Advertisement
১৭ ডিসেম্বর ২০২৪
Mathematics

গণিতের ১৬১ বছরের জটিল সমস্যার জট খুললেন কুমার ঈশ্বরন

২০০০ সালে ক্লে ম্যাথমেটিক্স ইনস্টিটিউট অব কেম্ব্রিজ ঘোষণা করেছিল, রাইম্যান হাইপোথিসিস প্রমাণ করা গেলে ১০ লক্ষ ডলার অর্থপুরস্কার দেওয়া হবে।

-ফাইল ছবি।

-ফাইল ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০২১ ১৬:১৬
Share: Save:

এক হাজার বছরেও যা সম্ভব নয় বলে বিশ্বের খ্যাতনামা গণিতবিদদের একাংশ মনে করতেন, অঙ্কশাস্ত্রের ১৬১ বছরের পুরনো সেই জটিল সমস্যার জট খুললেন এক ভারতীয়। হায়দরাবাদের শ্রীনিধি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (এসএনআইএসটি)-র গাণিতিক পদার্থবিদ কুমার ঈশ্বরন। প্রমাণ করলেন ‘রাইম্যান হাইপোথিসিস’।

দেখালেন, ১ থেকে শুরু করে ১০০ কোটি বা ১ হাজার কোটির মধ্যে খুব বিশাল আকারের প্রাইম (মৌলিক) সংখ্যা মোট ক’টি রয়েছে, সেটাও খুব সহজে গণনা করে বলে দেওয়া যেতে পারে। ১৬১ বছর আগে তাঁর হাইপোথিসিসে যার পূর্বাভাস দিয়েছিলেন গণিতজ্ঞ রাইম্যান। কিন্তু সেটা আগামী ১ হাজার বছরেও প্রমাণ করা যাবে না বলে বিশ্বাস করতেন গণিতজ্ঞদের একাংশ। ২০০০ সালে ক্লে ম্যাথমেটিক্স ইনস্টিটিউট অব কেম্ব্রিজ ঘোষণা করেছিল, রাইম্যান হাইপোথিসিস প্রমাণ করা গেলে ১০ লক্ষ ডলার অর্থপুরস্কার দেওয়া হবে। ঈশ্বরন প্রমাণ করে দিয়েছেন সেটা সম্ভব।

কী ভাবে সেটা বুঝতে হলে আগে জেনে নেওয়া ভাল গণিতশাস্ত্রে মৌলিক (প্রাইম) সংখ্যা বলতে কী বোঝায়? মৌলিক সংখ্যা হল সেই সংখ্যা, যাকে শুধু সেই সংখ্যা দিয়েই ভাগ করা সম্ভব। অন্য কোনও সংখ্যা দিয়ে ভাগ করা যাবে না। ১ থেকে ১০-এর মধ্যে থাকা এমন মৌলিক সংখ্যাগুলি হল- ৩, ৫, ৭। কিন্তু বিজোড় সংখ্যা ৯ নয়। কারণ, ৯-কে ৩ দিয়ে ভাগ করা যায়। এ ছাড়াও রয়েছে আর এক ধরনের সংখ্যা। তাদের নাম যৌগিক (কম্পোজিট) সংখ্যা। ১ থেকে ১০-এর মধ্যে এমন যৌগিক সংখ্যাগুলি হল ৪, ৬, ৮ এবং ১০। প্রতিটি সংখ্যাকেই ওই সংখ্যাগুলি ছাড়াও অন্য সংখ্যা দিয়ে ভাগ করা যায়। যেমন ৪-কে ভাগ করা যায় ২ দিয়ে, ৬-কে ৩ এবং ২ দিয়ে। ৮-কে ৪ এবং ২ দিয়ে। ১০-কে ৫ এবং ২ দিয়ে।

আরও পড়ুন

করোনার প্রতিষেধক কি প্রভাব ফেলছে ঋতুচক্রের উপরে? তবে কি টিকা নেবেন না

আরও পড়ুন

নিভৃতবাসে কাটছে দিন? নিজেকে যত্নে রাখবেন কোন উপায়ে


১ থেকে ২০ পর্যন্ত ক’টি মৌলিক সংখ্যা রয়েছে, তা খুব সহজে বলে দেওয়া যায়। কিন্তু ১ থেকে ১০ লক্ষ বা ১ হাজার কোটির মধ্যে ঠিক ক’টি মৌলিক সংখ্যা রয়েছে তা বলা সম্ভব হয় না। ১৬১ বছর আগে দেওয়া তাঁর হাইপোথিসিসে রাইম্যান বলেছিলেন, সেটাও সম্ভব হতে পারে।

কিন্তু শুধু পূর্বাভাস দিলেই তো হবে না গণিত ও বিজ্ঞানে সব কিছুই প্রমাণ-নির্ভর। সেই প্রমাণ শেষ পর্যন্ত তিনি দিতে পেরেছেন বলে দাবি ইশ্বরনের।

তাঁর দাবির সপক্ষে পর্যাপ্ত যুক্তি দিয়ে পাঁচ বছর আগে ইন্টারনেটে তাঁর মতামত প্রকাশ করেছিলেন ইশ্বরন। কিন্তু ‘দ্য ফাইনাল অ্যান্ড এগজস্টিভ প্রুফ অব দ্য রাইম্যান হাইপোথিসিস ফ্রম ফার্স্ট প্রিন্সিপালস’ শীর্ষক তাঁর গবেষণাপত্রটি কোনও আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা পিয়ার রিভিউয়ের জন্য মনোনীত করেনি। কিন্তু সেই গবেষণাপত্রটি ইন্টারনেটে হাজারে হাজারে ডাউনলোড হচ্ছে দেখে ৮ জন গণিতজ্ঞ ও তাত্ত্বিক পদার্থবিদদের নিয়ে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠিত হয়। সেই কমিটি বিশ্বের প্রায় দেড় হাজার গণিতজ্ঞকে আমন্ত্রণ জানায় ইশ্বরনের গবেষণাপত্রটির উপর তাঁদের মতামত দিতে।

“বিশেষজ্ঞদের সেই কমিটি সকলের মতামত বিচার করে জানিয়েছে, ইশ্বরনের গবেষণাপত্র সঠিক। অভ্রান্ত”, জানিয়েছেন মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশিষ্ট তাত্ত্বিক পদার্থবিদ এস সীতারমন। বিশেষজ্ঞ কমিটির আমন্ত্রণে গবেষণাপত্রটি যাঁরা রিভিউ করেছেন, সীতারমন তাঁদের অন্যতম।

অন্য বিষয়গুলি:

Mathematics
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy