হাল্ক বিভ্রাট। ব্রাজিল ম্যাচে আসল। ডান দিকে নকল।
গালের চাপ দাড়িটা একই রকম, চেহারাটাও তাগড়াই, ভাল রকম গাট্টাগোট্টা। মিল শুধু মুখে নয়, মহাতারকা ফুটবলারের সমর্থককুলে প্রবল আলোড়ন ফেলে দেওয়া বৃহৎ নিতম্বের সঙ্গেও!
শরীরী আদল, কার্যকলাপ, চব্বিশ বছরের ফ্লোরেন্সিও সান্তিনোকে দেখলে মনেই হবে না তিনি হাল্ক-টু। মনে হবে, ব্রাজিলের জার্সি পরে তিনিই নামছেন বিশ্বকাপে! ক্রিয়াকলাপও তো অবাক করে দেওয়া।
হাল্ক সেজে তিনি রাস্তায়-রাস্তায় শো করছেন। বিশ্বকাপের বাজারে যে অর্থপ্রাপ্তি ঘটছে, শুনলে বিষম লাগবে।
যখন-তখন স্কোলারির ক্যাম্পে ঢুকে পড়ছেন। ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশনের নিরাপত্তারক্ষীদের ঘোল খাইয়ে! হলুদ জার্সি পরে একবার দাঁড়ালে তিনি যে আসল হাল্ক নন, বোঝে সাধ্য কার?
কয়েক দিন আগে পর্যন্ত যে মেয়েটি তাঁর প্রেমিকা ছিল, সে প্রথম সাক্ষাতে বুঝতেও পারেনি যে, আলাপচারিতা ব্রাজিলীয় তারকা ফুটবলারের সঙ্গে হচ্ছে না। হচ্ছে, তাঁর রেপ্লিকার সঙ্গে! জানার পরেও সান্তিনোর সঙ্গেই সম্পর্কটা ছিল বেশ কিছু দিন। যেহেতু মেয়েটি হাল্কের অন্ধভক্ত।
অদ্ভুত, সত্যি। যে ব্রাজিল জনতার একাংশ বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচ দেখার পর হাল্ককে সমালোচনায় টুকরো-টুকরো করে ছেড়েছে, অ-ব্রাজিলীয় ঘরানার ফুটবল খেলে যিনি দেশে এখন চক্ষুশূল, সেই একই হাল্ককে নিয়ে কি না দ্বৈত-সত্তা তৈরি হচ্ছে ব্রাজিলে! তাঁর ডুপ্লিকেটের কার্যকলাপ দেখে সেই জনতারই একাংশ মুগ্ধ হচ্ছে, টাকা দিচ্ছে, এবং হৃদয়ের বন্ধনেও আবদ্ধ হতে দু’বার ভাবছে না!
“কী করব, কে আমাকে একটা শোয়ের জন্য পাঁচ হাজার ডলার করে দেবে,” প্রশ্ন তুলছেন সান্তিনো। মহাতারকার ‘লুক-অ্যালাইক’-এর জীবন নিয়ে যাঁর তেমন কোনও অভিযোগ নেই। বরং ব্যাপারটা তিনি বেশ উপভোগই করছেন। শনিবারই এক আর্জেন্তিনীয় সমর্থককে হতবুদ্ধি করে ছাড়লেন! সে বেচারি, সান্তিনোকে দেখে ভেবেছিল ব্রাজিলিয়ান টিম কাছেপিঠেই কোথাও উঠেছে। আর হাতের সামনে হাল্ক যখন, ছবি তোলার অবধারিত আব্দার। শেষে তাঁকে যখন বলা হল, ইনি হাল্ক নন সান্তিনো, শুনে বাক্রুদ্ধ হয়ে যায় ওই আর্জেন্তিনীয় সমর্থক। অস্ফুটে বলে ফেলে, “এ তো একদম এক!”
কিন্তু এমন জীবন নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হয় না?
“কিছুটা তো হয়ই। ছেলে, মেয়ে সবাই আমার নিতম্ব জড়িয়ে থাকার চেষ্টা করে। হাল্ক তো সবচেয়ে বেশি বিখ্যাত ওর নিতম্বের জন্যই। হাল্কের নিতম্বের চেয়ে আমারটা একটু কম। ওরটা একশো এগারো ইঞ্চি, আমারটা একশো চার,” নির্দ্বিধায় বলে দেন সান্তিনো। কিন্তু এটুকু বিড়ম্বনাকে তিনি খুব বেশি পাত্তা দিতে রাজি নন। কেন? “হাল্কের জন্যই তো প্রেমিকাকে পেয়েছিলাম,” সহজ-সরল উত্তর তাঁর।
গত বছর ৭ সেপ্টেম্বরের কথা। মানে গ্যারিঞ্চা স্টেডিয়ামে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে খেলা ছিল ব্রাজিলের। বিকেলে ব্যালে দেখতে গিয়েছিলেন সান্তিনো। সেখানেই হাল্ক-মুগ্ধ মেয়েটির সঙ্গে প্রথম আলাপ। “ও নিজেই এগিয়ে এসে আলাপ করেছিল। স্বাভাবিক ভাবেই ধরতে পারেনি,” বলে দেন সান্তিনো।
সেই প্রেম টেকেনি। সান্তিনোর এখন কোনও আর প্রেমিকা নেই। কিন্তু তাতে তাঁর ‘হাল্ক’-এর জীবন থেমে নেই। ইচ্ছে হলেই চলে যন ব্রাজিলের টিম হোটেল, সিবিএফের সিকিউরিটি ধরতেও পারে না। “এই তো সে দিন টিম হোটেলের জিম পেরিয়ে কাফেটেরিয়াতে চলে গিয়েছিলাম। টেকনিক্যাল কমিটির একজন সদস্য চিনতে পারে যে আমি হাল্ক নই,” বলে দেন সান্তিনো।
রাস্তায় আজ যখন হাল্ক সেজে বেরোন সান্তিনো, হাতের তলায় একটা ডিম্বাকৃতি বল থাকে। যা দিয়ে তিনি শো দেখান, যা তিনি দিতে চান হাল্ককে। “একটা শ্রদ্ধার্ঘ্য বলতে পারেন। বলটা ও নিজের ট্রফি কেসে রাখলে খুশি হব। আমি ওর লুক অ্যালাইক ঠিকই। কিন্তু ওর বড় ফ্যানও।” সান্তিনো বুঝিয়ে দেন, হাল্ক শুধু তাঁর জীবিকা-নির্বাহের রাস্তা নয়। বরং কোথাও গিয়ে সমালোচনা-বিদ্ধ মানুষটার জন্য তাঁর ভালবাসাও আছে।
হাল্ক ছাড়া এ দিন ব্রাজিল অনুশীলনেও নাটক চলল। মজার ছলেই হঠাৎ করে দানি আলভেজের কুঁচকিতে লাথি মারেন স্কোলারি। সঙ্গে সঙ্গে উঠে আবার ব্রাজিলের রাইট ব্যাক বলেন, “স্কোলারি একদম টার্গেটেই শটটা রেখেছিল।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy