প্রস্তুতি: নতুন বছরের প্রথম ম্যাচ গুয়াহাটিতে। পন্থ ও তরুণ প্রজন্ম-সহ পুরনো সংকল্প নিয়ে হাজির কোহালি। পিটিআই
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বাড়তে থাকা ক্ষোভকে কেন্দ্র করে আতঙ্কে অসম ক্রিকেট সংস্থা। নতুন বছরের প্রথম ম্যাচে তাই পোস্টার ছাড়াই মাঠে প্রবেশ করতে হবে সমর্থকদের। প্রিয় তারকার উদ্দেশে কোনও বার্তা লিখেও মাঠে প্রবেশ নিষেধ। এখানেই শেষ নয়। স্কেচ পেন, রং, তুলি, মার্কার অথবা পেন্সিলও নিষিদ্ধ। মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ ও গাড়ির চাবি অবশ্য সঙ্গে রাখতে পারবেন ম্যাচ দেখতে আসা দর্শকেরা।
কিন্তু কেন এই সিদ্ধান্ত? অসম ক্রিকেট সংস্থার সচিব দেবজিৎ শইকিয়া যদিও বিষয়টি এড়িয়ে গেলেন। শুক্রবার বর্ষাপাড়া স্টেডিয়ামে তিনি বলছিলেন, ‘‘ভারতীয় বোর্ডের নির্দেশ মেনেই এগোচ্ছি। এত দিন ভারতীয় বোর্ডের সঙ্গে যে ঠান্ডা পানীয় প্রস্তুতকারক সংস্থার চুক্তি ছিল, সাত দিন আগেই তা শেষ হয়ে গিয়েছে। সেই সংস্থার নাম ও লোগো উল্লেখ করা কোনও চার, ছয়ের ব্যানার নিয়ে সমর্থকেরা প্রবেশ করলে অপমান হবে বোর্ডের। পোস্টার নিয়ে মাঠে ঢুকতে না দেওয়ার সেটাই কারণ।’’ তবে আন্দাজ করা যায়, রাজনৈতিক পোস্টার নিয়ে মাঠে প্রবেশ করার সম্ভাবনা কমাতেই হয়তো এই পদক্ষেপ।
সচিব আরও বলেন, ‘‘সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদ নিয়ে ভয় নেই। আমাদের সমর্থকেরা শান্তিতে ম্যাচ দেখতে চান। আমি নিশ্চিত, ক্রিকেটের বাইরে কোনও বার্তা পৌঁছনোর উদ্দেশ্য নিয়ে তাঁরা মাঠে আসবেন না।’’
গত মাসে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদে উত্তাল ছিল গুয়াহাটি। সরকারি হিসাব অনুযায়ী কার্ফু ভেঙে প্রতিবাদ করতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয়েছিল চার জনের। মাথায় লাঠির আঘাতে মারা গিয়েছিলেন এক জন। ১১ ডিসেম্বর সন্ধে ৭টা থেকে ২০ ডিসেম্বর সকাল ৯টা পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছিল ইন্টারনেট পরিষেবা। প্রতিবাদ এখন শান্তিপূর্ণ হলেও আগুন পুরোপুরি নেভেনি। বিমানবন্দর থেকে হোটেল আসার পথে শহরের মধ্য দিয়ে যেতে রাজি হননি ক্যাব ড্রাইভার। বাধ্য হয়ে হাইওয়ের পথ বেছে নিতে হল।
ম্যাচের দু’দিন আগে থেকেই বর্ষাপাড়া স্টেডিয়াম ঘিরে রেখেছে পুলিশ ও র্যাফ। যদিও গুয়াহাটির পুলিশ কমিশনার মুন্নাপ্রসাদ গুপ্ত দাবি করলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজন করতে যে ধরনের নিরাপত্তা প্রয়োজন, আমরাও সে রকমই করেছি।’’ কিন্তু র্যাফ নামানোর কারণ কী? তার সদুত্তর দিতে পারলেন না তিনি। বললেন, ‘‘সব ম্যাচেই র্যাফ থাকে। এ আর নতুন কী?’’ কিন্তু নিরাপত্তার এতটাই কড়াকড়ি যে, স্টেডিয়াম সংলগ্ন মাঠে ভারতীয় দলের নেট প্র্যাক্টিস দেখতেও অনুমতি দেওয়া হল না সাংবাদিকদের।
ম্যাচের দিন ‘র্যাফ’ নামানো হলেও, তার দু’দিন আগে থেকে এই ব্যবস্থা নিতে সচরাচর দেখা যায় না। শহরে চলতে থাকা প্রতিবাদের আশঙ্কাতেই কি এই ব্যবস্থা? পুলিশ কমিশনারের উত্তর, ‘‘নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কোনও কারণ নেই। যে পরিমাণ নিরাপত্তারক্ষী রয়েছে, তাতে ম্যাচ আয়োজনে সমস্যা হবে না।’’
গত মাসেই এই ম্যাচের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। তখন মুখ খুলতে চায়নি অসম ক্রিকেট সংস্থা। জানানো হয়েছিল, এত দ্রুত এ বিষয়ে মন্তব্য করা হবে না। অথচ এ দিন অসম ক্রিকেট সংস্থার সচিব বলে দিলেন, ‘‘শুরু থেকেই ম্যাচ আয়োজন করার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। এক বারও মনে হয়নি অসম্ভব।’’
আরও পড়ুন-লাবুশানে ছাপিয়ে যাচ্ছেন স্মিথকেও
অস্বস্তির মধ্যেও টিকিটের চাহিদা তুঙ্গে। ৩৯,৪০০ দর্শকাসনের বর্ষাপাড়া ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ২৭ হাজার টিকিট ইতিমধ্যেই বিক্রি হয়ে গিয়েছে। ভারতীয় বোর্ডের গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য খইরুল জামাল মজুমদার বলছিলেন, ‘‘পরিস্থিতি যা-ই হোক, প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে স্টেডিয়াম ভর্তি থাকবে।’’ কিন্তু সব চেয়ে বড় আশঙ্কা বৃষ্টি। রবিবার সারা দিন বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। এসিএ সচিব যদিও চিন্তিত নন। বলে দিলেন, ‘‘ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের দিনও বৃষ্টি হয়েছিল। বৃষ্টি থামার আধঘণ্টার মধ্যে ম্যাচ শুরু করে দিয়েছি। বালির স্তরের উপরে মাটি বসিয়ে তৈরি করা হয়েছে এই মাঠ। তাই কখনওই জল জমে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই।’’
পিচে যদিও হাল্কা ঘাসের আভা রয়েছে। ভারতীয় দলের মূল পেসার যশপ্রীত বুমরা যে ফিরে এসেছেন। তাঁর জন্য কিছুটা সুবিধা তো থাকবেই।
অসম ক্রিকেট সংস্থার মূল উদ্দেশ্য যদিও আইপিএলে ম্যাচ পাওয়া। এ বার রাজস্থান রয়্যালস তাদের তিনটি ম্যাচ গুয়াহাটিতে খেলতে চেয়েছে। তাই এসিএ সচিবের ঘোষণা, ‘‘ম্যাচটি সুষ্ঠু ভাবে আয়োজন করলে ভবিষ্যতে আইপিএলের আরও ম্যাচ পাওয়া যাবে। তাই এ ম্যাচের গুরুত্ব আমাদের কাছে অন্য রকম।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy