Advertisement
০৬ জানুয়ারি ২০২৫

প্রথম দিনের ‘মুকুট’ পরেও স্বস্তি নেই বাংলা শিবিরে

মুকুট কলিতার বিয়েতে তাঁরা নিমন্ত্রিত নন। তবু মনোজ তিওয়ারি ও তাঁর দলের উচিত নবদম্পতিকে একটা উপহার পাঠিয়ে দেওয়া!

অসম শাসন সায়নশেখর মণ্ডলের। মঙ্গলবার। -উজ্জ্বল দেব

অসম শাসন সায়নশেখর মণ্ডলের। মঙ্গলবার। -উজ্জ্বল দেব

রাজীব ঘোষ
শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৩:৪১
Share: Save:

বাংলা ১৯১-৪

মুকুট কলিতার বিয়েতে তাঁরা নিমন্ত্রিত নন। তবু মনোজ তিওয়ারি ও তাঁর দলের উচিত নবদম্পতিকে একটা উপহার পাঠিয়ে দেওয়া!

অসমের পিচ কিউরেটর বিয়ের পিঁড়িতে বসতে গিয়েছিলেন বলেই না প্রায় সারা দিন অসমিয়া পেসারদের শাসন করলেন বাংলার ব্যাটসম্যানরা!

ধাঁধার মতো শোনালেও ঘটনাটা এমনই। গুয়াহাটির বর্ষাপাড়া স্টেডিয়ামে বাংলার উল্টো দিকের ড্রেসিংরুম থেকেও তো তেমনই অভিযোগ ভেসে আসছে।

অজুহাতের মতো শোনালেও অসমের ভিলেন এখন মুকুট কলিতা। বিয়ে করতে গিয়ে খলনায়ক বনে গেলেন বেচারা এই কিউরেটর। যাঁর তৈরি উইকেটে এত দিন অসমের পেস বোলাররা বিধ্বংসী হয়ে উঠেছেন বারবার।

প্রায় আড়াইশো কোটি টাকার এই স্টেডিয়ামের বাইশ গজে কোনও ম্যাচেই কৃষ্ণ দাস, অরূপ দাসরা প্রথম দিন ব্যাটসম্যানদের তিষ্ঠোতে দেননি। মুকুটের অনুপস্থিতিতে যে হেভি রোলার চালিয়ে সেই উইকেটের বারোটা বাজিয়ে দেওয়া হয়েছে, অসমের কোচ সনৎ কুমার নিজেই সেই অভিযোগ করলেন। যদিও সেই অভিযোগ নিয়ে অসম ক্রিকেট সংস্থার কোনও হেলদোল নেই।

সনৎ বলছেন, ‘‘আসলে যে এই পিচকে চেনে, যার হাতে তৈরি, সেই মুকুট বিয়ের জন্য কয়েক দিন ছুটি নেওয়াতেই এই বিপত্তি। যাদের হাতে দায়িত্ব ছিল, তারা এত বেশি রোল করিয়েছে যে, উইকেট প্রায় পাটা হয়ে গিয়েছে। সে জন্যই কৃষ্ণ, অরূপরা সে রকম ধারালো হয়ে উঠতে পারল না।’’ তাদের সুপারহিট পেস জুটির স্বপ্নের উইকেটে বাংলার ব্যাটসম্যানরা মঙ্গলবার প্রায় সারা দিন রাজ করলেন। শুধু শেষ বেলায় কয়েকটা উইকেট হারানোয় বাংলা এখন ১৯১-৪।

শুরুতে একবার বোলার কৃষ্ণর হাতে প্রাণ পেলেও হিসাব কষা অনবদ্য ৬৫ রানের ইনিংস খেলার পর সুদীপ চট্টোপাধ্যায়কে আম্পায়ারের ভুলের শিকার হয়ে ফিরতে হল। ব্যাট-প্যাড হওয়া সত্ত্বেও এলবিডব্লিউ দেওয়া হল তাঁকে। পরে হোটেলে ফিরে সুদীপ নিজেই বললেন, ‘‘আমি নিশ্চিত যে ওটা ব্যাট-প্যাড ছিল।’’ সে জন্যই লেগ আম্পায়ারকে ব্যাট দেখিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন, যার জন্য ম্যাচ রেফারি তাঁকে ডেকে পাঠাতেই পারতেন। কিন্তু তা হয়নি।

গালি ও পয়েন্টের মাঝে ডান দিকে ডাইভ দিয়ে অমিত সিংহের যে অবিশ্বাস্য ক্যাচে মনোজ তিওয়ারি ফেরত গেলেন, তাকে অপ্রত্যাশিতও বলা চলে। অথচ বাংলা একটা সময় ছিল ১৪৮-১। সেখান থেকে ১৭৬-৪। পাঁচ বলের মধ্যে ফিরে গেলেন মনোজ ও সেঞ্চুরি থেকে ১৩ রান দূরে থাকা সায়নশেখর মণ্ডল।

আপাতত হাল লক্ষ্মীরতন শুক্লর হাতে। সঙ্গে শ্রীবৎস গোস্বামী। ‘কামব্যাক ম্যান’-এর দিকেই এখন তাকিয়ে সারা বাংলা। ক্যাপ্টেন মনোজ বলছেন, ‘‘উইকেটে বিকেল থেকে বল যে রকম টার্ন নিতে শুরু করেছে, তাতে সব ঠিকঠাক থাকলে ওদের বোধহয় দেড়শোয় থামিয়ে দেওয়া যাবে।’’ দলে প্রজ্ঞান ওঝা বলে একজন আছে বলেই এতটা আত্মবিশ্বাসী লাগছে বাংলার ক্যাপ্টেনকে। ওঝা অবশ্য এ দিন লাঞ্চের সময়ই আমির গনিকে নিয়ে বল হাতে নেমে পড়লেন স্টেডিয়ামের বাইরের নেটে। পড়ন্ত বিকেলেও চলল তাঁর গা ঘামানো।

গুয়াহাটির মাঠে এ সব চললেও বাংলার ড্রেসিংরুমে অবশ্য নাগপুর, পুণের প্রতি বলের খবর আসছিল সারা দিন ধরে। ওয়েবসাইটে, টিভিতে। ঘরের মাঠে হরিয়ানার বিরুদ্ধে যা শুরু করেছে বিদর্ভ, আর কর্নাটক যে ভাবে মহারাষ্ট্রকে চেপে ধরেছে, তাতে বর্ষাপাড়া থেকে তিন পয়েন্ট না তুললে নক আউটে যাওয়া প্রায় অসম্ভব দেখাচ্ছে। এক পয়েন্টে উতরে যাওয়ার আশা শেষ হওয়ার উপক্রম। তাই এ বার তিন পয়েন্টের লড়াইয়ে ঝাঁপানোর পালা দু’দলেরই।

ক্রিজে থাকা লক্ষ্মীরতন শুক্ল ইদানীং কম কথা বলছেন। শুধু বললেন, ‘‘রানটা বাড়ানোর চেষ্টা থাকবে কাল। তবে উইকেটে বল ঘুরতে শুরু করেছে, সাবধানে ব্যাট করতে হবে।’’

এ দিনও যে ৩৬ মিনিট ক্রিজে ছিলেন, সাবধানেই ব্যাট করেছেন লক্ষ্মী। অতীতেও এমন পরিস্থিতিতে পড়েছেন তিনি। দলকে বাঁচিয়েছেনও। বুধবার তেমনই এক ইনিংসের অ্যাকশন রিপ্লে দেখতে চায় বাংলা।

বাংলার ক্রিকেটে না হয় লক্ষ্মীবার আসুক এক দিন আগেই!

সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলা ১৯১-৪ (সায়নশেখর ৮৭, সুদীপ ৬৫)।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy