ব্যাকভলিতে গোলের চেষ্টা। শনিবার কল্যাণীতে পেন । ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
মহমেডান ১ (পেন)
ইউনাইটেড ১ (বিশ্বজিৎ)
লাস্ট বয়-ই থেকে গেল মহমেডান! সাদা-কালো তাঁবুতে আতঙ্কও কাটল না। বরং শনিবারের পর তা আরও গাঢ় হল। এখন পরিস্থিতি যা তাতে বাকি চার ম্যাচের অন্তত তিনটে ম্যাচ জিততে না পারলে বাঁচা কঠিন সঞ্জয় সেন অ্যান্ড কোম্পানির। ম্যাচের পর আই এফ এ শিল্ড জয়ী কোচের গলাতে তাই হতাশা আর হা-হুতাশ। স্বীকার করে গেলেন, “চার্চিল হেরে যাওয়ায় যে সুযোগ এসেছিল তা নিতে পারিনি আমরা। অবনমনের লড়াইটা কঠিন হয়ে গেল। বেড়ে গেল চাপও।”
অথচ এ দিন কল্যাণী স্টেডিয়ামে সুব্রত ভট্টাচার্য বনাম সঞ্জয় সেন-- দুই বঙ্গসন্তান কোচের ধুন্ধুমার লড়াইটা ম্যাচের শেষ দিকে ঢলে পড়েছিল মহমেডানের দিকেই। লালকমল ভৌমিক লাল কার্ড দেখে বেরিয়ে যাওয়ার পর। কিন্তু শেষ কুড়ি মিনিটে ইউনাইটেডের দশ জন হয়ে যাওয়ার সুযোগটা পেন-জোসিমাররা নিতে পারলেন কই।
সুব্রত ভট্টাচার্যের ইউনাইটেড অদৃশ্য একটা প্ল্যাকার্ড নিয়ে যেন মাঠে নেমেছিল। যেখানে লেখা, “তিন পয়েন্ট না পাও অন্তত এক পয়েন্ট নিয়ে ড্রেসিংরুমে ফেরো।” সঞ্জয়ের কাছে ম্যাচটা ছিল ডু অর ডাই। লিগ টেবিল বলছে, ম্যাচটা ড্র হওয়ায় আপাতত অ্যাডভান্টেজ ইউনাইটেড।
এক পয়েন্টের জন্য শুরু থেকেই রক্ষণ জমাট রেখে শুরু করেছিলেন সুব্রত। নিজেদের গোলের সামনে ফেলে দিয়েছিলেন রক্ষণের ‘লকগেট’। তা সত্ত্বেও বিরতির এক মিনিট আগে ইউনাইটেডের গোলে বল ঢুকিয়ে দেন পেন ওরজি। কিন্তু সেটা ক্ষণস্থায়ী ছিল। প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমেই সমতায় ফেরে ইউনাইটেড। এরিকের পাস থেকে গোল করে যান বিশ্বজিৎ বিশ্বাস। প্রথমার্ধে অবশ্য আরও একটি বড় ঘটনা ঘটে যায়। মহমেডানের মনিরুলের সঙ্গে ইউনাইটেড কিপার অভিজিতের সংঘর্ষে চোট পান দুই ফুটবলার। কয়েক সেকেন্ডের জন্য অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলেন মনিরুল। আর চোয়ালে চোট পান অভিজিৎ। দু’জনকেই হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। পরে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
গোল এবং দুর্ঘটনার বাইরে কল্যাণীর তীব্র গরমের মধ্যে হওয়া ম্যাচে বাকিটা শুধুই ব্যর্থতার মিছিল। আফসোস আর মাথা চাপড়ানো। মহমেডানের জোসিমার, ইজরায়েল, লুসিয়ানো, পেনদের একের পর এক গোল নষ্টের প্রদর্শনী দেখে মনে হচ্ছিল, এঁরা কবে আর গোল করে টিমকে জেতাবে? শেষ দিকে ইউনাইটেডের ওয়াহিদও ওয়ান টু ওয়ান অবস্থায় মহমেডান কিপার ব্যারাটোকে পেয়েও গোল করতে পারেননি। তপন মাইতির শট পোস্টে লেগে ফিরল।
ম্যাচটা জেতার জন্য অবশ্য মহমেডান সব অস্ত্রই প্রয়োগ করেছিল। আগের দিন যে জোসিমারকে কোচ বলেছিলেন অনিশ্চিত, তাঁকেও রাখা হয়েছিল প্রথম একাদশে। বিপক্ষের এরিক-ওয়াহিদকে আটকানোর জন্য ফেরানো হয়েছিল লুসিয়ানো সাব্রোসাকে। ছিলেন রহিম নবি-নির্মল ছেত্রীরাও। শেষ দিকে অসীমকেও নামানো হল। তা সত্ত্বেও ম্যাচটা জিততে পারল না মহমেডান। কোচ সঞ্জয় সব দোষ চাপিয়েছেন নিজের দলের ডিফেন্ডারদের উপরই। “আমার সেন্টার ব্যাকদের দোষেই গোল খেয়েছি।” ম্যাচের পর বলে দেন মহমেডান কোচ।
সঞ্জয় যখন ফুটবলারদের দিকে আঙুল তুলছেন তখন সুব্রত ছিলেন নিজস্ব মেজাজে। বলেও দিলেন, “দশ জন হয়েও ছেলেরা যা খেলেছে আমি খুশি। কিছুটা অক্সিজেন পেলাম।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy