Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪

হাতি ঠেকাতে উত্তরের ধাঁচে স্কোয়াড দক্ষিণেও

উত্তরের ছায়া পড়ল দক্ষিণেও। ঝাড়খণ্ডের দলমা থেকে বর্ষা শেষে নেমে আসা হস্তিযূথের হামলা সামাল দিতে এ বার উত্তরবঙ্গের ধাঁচেই বিশেষ ‘এলিফ্যান্ট স্কোয়াড’ গড়ার কথা ভাবছে দক্ষিণবঙ্গের বনকর্তারা। বন দফতরের সেন্ট্রাল সার্কেলের মুখ্য মুখ্য বনপাল বিনোদকুমার যাদব বলেন, “লোকালয়ে হাতি ঠেকাতে উত্তরের মতোই স্কোয়াড গড়ার কথা ভাবা হচ্ছে। এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তাবও পাঠানো হয়েছে।”

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৪ ০২:৩৮
Share: Save:

উত্তরের ছায়া পড়ল দক্ষিণেও।

ঝাড়খণ্ডের দলমা থেকে বর্ষা শেষে নেমে আসা হস্তিযূথের হামলা সামাল দিতে এ বার উত্তরবঙ্গের ধাঁচেই বিশেষ ‘এলিফ্যান্ট স্কোয়াড’ গড়ার কথা ভাবছে দক্ষিণবঙ্গের বনকর্তারা।

বন দফতরের সেন্ট্রাল সার্কেলের মুখ্য মুখ্য বনপাল বিনোদকুমার যাদব বলেন, “লোকালয়ে হাতি ঠেকাতে উত্তরের মতোই স্কোয়াড গড়ার কথা ভাবা হচ্ছে। এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তাবও পাঠানো হয়েছে।” তিনি জানান, স্কোয়াড হবে দু’ধরনের। যার মধ্যে বিশেষ প্রশিক্ষিত একটি স্কোয়াড রীতিমতো কুনকি হাতি নিয়ে জঙ্গলের বাসিন্দাদের জঙ্গলের ঘেরাটোপেই আটকে রাখার চেষ্টা করবে।

বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া ও পশ্চিম মেদিনীপুর--তিন জেলায় প্রাথমিক ভাবে ৮টি স্কোয়াড গড়ার কথা ভাবা হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ওড়গঞ্জা, ঝাড়গ্রাম, নয়াগ্রাম, ধাদিকা, বাঁকুড়ার সোনামুখি, বেলিয়াতোড়, বিষ্ণুপুর এবং পুরুলিয়ার ঝালদাতে ওই স্কোয়াডগুলি গড়ে তোলা হবে। প্রয়োজনে তারাই আশপাশের এলাকায় হাতি-খেদানোর কাজ করবে। প্রতিটি স্কোয়াডের দায়িত্বে থাকবে রেঞ্জ অফিসার। সঙ্গে থাকবেন দু’জন বিট অফিসার এবং অন্তত দশ জন বনকর্মী। উত্তবরঙ্গের মতো বাঁকুড়ার সোনামুখি এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের ধাদিকায় একটি করে কুনকি হাতিও রাখা হবে। প্রয়োজনে যাদের অন্যত্র পাঠানো যেতে পারে। সম্প্রতি ঝাড়গ্রামে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে এ ব্যাপারে প্রাথমিক সম্মতিও মিলেছে বলে বিনোদবাবুর দাবি।

তবে হাতিকে জঙ্গলের সীমানায় বেঁধে রাখতে সেখানেও হাতির ‘ফডার’ বা খাবারের ব্যবস্থা করা হবে। থাকবে আমলকি, মুলি বাঁশ, জলাশয়, এমনকী ‘নুনি’ বা নুন খাওয়ার বিশেষ জায়গাও।

বন দফতরের খবর, রাজ্যে দলমা থেকে প্রথম বার হাতির পাল ঢুকেছিল ১৯৭৬ সালে। সে সময়ে তারা পাড়ি দিয়েছিল পুরুলিয়ার সিন্ধ্রি পর্যন্ত। দিন কুড়ি থাকার পর সে যাত্রায় তারা ফিরে গিয়েছিল দলমায়। পরের বছর থেকে তাদের যাত্রাপথ এবং দক্ষিণের ওই তিন জেলায় থেকে যাওয়ার সময়সীমাও উত্তরোত্তর বাড়তে থাকে। ১৯৮৭ সালে, হাতির দল বাঁকুড়া থেকে কংসাবতী নদী পেরিয়ে লালগড়ে পা রাখে। ধীরে ধীরে পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনি, মেদিনীপুর সদর ব্লক, খড়্গপুর, কেশিয়াড়ি, নয়াগ্রাম, এমনকি দাঁতনেও তাদের দাপট ছড়িয়ে দিতে থাকে। উল্টোদিকে বাঁকুড়া হয়ে দামোদর পেরিয়ে সম্প্রতি দুর্গাপুরেও হাতির আনাগোনা শুরু হয়েছে। দলমা থেকে আসা অনেক হাতিই আবার দলছুট হয়ে পাকাপাকি ভাবে তাদের আস্তানা গাড়ছে দক্ষিণের ওই তিন জেলার বিভিন্ন শাল জঙ্গলে। ফলে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে প্রানহানি এবং শস্যহানি। গত ৩৭ বছরে হাতির হানায় ওই তিন জেলায় অন্তত ৪৫৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত কয়েক বছরে শস্যহানির হিসেব--২৪ হাজার হেক্টর জমির ফসল। হাতিও মারা গিয়েছে ৯৫টি।

এই অবস্থায় বহিরাগত হস্তিযূথ ঠেকাতে স্কোয়াডই ভরসা বলে মনে করছে বন দফতর।

অন্য বিষয়গুলি:

elephant medinipur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy