Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪

৩৩ বছরের অভিশাপকে ক্রুশবিদ্ধ করলেন জেসাস

তেত্রিশটা বছর। ব্রাজিল ফুটবলের তেত্রিশটা বছর লেগে গেল ইকুয়েডর-অভিশাপ কাটাতে। গত তেত্রিশ বছরে কম কিছু ঘটেনি ব্রাজিল ফুটবলে। তেত্রিশ বছরে ব্রাজিল দু’বার বিশ্বকাপ জিতেছে। তেত্রিশ বছরে ব্রাজিল বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে জার্মানির কাছে সাত গোলের চরম লজ্জায় নিমজ্জিত হয়েছে। কিন্তু ইকুয়েডরে ইকুয়েডর— ফলাফল বরাবর অনড় থেকে গিয়েছে যেন ব্রাজিলের জন্য।

নেইমারের আদরে। -এএফপি

নেইমারের আদরে। -এএফপি

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৪:১৭
Share: Save:

ব্রাজিল-৩: ইকুয়েডর-০
(নেইমার-পেনাল্টি, জেসাস-২)

১৯৮৩।

২০১৬।

তেত্রিশটা বছর। ব্রাজিল ফুটবলের তেত্রিশটা বছর লেগে গেল ইকুয়েডর-অভিশাপ কাটাতে।

গত তেত্রিশ বছরে কম কিছু ঘটেনি ব্রাজিল ফুটবলে। তেত্রিশ বছরে ব্রাজিল দু’বার বিশ্বকাপ জিতেছে। তেত্রিশ বছরে ব্রাজিল বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে জার্মানির কাছে সাত গোলের চরম লজ্জায় নিমজ্জিত হয়েছে। কিন্তু ইকুয়েডরে ইকুয়েডর— ফলাফল বরাবর অনড় থেকে গিয়েছে যেন ব্রাজিলের জন্য। বার্তা থেকে গিয়েছে অবিচল।

ব্রাজিল, তুমি ইকুয়েডরে খেলতে যেতে পারো। কিন্তু তুমি জিতে ফিরবে না!

গ্যাব্রিয়েল জেসাসের আনন্দ হওয়াটাই স্বাভাবিক। সাত গোলের অন্ধকারের পর ব্রাজিল ফুটবলে নেইমার ছাড়া যদি আলো হিসেবে কেউ আবির্ভূত হয়ে থাকেন, তা হলে এই বছর উনিশের ফুটবলার। ম্যাঞ্চেস্টার সিটি যাঁকে সাতাশ মিলিয়ন পাউন্ড দিয়ে তুলে নিয়েছে। এ বছরের শেষাশেষি চলেও যাবেন। বৃহস্পতিবার মাঝরাতে ইকুয়েডরের বিরুদ্ধে কাপ-যোগ্যতা অর্জন ম্যাচ শেষে জেসাস আবেগাপ্লুত ভাবে বলে ফেলেছেন, ‘‘এর চেয়ে ভাল আর কী আমার জন্য হতে পারত! এত আনন্দ হচ্ছে যে, বলে বোঝাতে পারব না।’’

পারবেনও বা কী করে? এক নয়, একসঙ্গে কিনা দু’টো গোল! তা-ও ইকুয়েডরে, ইকুয়েডরের বিরুদ্ধে, যেখানে ব্রাজিল গত তেত্রিশ বছরে জেতেনি। আসলে ব্রাজিলের আকাশে জেসাসের আবির্ভাব শুধু নয়, এই ম্যাচটা বর্তমান ব্রাজিল ফুটবলের প্রেক্ষাপটে খুব, খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে থাকল।

অতি প্রয়োজনের তিনটে পয়েন্ট এল।

কোচ তিতে প্রথম পরীক্ষায় সসম্মানে পাশ করে গেলেন।

নেইমার ছাড়া এমন একজনকে পাওয়া গেল যাঁর উপর ভরসা রাখা যায়।

ম্যাচ শেষে তিতে উচ্ছ্বাসে প্রায় ভেসে গেলেন। বলে ফেললেন, ‘‘টিমটাকে এখন একাত্ম দেখাচ্ছে। আজ যেমন নেইমার খেলেছে, তেমনই বাকি টিম। আর নেইমারের কথা আর কী বলব! টেকনিক্যাল লিডার বলতে যা বোঝায়, নেইমার তাই।’’ টিমের মতো তিতের উপর চাপও যে কম ছিল না। দুঙ্গা পরবর্তী জমানার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু কেউ বুঝতে পারছিলেন না, সেটা ঠিক হল কি না। ইকুয়েডর ম্যাচের আগে টটেনহ্যাম ফ্লপ পওলিনহোকে ডাকায় ফিসফিসানি বেড়ে যায় আরও। কিন্তু একটা জয়ে আপাতত সে সব প্রশ্নপত্র মুলতুবি রাখা হয়েছে।

তবে এটাও ঠিক, ব্রাজিল গোড়া থেকে ঝড় তোলেনি। সত্তর মিনিট পর্যন্ত গোল-উপবাসেই কাটাতে হয়েছে তাদের। বাহাত্তর মিনিটের মাথায় পেনাল্টি থেকে নেইমার গোল করে যান। এবং এর পরপরই জেসাসের ঝড়। পনেরো মিনিটের ব্যবধানে দু’টো গোল করে যান তিনি। ইকুয়েডর পরের দিকে দশ জন হয়ে যাওয়ায় সাম্বার আরও সুবিধে হয়ে যায়। এই ম্যাচ থেকে প্রাপ্ত তিনটে পয়েন্টে গ্রুপ টেবলের পজিশনে খুব হেরফের হয়নি হয়তো। কিন্তু চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশের মহাতারকার অবসর ভেঙে ফিরে আসার দিনে একটা অদৃশ্য বার্তা অন্তত দেওয়া গেল। অভিশাপ কাটিয়ে। এত দিনের অটুট ‘প্রাচীর’-কে তিন গোল মেরে।

ব্রাজিল এখনও মৃত নয়। ব্রাজিল ফুটবল এখনও বেঁচে আছে!

লাতিন আমেরিকা গ্রুপের প্রথম পাঁচ

আর্জেন্তিনা ম্যাচ ৭ জয় ৪ ড্র ২ পয়েন্ট ১৪

উরুগুয়ে ম্যাচ ৭ জয় ৪ ড্র ১ পয়েন্ট ১৩

কলম্বিয়া ম্যাচ ৭ জয় ৪ ড্র ১ পয়েন্ট ১৩

ইকুয়েডর ম্যাচ ৭ জয় ৪ ড্র ১ পয়েন্ট ১৩

ব্রাজিল ম্যাচ ৭ জয় ৩ ড্র ৩ পয়েন্ট ১২

অন্য বিষয়গুলি:

Brazil Ecuador
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy