আজও কি দুই? প্র্যাকটিসে নেইমার। ছবি: উৎপল সরকার
উড়ন্ত বিমানেই নেইমাররা সাম্বা নাচলেন!
আর ফোর্তালেজার টিম হোটেলে স্কোলারির দলকে এক পলক দেখতে হাজির ভক্তদের ‘ড্রিবল’ করলেন অস্কার-ফ্রেডরা!
মেক্সিকো ম্যাচের আগে টিম ব্রাজিলের মেজাজ এতটাই ফুরফুরে!
আবার মুদ্রার উল্টো পিঠও আছে। ফোর্তালেজার টিম হোটেলে ফ্রেড-অস্কাররা অপ্রত্যাশিত ভাবে শুনলেন ‘ভিতু-ভিতু’ টিটিকিরি। মজার ব্যাপার, আওয়াজকারীরা উরুগুয়ের সমর্থক।
কিন্তু ওই হাজারখানেক মানুষ ফোট্রেসে ব্রাজিলের টিম হোটেলের মূল গেটের বাইরে কাদের দেখতে জমা হয়েছিলেন? আসলে সুয়ারেজ-কাভানি-ফোরলানদের উরুগুয়ে দলের একই হোটেলে আস্তানা পাতার কথা। কিন্তু ‘একটা কিনলে একটা ফাউ’-এর মতো উরুগুয়ে সমর্থকেরা ব্রাজিল দল হোটেলে উঠছে শুনে আরও বেশি ভিড় জমান গেটের সামনে। সব দেখেশুনে হোটেল কর্তৃপক্ষ নেইমারদের প্রস্তাব দেন হোটেলের পিছনের দরজা দিয়ে ঢোকার জন্য। তৎক্ষণাৎ সেই পরামর্শ মেনে নেয় স্কোলারির দল। কিন্তু গোপন পরিকল্পনার কথা ছড়িয়ে পড়তে বেশিক্ষণ লাগেনি। ‘ব্লিচড্’ করা নতুন চুলের স্টাইলের নেইমার দ্য সিলভা-দানি আলভেজরা যখন হোটেলের পিছনের দরজা দিয়ে ঢুকছেন, তখন মূল গেটের বাইরে আওয়াজ উঠেছে, ‘ভিতু-ভিতু’। কিন্তু নেইমারদের কী কেউ আশ্বস্ত করেছেন, ওটা ব্রাজিল নয়, উরুগুয়ে সমর্থকদের গলা!
আসল ছবিটা বরং এটাই যে, আপন টিমের জন্য রিও, সাও পাওলোর চেয়েও ফোর্তালেজায় বেশি উন্মাদনা। টিম ব্রাজিল এখানে বিগ্রহের সমান। ঠিক এক বছর আগে এখানকার এস্তাদিও কাস্তেলাও স্টেডিয়ামের কনফেডারেশনস্ কাপে ব্রাজিল-মেক্সিকো ম্যাচের আগের সেই দুঃস্বপ্নের ছিটেফোঁটা এই মুহূর্তে নেই। ব্রাজিলের বেসক্যাম্প তেরেসোপোলিস থেকে ফোর্তালেজাগামী ফ্লাইটে দলের সাপোর্ট স্টাফ আর টিমের সঙ্গে বিশ্বকাপ চষে বেড়ানো কিছু সমর্থকের সঙ্গে নেইমারদের সাম্বা নাচের মতোই যেন তূরীয় মেজাজ শহরটারও। গত বছর কনফেড কাপে মেক্সিকোকে ২-০ গোলে হারানো ম্যাচের আগে স্টেডিয়ামের অল্প দূরে ব্রাজিল সরকারের পাহাড়প্রমাণ দুর্নীতি, অস্বাভাবিক কর-বৃদ্ধির প্রতিবাদে জমায়েত তিরিশ হাজার বিক্ষোভকারীকে হটাতে পুলিশকে কাঁদানে গ্যাসের সঙ্গে-সঙ্গে রাবার বুলেটও ছুড়তে হয়েছিল। নেইমারদের সেই ম্যাচের আগে হুলুস্থুল অবস্থা।
এ বার তার পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা আদৌ দেখছে না সংগঠকদের পাশাপাশি প্রশাসনও। বিশ্বকাপের ইতিহাসে মেক্সিকোর বিরুদ্ধে ব্রাজিলের ‘ক্লিনশিট’-এর মতোই মঙ্গলবার ম্যাচের আগে-পরে ফোর্তালেজা ‘ক্লিন’ থাকবে বলে বিশ্বাস সবার। দীর্ঘ ৫২ বছর পর দু’দেশ বিশ্বকাপে আবার মুখোমুখি হলেও আগের তিনবারই (১৯৫০, ’৫৪, ’৬২) ব্রাজিল হাসতে-হাসতে জিতেছে। তিন ম্যাচে ১১ গোল খাওয়া মেক্সিকো ব্রাজিলের জালে একবারও বল ঢোকাতে পারেনি। এহেন দলের এ বারের কোচ মিগুয়েল হেরেরা তাই ‘আমরাও প্রথম ম্যাচে ক্যামেরুনকে হারিয়েছি, এ বার ব্রাজিলকে দেখতে চাই’ হুঙ্কার পাড়লেও তাতে তেমন হেলদোল নেই সেলেকাও শিবিরে।
বরং আগের দিন প্র্যাক্টিসে চোট পেলেও সোমবার ফোর্তালেজায় পৌঁছেই হাল্ককে হাসপাতালে এমআরআই করতে পাঠিয়ে আবিষ্কৃত হয়েছে তাঁর রিপোর্ট ভাল। খেলতেই পারেন। যদিও এ দিন প্র্যাক্টিসে ‘বিগ ফিল’ স্কোলারি উইংয়ে রামিরেজকে খেলিয়ে বিকল্প ছকে নিয়েছেন। ফ্রেড যাঁর ব্রাজিলের ঘরোয়া ফুটবলে ম্যাচের তিন সেকেন্ডে দ্রুততম গোল করার রেকর্ড আছে বলেছেন, “মেক্সিকোকে সমীহ করলেও ভয় পাওয়ার কোনও প্রশ্ন নেই।” প্রথম ম্যাচে গোল পেয়ে খোশমেজাজে থাকা অস্কার আবার তাঁর বুড়ো আঙুলের টোকায় গোল করার দক্ষতাকে কিংবদন্তি ব্রাজিলীয় ফরোয়ার্ড রোমারিওর সঙ্গে তুলনা করে বসেছেন।
আর নেইমার? মেক্সিকো ম্যাচ খেলতে আসার ফ্লাইটে সাম্বা নাচের মধ্যেই তো ব্রাজিলের ‘ওয়ান্ডার’ কিড-এর ফুরফুরে মেজাজের গোটা প্রতিবিম্ব ধরা পড়ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy