ইভানোভিচ বিতর্কের পর সুয়ারেজকে নিয়ে ব্রিটিশ প্রেসের ক্যারিকেচার।
ফ্ল্যাশব্যাক।
২০ ডিসেম্বর, ২০১১: ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড তারকা প্যাট্রিস এভ্রাকে বর্ণবিদ্বেষমূলক মন্তব্য করার জন্য আট ম্যাচ সাসপেন্ড লুই সুয়ারেজ।
৮ জানুয়ারি, ২০১৩: এফএ কাপ ম্যাচে ম্যানসফিল্ড টাউনের বিরুদ্ধে হাত দিয়ে বল নামিয়ে গোল করেন সুয়ারেজ। ইংলিশ মিডিয়া সরাসরি জোচ্চর বলে সুয়ারেজকে।
২৪ এপ্রিল, ২০১৩: চেলসি ডিফেন্ডার ব্র্যানিস্লাভ ইভানোভিচকে কামড়ে দিয়ে ১২ ম্যাচ সাসপেন্ড। এ বার বলা শুরু হয়, লিভারপুলের যাবতীয় সম্মান মাটিতে মিশিয়ে দিচ্ছেন সুয়ারেজ।
২০১১ থেকেই ব্রিটিশ প্রচারমাধ্যমের কাছে যেন তিনি ‘সব চেয়ে ঘৃণ্য ফুটবলার’। শিরোনামে উঠে আসতেন গোল করার জন্য নয়, নানা বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে। নানা ভাবে ঠাট্টা, বিদ্রুপ, কটাক্ষের শিকার হতেন সুয়ারেজ। সব কিছুর জবাব তিনি দিয়ে গেলেন ৮৫ মিনিটের লড়াইয়ে।
আর ম্যাচ শেষেই আহত বাঘের গর্জন, “অনেক দিন ধরেই অপেক্ষা করছিলাম এই মুহূর্তটার জন্য। এত তৃপ্ত কোনও দিন হইনি।”
কয়েক বছর ধরে ইংরেজদের বিরুদ্ধে একটা গরগরে রাগ যে তিনি পুষে রেখেছিলেন, তা পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে সুয়ারেজের কথায়। ‘এল পিস্তলেরো’ বলে দিচ্ছেন, “পুরো দেশ জুড়ে সবাই হাসত আমাকে নিয়ে। সবাই বলত এত বাজে ফুটবলারটা কী করে লিভারপুল জার্সি পরছে। আজকের পর তারা কী বলবে সেটা শোনার অপেক্ষায় রইলাম।”
প্রিমিয়ার লিগের সেরা ফুটবলার বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে কোনও মতেই বিচলিত নন। বরং আনন্দিত যে এত দিনে বদলাটা নিতে পারলেন, “খারাপ তো লাগছেই না, বরং খুব আনন্দ পাচ্ছি। এখন আমার সেরা সময় চলছে। জোড়া গোল করতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান মনে হচ্ছে।”
মাঠে ইংল্যান্ড গোলকিপার হার্টের কান্না।
লিভারপুলে সই করার পর থেকেই বিপক্ষ ডিফেন্ডারদের ছাড়াও সমর্থকদের গালিগালাজ সহ্য করতে হয়েছে উরুগুয়ের এই তারকাকে। প্রায় প্রতিটা ম্যাচের আগেই বিপক্ষ সমর্থকদের টিটকিরি শোনা অভ্যাসে দাড়িয়ে গিয়েছিল তাঁর। এমনকী এক সময় লিভারপুল ক্লাব কর্তারাও চিন্তিত ছিলেন এই ভেবে যে এমন একজন ফুটবলার ক্লাবে খেললে কতটা বদনাম হবে ইংল্যান্ডের অন্যতম স্বনামধন্য ক্লাবের।
আবেগটা মাত্রা ছাড়িয়ে গিয়েছিল হয়তো সে জন্যই। গোলের পর চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি। বলছিলেন, “কয়েক দিন আগে পর্যন্ত ভাবিনি ম্যাচে জোড়া গোল করব। অনেক কটাক্ষ সহ্য করেছি। আজ তার উপযুক্ত জবাব দিলাম।” সুয়ারেজ নিয়ে ইংল্যান্ড অতিষ্ঠ হয়ে উঠলেও, তাঁর দেশে স্বাভাবিক ভাবেই উন্মাদনার অভাব ছিল না। মন্টেভিডিয়োয় জড়ো হওয়া লোক এ দিন প্রতি মিনিটেই গলা ফাটিয়েছেন সুয়ারেজের জন্য। কয়েক জন যেমন সুয়ারেজের ছবিতে মুকুট পরিয়ে তাঁকে ইংল্যান্ডের নতুন রাজা বানিয়ে দেন। কোপা আমেরিকা ফাইনালে গোল করার মতোই আবার আন্তর্জাতিক মঞ্চে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের নজির গড়ে রাখলেন সুয়ারেজ। গোল উৎসর্গ করলেন নিজের পরিবারকে। বলেন, “আমার স্ত্রী আর কন্যাকে এই পারফরম্যান্স উৎসর্গ করতে চাই। ফুটবল ছাড়া পরিবারই আমার জীবনের সবচেয়ে বড় উপহার।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy