ভূকম্পে এই ভা্বে ভেঙে পড়বে না বাড়ি? -ফাইল ছবি।
আঙুলের চাপেও যাতে সাময়িক গর্ত হয়, সেই থার্মোকল দিয়ে বাড়িঘর বানানো হলে কি তা তাসের ঘরের মতোই ভেঙে পড়বে?
তেমন যে ঘটবে না, সে কথাই জানাল সাম্প্রতিক একটি গবেষণা। বলল, ভূমিকম্পে যখন তাসের ঘরের মতো হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে বাড়িঘর, বড় বড় ইমারত, অট্টালিকা, তখন কংক্রিটের সঙ্গে থার্মোকলের ব্যবহার ঘটিয়ে পাঁচ তলা ঘরবাড়ি বানানো হলে তা তীব্র ভূমিকম্পেও সেই ইমারতকে ভেঙে পড়তে দেবে না। উঁচু করেই রাখবে তাদের মাথা। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো যাবে। বাঁচানো যাবে বহু মানুষের প্রাণ।
নজরকাড়া এই গবেষণাটি করেছে রুরকির ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (আইআইটি-আর) ও দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়। আর সেটি হয়েছে কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের মঞ্জুর করা অর্থে।
গবেষণাটি চালানো হয়েছে আইআইটি রুরকির আর্থকোয়েক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ন্যাশনাল সিসমিক টেস্ট ফেসিলিটি (এনএসটিএফ) ভবনে। সেখানকার দেওয়ালগুলির কংক্রিটের দু'টি স্তরের মধ্যে থার্মোকলকে স্যান্ডউইচের মতো রেখে পরীক্ষা চালিয়েছেন গবেষকরা। দেখেছেন, ভূকম্প যে পার্শ্ব বলের জন্ম দেয় সেই বলের চাপ কতটা সহ্য করতে পারে কংক্রিটের দেওয়াল যদি তার ভিতরে পুরে দেওয়া হয় থার্মোকল বা ‘এক্সপ্যান্ডেড পলিস্টাইরিন (ইপিএস)’।
গবেষণাটির তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা আইআইটি রুরকির আর্থকোয়েক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক যোগেন্দ্র সিংহ বলেছেন, “গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ভূকম্পবিজ্ঞানের পরিভাষায় যাকে দেশের সবচেয়ে ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা (মোস্ট সিসমিক জোন ৫) বলা হয়, সেখানেও কংক্রিটের দু'টি স্তরের মধ্যে থার্মোকলকে স্যান্ডউইচের মতো রেখে দেওয়াল বানানো হলে তা পাঁচ তলা উঁচু বাড়িকে ভূকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হতে দেয় না। আর তার জন্য ওই বাড়িকে বাঁচাতে বাইরে থেকে আলাদা ভাবে কোনও সহায়ক ব্যবস্থাও লাগে না।”
তিনি এও জানিয়েছেন, থার্মোকল এ ক্ষেত্রে বাড়ির ওজন কমিয়ে দেয় অনেকটাই। তাতে ভূকম্পন তীব্র হলেও বাড়ির উপর তার অভিঘাত ততটা পড়ে না। যতটা হত বাড়ির ওজন বেশি থাকলে।
গবেষকরা দেখেছেন, এই পদ্ধতিতে বাড়ির কংক্রিটের দেওয়াল আরও কম সময়ে জমাট বেঁধে শক্তপোক্ত হয়ে ওঠে।
আরও সুবিধা রয়েছে কংক্রিটের দু'টি স্তরের মধ্যে থার্মোকলকে স্যান্ডউইচের মতো রেখে বাড়ির দেওয়াল বানানো হলে। গবেষকরা জানিয়েছেন, দেওয়ালে কংক্রিটের দু'টি স্তরের মধ্যে থাকা থার্মোকল ঘরের ভিতরের তাপমাত্রাও অনেকটা কমিয়ে দেয়। ফলে, এই ভাবে বাড়ির দেওয়াল বানানো হলে ঘরের ভিতরটা বেশ ঠান্ডা হয়। কোনও ‘এয়ার কুলার’ বা ‘এয়ার কন্ডিশনার’ ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ে না।
ভারতের মতো দেশে যেখানে অঞ্চল ভেদে তাপমাত্রার ফারাক অত্যন্ত বেশি এবং যে সব জায়গায় আবহাওয়া চরমভাবাপন্ন, সে ক্ষেত্রে এই পদ্ধতির প্রয়োজন আরও বেশি, জানিয়েছেন গবেষকরা।
এই পদ্ধতিতে দেওয়াল তৈরির জন্য কংক্রিটও কম লাগে। ফলে বাড়ি তৈরির খরচও কমে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy