ভয়ঙ্কর ফিন। ১৩-৩-৪৫-৫।
স্টিভ স্মিথকে আউট করার দু’টো রাস্তা আছে। এক, ওকে রান আউট করো। আর না পারলে ওকে স্টিভ ফিনের মুখে ছেড়ে দাও!
অফিসের বস আমাকে বলেছে, স্কোর না দেখতে। সময় নষ্ট হবে বলে নয়। আসলে ওঁর শনিবারের এজবাস্টন টিকিট কাটা আছে!
লোকে বলে, অপমানের রং নাকি নীল হয়। মাইকেল ক্লার্কের মুখের রংটা এখন ঠিক কী? এজবাস্টন পিচ নাম ‘ডিনামাইটে’ অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংসও উড়ে যাওয়া। স্টিভ ফিনের হ্যাটট্রিকের সামনে দাঁড়িয়ে পড়া। লিড মোটে ২৩ রানের, হাতে পড়ে শুধু তিনটে— অস্ট্রেলিয়ার প্রতি কটাক্ষসূচক মন্তব্যগুলো সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে পরপর পোস্ট করে দেওয়া অবাকের তো কিছু নয়। কারণ এমন অপমানের মুখে খুব কমই পড়তে হয়েছে অস্ট্রেলিয়াকে। সাম্প্রতিক কালে। যেখানে দু’দিনেই ঠিক ম্যাচের ভবিতব্য। দু’দিনেই ঠিক যে তিন দিনেই ম্যাচটা শেষ হচ্ছে! মৃত্যুর কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে। সরকারি ডেথ সার্টিফিকেটটা পড়বে শুধু শুক্রবার।
লর্ডস টেস্ট জেতার পর কেউ কেউ ভেবেছিলেন, অস্ট্রেলিয়ার ঔদ্ধত্যে খোঁচা দিলে এমনই হয়। কিন্তু এজবাস্টন টেস্টের আটচল্লিশ ঘণ্টা বুঝিয়ে গেল স্টিভ-পন্টিংয়ের অস্ট্রেলিয়া আর মাইকেল ক্লার্কের অস্ট্রেলিয়ায় বিস্তর তফাত আছে। ইংল্যান্ড এজবাস্টন টেস্টে একটা কথা বুঝিয়ে গেল। বাউন্সি, গতিসম্পন্ন পিচে অস্ট্রেলিয়ারও খেলতে অসুবিধে হয়। যতই তাদের দেশে গেলে প্রতিপক্ষকে গাব্বায় ফেলে গতির কড়াইয়ে ভাজতে বসুক।
প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৩৬ রানে শেষ হয়ে যাওয়ার পর অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় ইনিংসে আপাতত ১৬৮-৭। ডেভিড ওয়ার্নার যখন দুরমুশ করার মেজাজ নিয়ে শুরুতে ইংরেজ বোলিংকে খুন করছিলেন, কারও কারও মনে হচ্ছিল আড়াইশোর টার্গেট যদি ইংল্যান্ডের সামনে ছুঁড়ে দিতে পারে অস্ট্রেলিয়া, ম্যাচ থাকবে। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই অস্ট্রেলিয়া ৯২-৫ হয়ে গেল! ইংল্যান্ডের স্কোর ছুঁয়ে ইনিংস হার আটকাতে ক্লার্কদের দরকার তখনও ৫৩। বলা বাহুল্য, আলোচনাটাও তার পর বদলে গেল। এ বার ধারাভাষ্যকারদের মধ্যে বলাবলই শুরু হল, বাকি তিনটে দিন কী করা হবে? গল্ফ খেলে কাটানো হবে? নাকি যাওয়া হবে কাছের ক্যাডবারি ওয়ার্ল্ড বা ন্যাশনাল সি লাইফ সেন্টারে!
আসলে গাঁজা চাষে ব্যবহৃত হট ল্যাম্প দিয়ে শুকনো করা এজবাস্টনের বাইশ গজ যে প্রায় তিন দিনের খেলাই শুষে নেবে, কেউ ভাবতে পারেনি। টেস্ট মানে যেখানে বোলিং, ব্যাটিং ও ফিল্ডিং-এর অসাধারণ প্রদর্শনী, সেখানে এই দু’দিনে দু’দলের পেসাররা শিকারের নেশায় মেতে উঠলেন। দু’দিনে ২৪টা উইকেট নিলেন মিচেল জনসন, জিমি অ্যান্ডারসনরা। যার মধ্যে এ দিনই পড়ল চোদ্দোটা। প্রথম দিন অস্ট্রেলিয়াকে ১৩৬-এ শেষ করে দিয়ে এ দিন জো রুট (৬৩), ইয়ান বেল (৫৩) ও মইন আলির (৫৯) তৎপরতায় ২৮১ তুলে ১৪৫-এর লিড নেয় ইংল্যান্ড। জনি বেয়ারস্টোকে ফিরিয়ে এ দিনই ৩০০ উইকেট শিকারিদের ক্লাবে নাম লেখান পঞ্চম অস্ট্রেলীয় জনসন। আর দিনভর অস্ট্রেলীয় ব্যাটিংয়ের দশা বোঝাতে স্টিভ ফিনের বোলিং ফিগারটাই যথেষ্ট। স্কোরকার্ড উল্টোনোর কোনও দরকার নেই।
১৩-৩-৪৫-৫!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy