Advertisement
২৯ নভেম্বর ২০২৪

বাকি পৃথিবী জেনে রাখো আমাদের ধর্মযুদ্ধ চলবে

ফিরোজ শাহ কোটলার একশো বাইশ বছরের অস্তিত্বে বিতর্ক, নাটক আর খেয়োখেয়ি একেবারে কাপে করে চা খাওয়ার মতোই স্বাভাবিক এবং স্বতসিদ্ধ। তা বলে শনিবার সকালে যা ঘটল, এই মাঠের রংবাহারি ইতিহাসেও অভূতপূর্ব। কথা ছিল লাঞ্চের পরপর দু’হাজার এগারো আর তিরাশির বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের মধ্যে যাঁরা দিল্লির ছেলে, তাঁদের বিশেষ সম্মান জানানো হবে। বিশেষ সংবর্ধনা দেওয়া হবে বিষেণ বেদী আর প্রয়াত টাইগার পটোডিকে। দেবেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। সেই মতো ক্রিকেটাররা যে যাঁর বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন। শর্মিলা অনেকটা চলে এসেছিলেন। বেদী তো কোটলা পৌঁছে যান। এর পর আচমকা তাঁদের খবর দেওয়া হয়, অনুষ্ঠান বাতিল। ভারতীয় বোর্ড মাঠের ভেতর এই অনুষ্ঠান করতে দিতে রাজি হচ্ছে না। দ্রুত সবাই ফিরে যান। সন্ধেবেলা অপমানিত বেদী মেহরওলির বাড়ি থেকে ফোনে কথা বললেন এবিপি-র সঙ্গে...ফিরোজ শাহ কোটলার একশো বাইশ বছরের অস্তিত্বে বিতর্ক, নাটক আর খেয়োখেয়ি একেবারে কাপে করে চা খাওয়ার মতোই স্বাভাবিক এবং স্বতসিদ্ধ। তা বলে শনিবার সকালে যা ঘটল, এই মাঠের রংবাহারি ইতিহাসেও অভূতপূর্ব।

গৌতম ভট্টাচার্য
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৩:৫২
Share: Save:

প্রশ্ন: আজকের ঘটনাটা একেবারেই আজব। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী একটা অনুষ্ঠানে যেতে চান। এতগুলো বরেণ্য ক্রিকেটার আসবে বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেছেন। শর্মিলা আসছেন। এই অবস্থায় শেষ মুহূর্তে কী করে বাতিল হতে পারে?

বেদী: আমার তো একই প্রশ্ন— তোমরা যদি অনুমতি না-ই দেবে, এত দেরি করে জানালে কেন? আমাকে তো তাও শুরুতে মিথ্যে কথা বলা হয়েছিল। আমায় বলা হয় মুখ্যমন্ত্রী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তাই অনুষ্ঠান বাতিল। আমি যেহেতু এই লোকগুলোকে এত বছর চিনি, সন্দেহ নিরসনের জন্য স্বয়ং কেজরীবালকে ফোন করি। উনি বললেন একদম ঠিক আছেন কিন্তু সমস্যা হল বোর্ড মাঠে ঢুকে অনুষ্ঠান করার অনুমতি দিচ্ছে না। তখনই বুঝি আসল ছবিটা কী!


সবিস্তারে দেখতে ক্লিক করুন...

প্র: সাধারণ ধারণা হল এটা ডিডিসিএ ঘিরে আপ বনাম বিজেপি যে লড়াই চলছে তারই প্রতিফলন। জেটলির নেতৃত্বে বিজেপি এই সংস্থায় কেজরীবালকে ঢুকতে দেবে না। তাই কৌশলে অনুমতিটা আটকে দিল।

বেদী: আমি ওই লোকটার নাম মুখে আনতে চাই না। কিন্তু সবাই জানে, আপনিও জানেন আসল রিং মাস্টারটি কে?

প্র: দিল্লি ক্রিকেটের ইতিহাসে আজকের দিনটাই কি করুণতম যেখানে রাজনৈতিক হানাহানির জন্য এত সব প্রাক্তন এবং শর্মিলা অসম্মানিত হলেন?

বেদী: না না এর চেয়েও করুণ দিন এই সংস্থা দেখেছে। আরও দেখবে।

প্র: অবাক লাগছে আপনি মাঠে এলেন অথচ খেলা না দেখে বাড়ি ফিরে গেলেন।

বেদী: কোটলায় আমি আসলে বেশিক্ষণ বসতে পারি না। দম বন্ধ হয়ে আসে। তা ছাড়া আজ আমি ওখানে বসে থাকলে উত্তেজনা বাড়ত।

প্র: বিচারপতি মুদগল বলছিলেন, ওঁর হাতে আদালত কোটলায় এই ম্যাচ আয়োজনের ভার দিলেও তিনি কিছু করতে পারেননি। মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে বলতে থাকেন আপনি বোর্ডকে টপকে সিদ্ধান্ত নিন। সংবর্ধনাটা করান। কিন্তু মুদগল রাজি হননি যেহেতু খেলা শুরু হয়ে গেলে মাঠ আইসিসি-র হাতে চলে যায়।

বেদী: মুদগলের কিছু করার নেই। কিন্তু আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি অনুমতি দেব না এটা বলার জন্য কাল রাত্তির অবধি ওয়েট করতে হল কেন?

প্র: অনেক পরিবারেই ঝগড়া থাকে। কিন্তু তারা অন্তত বিয়ের দিন বাইরের জগতের সামনে এক হয়। দিল্লি ক্রিকেট সংস্থা তো বিয়ের দিনেও এক নয়?

বেদী: কোন বিয়ে? কার বিয়ে? এ সব সভ্যতা কার কাছে আশা করব?

প্র: গোটা ঘটনা থেকে আপনার উপলব্ধি কী?

বেদী: আমার উপলব্ধি হল এই যে ইন্ডিয়ান ক্রিকেট নিয়ে এ দিক ও দিক বলতে ডাকে না! আজও আমার একটা বক্তৃতা আছে। সেখানে এর পর থেকে বলব মোটিভেশন বা গেম প্রিপারেশন এ সবে সময় নষ্ট না করে ভাইরা সাপখোপের ছোবল এড়িয়ে কী ভাবে ক্রিকেট মাঠে থাকবে তার ট্রেনিং নাও।

প্র: আপনাকে যতটা তিক্ত দেখাচ্ছে ততটা আগুনে মনে হচ্ছে না। অথচ বাইরে সবাই বলছে আজ ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট মিডিয়ার সামনে কোটলার মাথা হেঁট হয়ে গেল।

বেদী: সে তো হলই কিন্তু আমি কী করব? বদমায়েশিটা তো অন্য দিক থেকে হল। আমি কারও নাম করতে চাই না তবে এটুকু বলি আজকের পরেও আমাকে নিরুৎসাহ করা যাবে না। আমরা একে একে এই সংগঠনে কী কী আর্থিক দুর্নীতি হয়েছে সব পর্দা ফাঁক করে দেখাব। জাস্ট ওয়েট করুন ক’টা দিন।

প্র: তার মানে বিষেণ বেদীর যুদ্ধ চলবে?

বেদী: অফ কোর্স। বাকি পৃথিবী জানুক, আমাদের ধর্মযুদ্ধ আজকের ঘটনায় মোটেও থেমে যাবে না।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy