এ ভাবেই কোভিড আক্রান্তদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন অরিন্দম। নিজস্ব চিত্র।
মাতৃ বিয়োগের শোকের মাঝেই সমাজের প্রতি দায়িত্ব পালন। মায়ের মৃত্যুর পর পড়শিদের নিয়ে কোভিডের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমে পড়লেন এটিকে মোহনবাগান গোলরক্ষক অরিন্দম ভট্টাচার্য। টালিগঞ্জের গলফ ক্লাব সংলগ্ন আটলান্টা ক্লাবের দূর্গা মন্ডপ অরিন্দম ও তাঁর বন্ধুদের সৌজন্যে এখন কোভিড সেফ হোম। গত ১০ মে করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হয়েছিলেন অরিন্দমের মা অন্তরা ভট্টাচার্য। বয়স হয়েছিল ৬২ বছর। সেই শোক এখনও কাটেনি। তবুও সাধারণ মানুষের সেবায় নেমে পড়েছেন সবুজ-মেরুনের শেষ প্রহরী।
করোনার বিরুদ্ধে কেন লড়াইয়ে নামলেন? অরিন্দম বলছেন, “শেষ পনেরোটা দিন আমার কাছে পনেরো বছরের সমান। মা চলে যাওয়ার পর কত রাত ঘুমোতে পারিনি। এখনও চোখের সামনে হাসপাতালের ভয়ঙ্কর পরিবেশ ও শ্মশানের স্তব্ধতা ভেসে ওঠে। মানসিক কষ্ট নিয়ে ঘরবন্দি থাকতেই পারতাম। কিন্তু প্রতি মুহূর্তে এই অগণিত মৃত্যু আমাকে যন্ত্রণা দেয়। এক বছরের মধ্যে বাবা ও মা চলে গেল। তাই এই অতিমারির মোকাবিলা করতে নামলাম।”
করোনা আক্রান্তদের জন্য কী ব্যবস্থা নিচ্ছেন সেটাও জানালেন অরিন্দম। বলছেন, “এখন ৯টি আসন থাকলেও সেটা ভবিষ্যতে বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এই মুহূর্তে আমাদের কাছে ২৬টি অক্সিজেন সিলিন্ডার রয়েছে। আরও অক্সিজেন সিলিন্ডার জোগাড় করার চেষ্টা চলছে। সবচেয়ে ভাল লাগার বিষয় হল বেশ কয়েকজন মানুষ ইতিমধ্যেই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এটাই তৃপ্তির। এছাড়া নিয়মিত ২০০ জন কোভিড আক্রান্ত পরিবারের কাছে আমরা রোজ খাবার পৌঁছে দিচ্ছি। আমাদের রাজ্যের যা অবস্থা তাতে এই পরিষেবা খুবই সামান্য। কিন্তু আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”
হাতে গোনা কয়েক জন বন্ধু নিয়ে এই সেফ হোম গড়লেও অরিন্দমের লক্ষ্য কিন্তু আরও বড়। তাই তো এই অতিমারির ঢেউকে পরোয়া না করে নিজেকে ভাসিয়ে দিয়েছেন। চাইছেন স্থানীয়দের সাহায্য। মাতৃ ঋণ শোধ করা যায় না। তবে ভাইরাসের বিরুদ্ধে এই লড়াইয়ে সব উজাড় করে অরিন্দম তাঁর মৃত্যুর শোক ভুলতে চাইছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy