চাঁদের মোটরসাইকেলের যে ত্রিমাত্রিক নকশাগুলি এঁকেছিলেন ফ্যাবিশেভ্স্কি, তাদের একটি। ছবি সৌজন্যে- অ্যান্ড্রু ফ্যাবিশেভ্স্কি।
ল্যান্ডার, রোভারের সময় পেরিয়ে আকাশের ‘একফালি চাঁদ’-এও এ বার মোটরসাইকেল চালানোর দিন এসে গেল।
যার অর্থ, চাঁদের বুকে চাকাহীন (ল্যান্ডার) আর ৬ চাকার যান (রোভার)-এর দাপট কমার সময় হয়ে গেল। দু’চাকার মোটরসাইকেলই দাপিয়ে বেড়াতে পারবে চাঁদে।
চাকার সংখ্যা কমলে সেই চন্দ্র-যান মোটরসাইকেলের চেহারাও রোভারের মতো বড় হবে না। ফলে, সঙ্গে সেই মোটরসাইকেল নিয়ে চাঁদে যাওয়ার কাজটাও সহজ হয়ে যাবে। মহাকাশযানের ওজন কমবে। তার ফলে, অনেকটাই কমে যাবে জ্বালানি ও শক্তির খরচও। মহাকাশ-ভ্রমণে যা সবচেয়ে জরুরি। সেখানে তো জ্বালানি ফুরিয়ে গেলে ভরে নেওয়ার সুযোগ নেই আপাতত। বেশি জ্বালানি বা বেশি ওজনের ব্যাটারি সঙ্গে নিয়ে গেলে যে মহাকাশযানের ওজনই বেড়ে যায় শেষ পর্যন্ত! অনেক দূরের পথে যা একেবারেই কাম্য নয়। বিপদের আশঙ্কাও বাড়ে তাতে!
কার নকশা? চলবে কী ভাবে?
চাঁদের এই মোটরসাইকেলের নকশাটি বানিয়েছেন এক রুশ প্রযুক্তিবিদ। অ্যান্ড্রু ফ্যাবিশেভ্স্কি। পেশায় যিনি মস্কোর অটোমোটিভ ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডিজাইনার।
চাঁদের এই মোটরসাইকেল চলবে বিদ্যুৎশক্তিতে। সেই বিদ্যুৎশক্তি উৎপাদনের জন্য মোটরসাইকেলের ভিতরেই থাকবে শক্তিশালী ব্যাটারি। যা সৌরশক্তিতে চালানোর কথাই ভাবা হয়েছে প্রাথমিক ভাবে। ফলে, চাঁদের বুকে মোটরসাইকেল চালাতে প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎশক্তি উৎপাদনেরও কোনও খরচ পড়বে না। শুধু সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে সোলার ব্যাটারি। আরও কিছু যন্ত্রাংশ। খুব সামান্য ওজনের।
ভাবনার সূত্র কী? রূপদান কী ভাবে?
‘অ্যাপোলো-১৫’, ‘অ্যাপোলো-১৬’ এবং ‘অ্যাপোলো-১৭’, নাসার এই তিনটি চন্দ্রাভিযানে চাঁদের বুকে নামানো হয়েছিল যে তিনটি রোভার, তাদের আকার-আকৃতির কথা মাথায় রেখেই এই মোটরসাইকেল বানানোর কথা মাথায় আসে তাঁর, জানিয়েছেন ফ্যাবিশেভ্স্কি।
তিনি এও জানিয়েছেন, ধাপে ধাপে সেই ভাবনা কী ভাবে এগিয়ে গেল। চাঁদের সেই মোটরসাইকেলের ত্রিমাত্রিক বেশ কয়েকটি নকশা এঁকে ফেলেন ফ্যাবিশেভ্স্কি। সেগুলি কার কেমন লাগছে জানতে, বুঝতে ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেন নকশাগুলি। সেগুলি অনেকের সঙ্গে চোখে পড়ে যায় জার্মানির ড্রেসডেনে মোটরসাইকেলের নকশা তৈরির বিশেষজ্ঞ সংস্থা ‘হুকি কো’-র এক পদস্থ কর্তার। তিনিই যোগাযোগ করেন ফ্যাবিশেভ্স্কির সঙ্গে। জানান, নকশাগুলি তাঁর খুবই পছন্দ হয়েছে। তাঁর সংস্থা হুকি কো সেগুলিকে আর শুধুই নকশায় বেঁধে না রেখে বাস্তব রূপ দান করতে চায়। তার জন্য কী কী করণীয় প্রযুক্তির দিক থেকে, সে ব্যাপারে ফ্যাবিশেভ্স্কির পরামর্শ চান হুকি কো-র কর্তা।
চাঁদের মোটরসাইকেলের রং কেন ধবধবে সাদা হবে?
ফ্যাবিশেভ্স্কি জানিয়েছেন, চাঁদের মোটরসাইকেল যতটা সম্ভব হাল্কা করার চেষ্টা হচ্ছে। দু’টি চাকা চালানো হবে বিদ্যুৎশক্তিতে। থাকবে ইলেকট্রিক সাসপেনসনও। আর সেই মোটরসাইকেলের রং হবে ধবধবে সাদা। যাতে সূর্যালোকের যতটা সম্ভব প্রতিফলন ঘটানো যায়। তাতে চাঁদের বুকে বহু দূর পথ পাড়ি দিয়েও গরম হয়ে পড়বে না মোটরসাইকেল। চাঁদে যে বায়ুমণ্ডল নেই, যা সূর্যের তাপ কিছুটা হলেও রুখতে পারে। তবে মোটরসাইকেলকে কাঙ্খিত গতিতে চালানোর জন্য দরকার হয় কিছুটা মসৃণ রাস্তা। তাই চাঁদেরও যে অংশ কম এবড়োখেবড়ো সেখানেই চালানো হবে এই মোটরসাইকেল।
ছবি ও নকশা সৌজন্যে- অ্যান্ড্রু ফ্যাবিশেভ্স্কি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy