এ বার আমার আপনার মতো সাধারণ মানুষের ধরা-ছোঁয়ার মধ্যে আসতে চাইছে নাসা।
আমার আপনার জন্য তার গবেষণাকে সরাসরি দেখা ও বোঝার দরজাটা একেবারে হাট করে খুলে দিতে চাইছে!
দশকের পর দশক ধরে আমাদের এই বাসযোগ্য গ্রহ আর মহাকাশে কী কী গবেষণা করেছে, করে চলেছে নাসা, তা এ বার আমার আপনার মতো আমজনতাকে তার ঘরে ডেকে দেখাতে ও বোঝাতে চাইছে বিশ্বে মহাকাশ গবেষণার সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠানটি।
মহাকাশ গবেষণার ‘তীর্থক্ষেত্র’ নাসার জেপিএল। আকাশ থেকে তোলা ছবি।
পাসাডেনায় নাসার জেট প্রোপালসান ল্যাবরেটরি (জেপিএল) থেকে আনন্দবাজারকে পাঠানো ই-মেল বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছেন জেপিএল পাবলিক সার্ভিস অফিসের ম্যানেজার কিম লিভেন্স।
কেউ যদি কাউকে তার ঘরে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানায়, তা হলে তার জন্য কাউকে পকেটের রেস্ত খরচ করতে হয়?
লিভেন্স জানাচ্ছেন, সুদূর আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ার পাসাডেনায় নাসার জেপিএলে গিয়ে নাসার গবেষণার হাল-হকিকৎ চাক্ষুষ করতেও এ বার ডলার, পাউন্ড, ইউরো বা টাকা খরচ হবে না। একেবারে নিখরচায় দু’দিন জেপিএলে থেকে নাসার যাবতীয় কর্মকাণ্ড দেখা ও বুঝে নেওয়া যাবে। আর আমার আপনার মতো যাঁরা মহাকাশ গবেষণা ও জ্যোতির্বিজ্ঞানের কিছুই বোঝেন না, তাঁদের জলের মতো করে সবকিছু বুঝিয়ে দেবেন নাসার বিশিষ্ট জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। একেবারে ব্ল্যাক বোর্ডে, চক পেন্সিল নিয়ে। বা খেলার মাঠে খেলতে খেলতে। এখন থেকে প্রতি বছরেই দিন দু’-তিনেকের জন্য আমজনতার জন্য হাট করে খুলে দেওয়া হবে জেপিএলের দরজা।
তার জন্য আর মাসদু’য়েক পরেই জুন মাসের ৪ আর ৫ তারিখে পাসাডেনায় জেপিএলে একটি বড় ওয়ার্কশপের আয়োজন করতে চলেছে নাসা। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘ওপেন হাউস’।
যাতে পৃথিবীর যে কোনও প্রান্তের মানুষই পারবেন অংশ নিতে। তা তিনি মার্কিন নাগরিক হোন বা আফ্রিকার ইথিওপিয়া কিংবা অ্যাঙ্গোলার।
নাসার জেপিএলে আর্কাইভ জোন।
তবে সেই অনুষ্ঠানে অংশ নিতে গেলে কোনও অর্থ লাগবে না ঠিকই, কিন্তু আগে থেকে একটি ‘বিনা পয়সার টিকিট’ আমাকে আপনাকে ‘বুক’ করতে হবে। যে টিকিটের নাম দেওয়া হয়েছে, ‘আ টিকিট টু এক্সপ্লোর জেপিএল’। বলতে পারেন, ওই টিকিটই নাসার ‘ওপেন হাউস’-এ অংশ নেওয়ার ‘পাসপোর্ট’ আর ‘ভিসা’! যার জন্য কোনও অর্থের প্রয়োজন হবে না ঠিকই, কিন্তু যেহেতু সেই টিকিটের সংখ্যা সীমিত, তাই তা বিলি-বণ্টন করা হবে ‘আগে আসলে আগে পাবে’ এই ভিত্তিতে। এক জন সর্বাধিক পাঁচটি করে কাটতে পারবেন টিকিট। বিশ্বের যে কোনও প্রান্ত থেকেই নাসার ওই ‘ওপেন হাউস’-এ অংশ নেওয়ার জন্য জরুরি টিকিট ‘বুক’ করা যাবে অনলাইনে। আর তিন ’দিন পরেই, ২৫ এপ্রিল, সোমবার। জেপিএলের ‘স্পেশ্যাল ইভেন্টস’ ওয়েব পেজে। বা, (৮১৮) ৩৫৪-১২৩৪ নম্বরে টেলিফোন বা (৮১৮) ৩৯৩-৪৬৪১ নম্বরে ফ্যাক্স পাঠিয়েও ‘বুক’ করা যাবে নাসার সেই অনুষ্ঠানের টিকিট। জেপিএলের ‘স্পেশ্যাল ইভেন্টস’ ওয়েব পেজে থাকবে ‘রিজার্ভ টিকিটস’ বাটন। তাতে ক্লিক করলেই ভেসে উঠবে দু’টো অপশন। ‘চুজ ওয়ান ডেট অর এন্ট্রি টাইম’ ( যে কোনও একটি তারিখ বা প্রবেশের সময় বেছে নাও)। দ্বিতীয় অপশনে বলা হবে- ‘সিলেক্ট নাম্বার অফ টিকিট্স’ (কতগুলি টিকিট লাগবে, জানাও- সর্বাধিক পাঁচটি)। এর পর প্রতিটি টিকিটের জন্য আলাদা আলাদা নাম ও তাঁদের ই-মেল অ্যাড্রেস জানাতে হবে। সেই ‘রিজার্ভেশান’কে কনফার্ম করাতে রাতে হবে। কনফার্মড হলেই জেপিএল থেকে আসবে একটি ই-মেল। সেই ই-মেলেই জেপিএলের ‘ওপেন হাউস’ অনুষ্ঠানের যাবতীয় নির্ঘণ্ট জানানো থাকবে। এ বার সেই টিকিটের প্রিন্ট-আউট হাতে নিয়েই ছুটুন বিমানবন্দরে, ক্যালিফোর্নিয়ার ফ্লাইট ধরতে।
আরও পড়ুন- এ কোন আকাশবাণী? মহাকাশ থেকে কে পাঠাল ৭২ সেকেন্ডের বার্তা!
আমজনতা কী কী দেখতে পাবেন জেপিএলের ‘ওপেন হাউস’ অনুষ্ঠানে?
পাসাডেনায় জেপিএলে রোবোটিক্স সংক্রান্ত গবেষণার লাগোয়া এলাকা।
লিভেন্স জানিয়েছেন, সেখানে দেখানো হবে মঙ্গলে পাঠানো ‘রোভার’ মহাকাশযান ‘মিস কিউরিওসিটি’র একটি পূর্ণাবয়ব মডেলের যাবতীয় খুঁটিনাটি, ঘুরিয়ে দেখানো হবে সেই বিশাল এলাকা, যেখানে রোবোটিক্স নিয়ে গবেষণা হয়, জেপিএলের সেই অতি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা, যেখানে যাবতীয় মহাকাশযানের আনুষঙ্গিক যন্ত্রাদি বানানো হয়। আর নিয়ে যাওয়া হবে সেই মাইক্রো-ডিভাইসেস ল্যাবরেটরিতে, যেখানে মহাকাশ প্রযুক্তিকে উন্নততর করার জন্য নিত্য নতুন উদ্ভাবন হয়।
ছবি সৌজন্য: জেট প্রোপালসান ল্যাবরেটরি, নাসা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy