শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর অ্যান্টিবডিগুলি আক্রমণ করে রোগীর দেহের বিভিন্ন অংশ বা অঙ্গপ্রত্যঙ্গের কোষ-কলাগুলিকেও। -ফাইল ছবি।
করোনাভাইরাসের সবক’টি রূপই রোগীর শরীরে এমন এক ধরনের অ্যান্টিবডি তৈরি করে, যা মানবদেহে অন্যান্য রোগের প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি়গুলিকে আক্রমণ করে। মেরেও ফেলে।
শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর ওই অ্যান্টিবডিগুলি আক্রমণ করে রোগীর দেহের বিভিন্ন অংশ বা অঙ্গপ্রত্যঙ্গের কোষ-কলাগুলিকেও। রোগী সেরে ওঠার পরেও দীর্ঘ দিন ধরে বজায় থাকে এই ক্ষতিকর অ্যান্টিবডিগুলির প্রভাব।
আলফা, বিটা, ডেল্টা, ওমিক্রন। করোনাভাইরাসের সবকটি রূপের সংক্রমণেই রোগীর দেহে তৈরি হয় ক্ষতিকর অ্যান্টিবডিগুলি। কোনও ক্ষেত্রে কম। কোনও ক্ষেত্রে বেশি। তা যেমন মৃদু উপসর্গের রোগীর ক্ষেত্রে হয়, তেমনই তা দেখা যায় উপসর্গহীন রোগীর ক্ষেত্রেও। চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় এই ক্ষতিকর অ্যান্টিবডিগুলিকে বলা হয়— ‘অটোঅ্যান্টিবডি’।
সাম্প্রতিক একটি গবেষণা এই খবর দিয়েছে। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক চিকিৎসাবিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘জার্নাল অব ট্রানস্লেশনাল মেডিসিন’-এ। একটি আন্তর্জাতিক দলের করা এই গবেষণার নেতৃত্ব দিয়েছে আমেরিকার সেডার্স-সিনাই স্মিট হার্ট ইনস্টিটিউট।
এর আগের গবেষণা দেখিয়েছিল, কোভিড ভয়াবহ হয়ে উঠলে রোগীর দেহের স্বাভাবিক প্রতিরোধ ব্যবস্থার উপর এত বেশি চাপ পড়ে যে তার ফলে রোগীর দেহে এই ক্ষতিকর অ্যান্টিবডিগুলি তৈরি হয়ে যায়। যা রোগী সেরে ওঠার পরেও কিছু দিন সক্রিয় থাকে।
এই গবেষণাই প্রথম জানাল, মৃদু উপসর্গের বা উপসর্গহীন রোগীর দেহেও এই ক্ষতিকর অ্যান্টিবডিগুলি তৈরি হয়। আর তা রোগী সেরে ওঠার পরেও অন্তত ৬ মাস সক্রিয় থাকে। যাদের জন্য রোগীর বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ক্ষয়ক্ষতি হতেই থাকে দীর্ঘ সময় ধরে।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, কোভিড কেন অন্যান্য ভাইরাসের সংক্রমণের চেয়ে অভিনব, এই গবেষণা তার কারণ কিছুটা জানাল।
গবেষকরা ১৭৭ জন কোভিড রোগী ও সমসংখ্যক সুস্থ মানুষের রক্তের নমুনার প্লাজমা থেকে অ্যান্টিবডি নিয়ে এই পরীক্ষা চালিয়েছেন গবেষণাগারে।
তাঁরা দেখেছেন, কোভিড মৃদু উপসর্গের বা উপসর্গহীন রোগীর ক্ষেত্রেও নানা ধরনের ক্ষতিকর অ্যান্টিবডি তৈরি করে, যাদের প্রভাব হয় দীর্ঘমেয়াদি।
এদের মধ্যে এমন কয়েকটি ক্ষতিকর অ্যান্টিবডি রয়েছে, যাদের জন্য ক্রনিক প্রদাহ হয়। প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয় ত্বক, সন্ধি ও স্নায়ুতন্ত্রের বিভিন্ন অংশের কোষ, কলাগুলির। আবার এমন কয়েকটি ক্ষতিকর অ্যান্টিবডিরও হদিশ মিলেছে যারা পুরুষের চেয়ে মহিলাদের পক্ষে হয়ে ওঠে বেশি ক্ষতিকারক। বিপজ্জনক।
এ ছাড়াও কোভিড অন্যান্য শ্রেণির ক্ষতিকর অ্যান্টিবডি তৈরি করে কি না, করলে তারা কারা, তা খুঁজে বার করাই গবেষকদের পরবর্তী লক্ষ্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy