বিতর্ক: পেনাল্টি মারতে যাওয়ার আগে মানজ়ির সেই ইঙ্গিত।
আই লিগে চেন্নাই বনাম মিনার্ভা ম্যাচ সংক্রান্ত তদন্ত সঠিক পদ্ধতি মেনেই এগোচ্ছে বলে দাবি করলেন সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের ইন্টিগ্রিটি অফিসার জাভেদ সিরাজ। একই সঙ্গে তিনি জানিয়ে দিলেন, দ্রুতই চেন্নাই বনাম মিনার্ভা ম্যাচে বিতর্কিত পেনাল্টি নেওয়া চেন্নাইয়ের স্পেনীয় ফুটবলার পেদ্রো মানজ়িকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকবেন তিনি। সম্ভবত সুপার কাপ চলার সময়েই তাঁকে তলব করবেন তিনি।
যদিও এখনও পর্যন্ত ফেডারেশনের তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে সন্তুষ্ট নয় ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের একাংশ। অন্যতম শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার এ দিন প্রশ্ন তোলেন, ফেডারেশনের অভ্যন্তরীণ ইন্টিগ্রিটি অফিসারকে দিয়ে তদন্ত করানোর পদ্ধতি নিয়ে। তাঁর কথায়, ‘‘সে দিন ম্যাচে ওই ইন্টিগ্রিটি অফিসার হাজির ছিলেন অস্বচ্ছতা হচ্ছে কি না তা দেখার জন্য। কিন্তু তিনি কিছুই পাননি। স্বচ্ছতা ছিল না বলে ই-মেল তো করেন ম্যাচ কমিশনার। তার পরে ফেডারেশন সেই অফিসারকেই তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছে। এর যৌক্তিকতা কোথায়?’’ যোগ করছেন, ‘‘দ্রুতই তদন্তের ভার কোনও সরকারি এজেন্সিকে দেওয়া হোক। দীর্ঘদিন ধরে অবিচারের শিকার হয়েছে ক্লাব। আমাদের সদস্য, সমর্থকরা এ বারের আই লিগে অস্বচ্ছতা নিয়ে যে প্রশ্ন তুলেছেন, তা ঠিক বলেই মনে করি। ক্লাবে বিনিয়োগকারী সংস্থার আইনি শাখার মত জানার অপেক্ষায় রয়েছি। তার পরেই পদক্ষেপ করবে ক্লাব।’’
আই লিগের শেষ ম্যাচে চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে মিনার্ভার সততা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ফেডারেশনকে চিঠি দিয়েছিলেন সেই ম্যাচের কমিশনার বালসুব্রহ্মণ্যম। যার ভিত্তিতে ফেডারেশনের ইন্টিগ্রিটি অফিসার জাভেদ সিরাজকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই তদন্ত প্রক্রিয়ার অগ্রগতি কী? বা নতুন কোনও তথ্য মিলেছে কি না তা নিয়ে ফেডারেশনের শীর্ষ কর্তাদের তরফে কোনও বক্তব্য গত বাহাত্তর ঘণ্টায় পাওয়া যায়নি। এ দিনও এআইএফএফ সচিব কুশল দাসকে ফোন করা হলে তাঁর ফোন বেজেই গিয়েছে। এসএমএসেও সাড়া দেননি তিনি। তিনি যদিও উল্টে প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিয়েছেন ম্যাচ কমিশনার এবং রেফারিদের নির্ণায়ককে। ফেডারেশন এখন পাল্টা প্রশ্ন তোলার চেষ্টা করছে যে, রেফারি নির্ণায়ক কেন ম্যাচ সঠিক ভাবে খেলা হয়েছে কি না, তা নিয়ে রিপোর্ট জমা দেবেন? এটা কি তাঁর কাজ? ওয়াকিবহাল মহল কিন্তু বলছে, রেফারি নির্ণায়ক অবশ্যই রিপোর্ট জমা দিতে পারেন। সেই ম্যাচের রেফারি এমন গুরুতর বিষয় নিয়ে রিপোর্ট দিয়েছেন কি না, সেই প্রশ্নও তুলতে পারেন তিনি।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
ফেডারেশনের তদন্তকারী অফিসার জাভেদ সিরাজ অবশ্য এ দিন দাবি করেছেন, তদন্ত ঠিক পথেই এগোচ্ছে। ফোনে তিনি বললেন, ‘‘তদন্তের অনেক ধাপ থাকে। আমরা ধাপে ধাপে এগোচ্ছি। আপাতত জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। ম্যাচ কমিশনারের সঙ্গেও কথা বলেছি। তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ হতে সময় লাগবে। কাউকে সুবিধা দেওয়া হবে না বা ছেড়ে দেওয়া হবে না। তদন্ত ঠিক পথেই এগোচ্ছে।’’
মিনার্ভার সততা নিয়ে প্রশ্ন তোলা ম্যাচ কমিশনারকে প্রশ্নের মুখে ফেলা হচ্ছে। রেফারিদের নির্ণায়কের রিপোর্ট নিয়ে জেরা করা হচ্ছে। অথচ কমিশনারের চিঠিতে প্রশ্নের মুখে থাকা মিনার্ভার মালিককে তলব করা হচ্ছে না কেন? প্রশ্ন করা হলে ফেডারেশনের এই তদন্তকারী বলেন, ‘‘তার আগে সংশ্লিষ্ট দুই ফুটবলার চেন্নাই সিটি এফসি-র পেদ্রো মানজ়ি এবং মিনার্ভা গোলকিপার নিধিনলালের সঙ্গে কথা বলতে হবে। এই তদন্তে ওদের বক্তব্য গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়াও সে দিন চেন্নাই সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে খেলা মিনার্ভার বেশ কিছু ফুটবলারের সঙ্গে কথা বলতে হবে।’’ সেই জিজ্ঞাসাবাদ কবে হবে, তা জানতে চাইলে জাভেদ বলেন, ‘‘ফুটবলারদের অনেকেই এখন দেশের বাইরে রয়েছেন। যার মধ্যে অন্যতম হলেন পেদ্রো মানজ়ি। সুপার কাপের সময় এই ফুটবলারদের সঙ্গে কথা হবে বলে মনে হচ্ছে। ওদের সঙ্গে কথা হওয়ার পরেই মিনার্ভা কর্তা রঞ্জিত বাজাজকে ডাকব।’’
এই পরিস্থিতিতে ইস্টবেঙ্গলের পদক্ষেপ কী? ক্লাবের সিইও বলছেন, ‘‘আইনজীবী বিভাগের কাছে সমস্ত ফুটেজ, তথ্য পাঠানো হয়েছে। তাঁদের সবুজ সঙ্কেত মিললেই এ ব্যাপারে পদক্ষেপ করবে ক্লাব।’’ যদিও এত কাল ধরে ক্লাব পরিচালনার দায়িত্বে থাকা কর্তাদের অংশ হেস্তনেস্ত করার ব্যাপারে অনেক বেশি মরিয়া। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘ক্লাব সমর্থকরা বিচার চান। নিরপেক্ষ তদন্ত হোক সরকারি এজেন্সি দিয়ে। সত্য বেরিয়ে আসুক।’’
উত্তর দেওয়ার দায় ফেডারেশনের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy