সন্মুগ সুব্রহ্মণ্যন। ছবি সৌজন্য টুইটার।
এটাই কি ল্যান্ডার বিক্রম? নাসার প্রকাশ করা ছবিতে চিহ্নিত করে গত ৩ অক্টোবর নাসা এবং ইসরো-কে টুইট করে প্রশ্নটা করেছিলেন বছর তেত্রিশের সন্মুগ সুব্রহ্মণ্যন। বিক্রমের আছড়ে পড়ার জায়গার আরও দুটো ছবি এবং সবিস্তারে জানিয়ে গত ১৭ নভেম্বর আরও একটি টুইট করেছিলেন ওই দুই মহাকাশ সংস্থার কাছে। উত্তরটা যে এমন ভাবে আসবে আশাই করতে পারেননি সন্মুগ। তাঁর পাঠানো প্রশ্নের ঠিক মাস দুয়েক পরই নাসা জানিয়ে দিল, চিহ্নিত করা বস্তুটিই ল্যান্ডার বিক্রমের ধ্বংসাবশেষ।
মাস তিনেক ধরে বিক্রমের ধ্বংসাবশেষের অনবরত খোঁজ চালিয়ে যাচ্ছিল নাসা। কিন্তু কোনও ভাবেই তা চিহ্নিত করতে পারছিল না মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটি। শেষমেশ লুনার রিকনাইস্যান্স অরবিটার (এলআরও)-এর তোলা একটি ছবি শেয়ার করে বিশ্ববাসীর কাছে সাহায্য চায় নাসা। সুযোগটা হাতছাড়া করতে চাননি সন্মুগ। পেশায় এক জন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। কাজ করেন চেন্নাইয়ের একটি ইঞ্জিনিয়ারিং সংস্থায়।
১৭ সেপ্টেম্বর, ১৪ এবং ১৫ অক্টোবর এবং ১১ নভেম্বরে এলআরও-র তোলা বেশ কয়েকটি ছবি নিয়ে কয়েক সপ্তাহ ধরে গবেষণা ও চর্চা করেন সন্মুগ। সংবাদ সংস্থা এএফপি-কে তিনি বলেন, “যেখানে বিক্রম ভেঙে পড়েছিল, নাসার প্রকাশিত তেমন কয়েকটি পুরনো ছবি এবং নতুন ছবি পাশাপাশি রেখে পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে চর্চা করি। তখনই চিহ্নিত করতে পেরেছিলাম বিক্রম ধ্বংসাবশেষগুলো।” সঙ্গে সঙ্গে নাসার সঙ্গে যোগাযোগ করেন সন্মুগ। এই খোঁজ সম্পর্কে তাদের সবিস্তারে জানান। তবে সন্মুগের পাঠানো সেই তথ্য সুনিশ্চিত করতে বেশ কিছুটা সময় নেয় নাসা। যখন নাসা-ও বিষয়টি নিয়ে সুনিশ্চিত হয়, যোগাযোগ করে সন্মুগের সঙ্গে। নাসার এলআরও মিশনের ডেপুটি প্রজেক্ট সায়েনটিস্ট জন কেলার তাঁকে শুভেচ্ছা জানান। সেই সঙ্গে দেরিতে উত্তর দেওয়ার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন: চাঁদের মাটিতে আছড়ে পড়া ল্যান্ডার ‘বিক্রম’-এর ধ্বংসাবশেষের ছবি প্রকাশ করল নাসা
এই খোঁজ সম্পর্কে সন্মুগ বলেন, “বিক্রম যে পথে গিয়েছিল সেই পথ ধরেই ছবিতে খোঁজা শুরু করি। আমি খুব খুশি। আমার পরিশ্রমের ফসল পেলাম।”
ইসরো এবং নাসা গত ৭ সেপ্টেম্বর থেকে অনবরত খোঁজ চালাচ্ছিল বিক্রম-এর। বিক্রম-এর সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য ক্যালিফোর্ণিয়া, মাদ্রিদ এবং ক্যানবেরায় ডিপ স্পেস নেটওয়ার্ক অ্যান্টেনাকেও কাজে লাগিয়েছিল। কিন্তু সব চেষ্টাই ব্যর্থ হয়। কোনও জবাবই আসেনি বিক্রম-এর কাছ থেকে। এর পর তারা এলআরও-কে কাজে লাগায়। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে যেখানে বিক্রম ভেঙে পড়েছিল সেখানকার বেশ কয়েকটি ছবি নাসাকে পাঠায় এলআরও। কিন্তু সেই ছবিতেও বিক্রমের আছড়ে পড়ার জায়গা ধরা পড়লেও, ধ্বংসাবশেষের কোনও হদিস পাচ্ছিলেন না নাসার বিজ্ঞানীরা। তিন মাস ধরে এই চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার পরে অবশেষে এলআরও-র পাঠানো ছবি শেয়ার করে বিশ্ববাসীর কাছে সাহায্য চেয়েছিল মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটি। তাদের দিশা দেখালেন ভারতেরই ছেলে সন্মুগ। নাসাও এই আবিষ্কারে উচ্ছ্বসিত। উচ্ছ্বসিত সন্মুগও।
আরও পড়ুন: অযোধ্যা মামলা থেকে আইনজীবী ধবনকে সরিয়ে দিল জমিয়তে
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy