Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
International Space Station

Russia-Ukraine Conflict: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে কি আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়ল মহাকাশ স্টেশনের ভবিষ্যত?

রেষারেষির ছাপ পড়বে আমেরিকার সঙ্গে রাশিয়ার মহাকাশ চুক্তিগুলিতে? অনিশ্চিত হয়ে পড়বে মহাকাশ স্টেশনের ভবিষ্যতও?

অনিশ্চিত হয়ে পড়ল মহাকাশ স্টেশনের ভবিষ্যতও? -ফাইল ছবি।

অনিশ্চিত হয়ে পড়ল মহাকাশ স্টেশনের ভবিষ্যতও? -ফাইল ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৮:০১
Share: Save:

ইউক্রেনে রাশিয়ার সেনা অভিযানের ছাপ কি মহাকাশেও পড়তে চলেছে? এই যুদ্ধের জেরে কি মহাকাশে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির গবেষণার কাজকর্ম? রেষারেষির ছাপ কি পড়বে আমেরিকার সঙ্গে রাশিয়ার মহাকাশ চুক্তিগুলিতেও? যার জেরে অনিশ্চিত হয়ে পড়বে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের ভবিষ্যতও?

মহাকাশ বিজ্ঞানী মহলে এখন এই প্রাসঙ্গিক প্রশ্নগুলিই ঘুরপাক খাচ্ছে। কারণ, ইতিমধ্যেই উন্নত শক্তিশালী দেশগুলির জোট জি-৭ ইউক্রেনে রাশিয়ার এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা করেছে। এই জোটে আমেরিকা-সহ ইউরোপের কয়েকটি দেশ রয়েছে যারা বহু দিন ধরেই নিজেদের নিয়োজিত রেখেছে মহাকাশ গবেষণায়। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও। তিনি ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করেছেন। যদিও আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন-সহ মহাকাশে বিভিন্ন কর্মসূচি রূপায়ণে ইতিমধ্যেই আমেরিকা ও ইউরোপের কয়েকটি দেশের সঙ্গে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি রয়েছে রাশিয়ার। আরও কয়েকটি চুক্তি হতে চলেছে। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনেও আমেরিকার পর যদি আর কোনও দেশের কোনও আলাদা মডিউল থাকে তা হলে সেটি রাশিয়ারই। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে এই সেই কর্মসূচিগুলি ব্যাহত হতে পারে বা পুরোপুরি ভেস্তে যেতে পারে বলেও মনে করছেন বিজ্ঞানীদের একাংশ।

মহাকাশ অভিযান শুরুর পর থেকেই আমেরিকা ও রাশিয়ার (তখন সোভিয়েত ইউনিয়ন) মধ্যে শুরু হয়েছিল রেষারেষি। সেই রেষারেষিতে বাতাস জুগিয়েছিল ঠান্ডা যুদ্ধের দশকগুলি। সেই সময় মহাকাশে প্রথম নভশ্চর পাঠিয়েছিল সোভিয়েতই। ১৯৬১-তে। আর তার আট বছর পর আমেরিকা চাঁদে মানুষের প্রথম পদার্পণ ঘটিয়েছিল।

তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই প্রতিযোগিতা স্তিমিত হয়ে এসে হাতে হাতও মিলিয়ে দিতে শুরু করে দু’দেশের। ১৯৭৫-এ আমেরিকা ও সোভিয়েত হাত হাত মিলিয়ে যৌথ ভাবে পৃথিবীর কক্ষপথে নয় দিনের একটি পরীক্ষামূলক অভিযান করেছিল। যার নাম— ‘অ্যাপোলো-সয়ুজ টেস্ট প্রোজেক্ট’। ঠান্ডা যুদ্ধের যুগেই।

তার পর দুটি দেশ হাতে হাত মিলিয়েছিল নয়ের দশকে পৃথিবীর কক্ষপথে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন পাঠানোর ক্ষেত্রেও। তবে গত বছরের প্রায় শেষাশেষি সেই সম্পর্কে ফাটল ধরে। আমেরিকা-সহ কোনও দেশকেই না জানিয়ে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে রাশিয়া কক্ষপথে থাকা তাদের একটি অচল উপগ্রহকে ধ্বংস করায়। যা মহাকাশের আবর্জনা বাড়িয়েছিল আশঙ্কাজনক পরিমাণে। বিপদাপন্ন করে তুলেছিল পৃথিবীকে দিনে ১৫ থেকে ১৬ বার প্রদক্ষিণ করা মহাকাশ স্টেশন। বহু মহাকাশযানকেও।

তবু রাশিয়ার সঙ্গে হাত মিলিয়েই চলছিল আমেরিকা-সহ মহাকাশ গবেষণায় অগ্রণী কয়েকটি দেশ। যে পাঁচটি দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা যৌথ ভাবে পরিচালনা করে মহাকাশ স্টেশন তাদের মধ্যে রয়েছে রুশ সংস্থা ‘রসকসমস’-ও (ইসরো বা চিনা মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নেই)।

বিজ্ঞানীদের বক্তব্য, এ বার ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে আমেরিকা ও রাশিয়ার সম্পর্ক যে স্তরে নেমেছে তাতে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের ভবিষ্যত বেশ কিছুটা অনিশ্চিত হয়ে পড়ল। আগেই ঠিক করা ছিল আর ততটা প্রয়োজন থাকবে না বলে মহাকাশ স্টেশনকে প্রশান্ত মহাসাগরে ছুড়ে ফেলা হবে ২০২৫-এ। কিন্তু কিছু দিন আগেই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বাইডেন মহাকাশ স্টেশনের মেয়াদ ২০৩০ সাল পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা করেন।

ইউক্রেনে পদক্ষেপের প্রেক্ষিতে আমেরিকা কিছু দিন আগে রাশিয়ার বিরুদ্ধে কয়েকটি অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করায় মহাকাশ স্টেশনের কর্মসূচি থেকে বেরিয়ে আসার হুমকি দেয় মস্কো। সেটা হলে উদ্বেগের কারণ রয়েছে অবশ্যই। কারণ, গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে মহাকাশ স্টেশন থেকে নভশ্চরদের পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনার একমাত্র ভরসা রাশিয়ার মহাকাশযান সয়ুজ। নাসা এমন মহাকাশযান পাঠানোর কর্মসূচি বন্ধ করে দিয়েছে এক দশক আগেই। এলন মাস্কের স্পেস-এক্স সংস্থাকে এই কাজের দায়িত্ব দিতে চাইছে নাসা। কিন্তু তা এখনও চূড়ান্ত রূপ পায়নি।

ফলে, মহাকাশ স্টেশনের ভবিষ্যত অনিশ্চিতই হয়ে পড়ল ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে, বলছেন বিজ্ঞানীরা।

অন্য বিষয়গুলি:

International Space Station
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy