Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

ঢাকের বোলে স্বনির্ভরতার পথ

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এই দুই গ্রামে মোট মহিলা ঢাকিদের মোট পাঁচটি দল রয়েছে। দুই গ্রামে মহিলা ঢাকির সংখ্যা মোট প্রায় ৬৫ জন। 

ঢাক কাঁধে মহিলারা। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়

ঢাক কাঁধে মহিলারা। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়

সুচন্দ্রা দে
কাটোয়া শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:২০
Share: Save:

বছরভর সংসার সামলানো বা খেতের কাজ, এ সব তো রয়েইছে। কিন্তু পুজোর ক’মাস আগে থেকেই শুরু হয় ব্যস্ততা। চলে প্রস্তুতি। জেলা, রাজ্য এবং দেশের নানা প্রান্তে যেতে হবে যে। তাঁদের ঢাকের বোলে মাতোয়ারা হয় পুজো মণ্ডপ। উপার্জন হয় কিছু টাকাও। এ ভাবেই স্বনির্ভরতার পথ দেখাচ্ছেন কাটোয়ার সুদপুর ও বিজয়নগরের মহিলা ঢাকিরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এই দুই গ্রামে মোট মহিলা ঢাকিদের মোট পাঁচটি দল রয়েছে। দুই গ্রামে মহিলা ঢাকির সংখ্যা মোট প্রায় ৬৫ জন।

এই দুই গ্রামে মহিলা ঢাকিদের নিয়ে প্রথম দলটি তৈরি করেন দাসন দাস। বছর পাঁচেক আগে স্ত্রী ফুলটুসি, নিকটাত্মীয় মিঠু দাস ও বাসন্তী দাসকে নিয়ে শুরুটা করেছিলেন দাসনবাবু। পরে যোগ দেন অপর্ণা দাস, সুলতা দাস-সহ আরও অনেকে। তাঁরা বলেন, ‘‘আগে নিজেদের রোজগার তেমন ছিল না। এখন নানা মণ্ডপ, সরকারি অনুষ্ঠান, কর্মসূচি থেকে ঢাক বাজানোর ডাক আসে। সরকারি অনুষ্ঠানে এক হাজার টাকা করে মেলে।’’ মণ্ডপে ঢাক বাজিয়ে রোজগার তবে অনেকটাই বেশি। দাসনবাবু জানান, মহিলা ঢাকিদের এই দলটি কলকাতার নাকতলা, টালা পার্ক, রাজডাঙা-সহ নানা এলাকার বড় পুজো মণ্ডপগুলিতে ঢাক বাজিয়েছেন। সুলতারা জানান, এ বার বেঙ্গালুরু থেকে একটি মণ্ডপে ঢাক বাজানোর ডাক এসেছে।

অন্য আরও চারটি দলে রয়েছেন সুচিত্রা দাস, সান্ত্বনা দাস, প্রতিভা দাস, সুমি দাস, ফুলন দাস প্রমুখ। তাঁরা জানান, এলাকা এবং রাজ্যের নানা জায়গায় তাঁরা ঢাক বাজাতে যান। সুচিত্রা যেমন জানান, তাঁরা এ বার কোচবিহার ও পুরুলিয়ায় ঢাক বাজানোর বরাত পেয়েছেন। অন্যদের কেউ মালদহ, আসানসোল, খড়্গপুর, কেউ বা কলকাতার মণ্ডপে ঢাক বাজাতে যাবেন।

ঢাক বাজিয়ে উপার্জিত টাকায় কেউ বাড়িতে চাল দিয়েছেন, কেউ বা ছেলেমেয়ের বিয়েও দিয়েছেন, জানান সুমি, প্রতিভারা। সংসারের নানা দৈনন্দিন কাজেও সেই টাকা ব্যবহার করেন বলে জানান মহিলা ঢাকিরা।

তবে মহিলা ঢাকিদের আক্ষেপ, এখনও তাঁরা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের নথিভুক্ত শিল্পী নন। ফলে জেলার বাইরে ঢাক বাজাতে অনেক সময়েই নানা হয়রানির সম্মুখীন হতে হয় বলে অভিযোগ অপর্ণাদের। মহকুমা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের আধিকারিক শম্ভু মণ্ডলের অবশ্য আশ্বাস, ‘‘যাঁদের সরকারি কার্ড নেই, খোঁজ নিয়ে সেই সব মহিলা ঢাকিদের কার্ড দেওয়া হবে।’’ মহিলাদের এই স্বনির্ভর হওয়ার পথকে স্বাগত জানান স্থানীয় পঞ্চায়েতের প্রধান সাবানা ইয়াসমিন শেখ।

অন্য বিষয়গুলি:

Durga Puja 2019 Drum Women
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy