ক্ষেতে কীটনাশক মারতে একটি অভিনব ‘স্প্রেয়ার’ যন্ত্র উদ্ভাবন করলেন খড়্গপুরের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (আইআইটি খড়্গপুর)-র অধ্যাপক, গবেষকরা। যন্ত্রটি চলতে পারে সৌরশক্তিতে। পেট্রোল, ডিজেলের দরকার হয় না। ফলে দূষণ ছড়ানোর সম্ভাবনাও থাকে না।
খড়্গপুর আইআইটি-র একটি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ‘এই স্প্রেয়ার চাষের জমিতে সব জায়গায় সম পরিমাণে কীটনাশক ছড়াতে পারবে। অনেক বেশি পরিমাণ জমিতে, অনেক কম সময়ে। আবার ওজনে খুব বেশি ভারী নয়, আর তার চাকাগুলিও সাইকেলের মতো বলে কীটনাশক ছড়ানোর সময় সদ্য পোঁতা বীজ বা ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠা ফসলও তার চাপে পিষে গিয়ে নষ্ট হবে না। এর ফলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি কৃষকরা খুবই উপকৃত হবেন।
যন্ত্রটি উদ্ভাবনের কৃতিত্ব খ়ড়্গপুর আইআইটি-র কৃষি ও খাদ্য ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক হিফজুর রহমান তাঁর সহযোগী গবেষকদের।
ছোট ছোট চাষের জমিতে এখন হাতে করে কীটনাশক ছড়ানো হয়। তাতে জমির সর্বত্র সম পরিমাণে কীটনাশক পড়ে না। তাই কীটনাশক ছড়ানোর পরেও বহু ফসল নষ্ট হয়ে যায়।
এই যন্ত্রে রয়েছে একটি প্রোপেলিং ইউনিট। তার সঙ্গে লাগানো রয়েছে একটি তরল কীটনাশক রাখার ট্যাঙ্ক। সেখান থেকে স্প্রে করে জমিতে স্প্রে করে কীটনাশক ফেলার জন্য ডিসি বিদ্যুতে চালানো একটি পাম্পও রয়েছে। সেই পাম্পটিকে চালানোর জন্য রয়েছে দু’টি সৌরশক্তিচালিত ব্যাটারি। গোটা যন্ত্রটিকে বসানো রয়েছে তিন চাকার একটি ট্রলিতে।
‘‘বড় চাষের জমিতে ট্রাক্টর দিয়ে কীটনাশক ছড়ানো হয়। তার খরচও অনেক। ট্রাক্টর চালানোর জন্য পরিবেশ দূষণও হয়। তার কোনওটাই হবে না ছোট চাষের জমিগুলিতে এই যন্ত্রের মাধ্যমে কীটনাশক ছড়ানো হলে’’, বলছেন যন্ত্রটির উদ্ভাবকদের অন্যতম অধ্যাপক হিফজুর রহমান। তাঁর বক্তব্য, ভারতে মোট কৃষকের ৮২ শতাংশই ক্ষুদ্র ও মাঝারি কৃষক। ফলে, ইতিমধ্যেই সরকারি পেটেন্ট করানো এই যন্ত্রের মাধ্যমে অনেক বেশি সংখ্যক কৃষক উপকৃত হবেন।