিসি, সেখানে বিভিন্ন ধরণের উইকেট কী করে পাচ্ছেন তাঁরা, সেই প্রশ্ন তুলেছেন প্রোটিয়াদের অধিনায়ক ফাফ দু’প্লেসি। শুক্রবার ক্যারিবিয়ানদের কাছে হারের পর তিনি বলেন, ‘‘আমি এ রকম আশা করিনি। আইপিএলেও এর চেয়ে ভাল উইকেট পেয়েছি। প্রায় সব উইকেটই রান ওঠার মতো হয়। এখানে তো দেখছি অন্য রকম।’’
দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়কের এই মন্তব্যের পর আইসিসি ফের নড়েচড়ে বসবে কি না, সেটাই দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy