হাবল স্পেস টেলিস্কোপ। ছবি- নাসার সৌজন্যে।
ব্রহ্মাণ্ডের নানা দিকে টানা ৩০ বছর ধরে নজর রেখে বহু যুগান্তকারী আবিষ্কারের হাতিয়ার হাবল টেলিস্কোপ নিয়ে উত্তরোত্তর উদ্বেগ বাড়ছে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা-র। কারণ, বিগড়ে যাওয়ার পরেও হাবলের ভিতরে থাকা মূল পরিচালক পেলোড কম্পিউটারটি এখনও কোনও সাড়া-শব্দ করছে না বলে নাসার জেট প্রোপালসন ল্যাবরেটরি (জেপিএল)-এর তরফে বৃহস্পতিবার জানানো হয়েছে। এর মধ্যে বার তিনেক চেষ্টা হয়েছে তাকে জাগিয়ে তোলার। কাজ হয়নি। সেটিকে আদৌ সারিয়ে তোলা যাবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্টই সংশয়ে নাসার এই প্রকল্পের বিজ্ঞানীরা। আটের দশকে বানানো হয়েছিল এই পেলোড কম্পিউটার। আর সেটিকে সঙ্গে নিয়ে হাবল উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল ১৯৯০-এ।
গত তিন দশক ধরে ব্রহ্মাণ্ডের নানা দিকের অগণ্য অজানা তথ্য সভ্যতার হাতে তুলে দিয়েছে হাবল। যার কাছে শুধু নাসা-ই নয়, ঋণী ‘ইসরো’, ‘ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি’, ‘জাপান স্পেস এজেন্সি (জাক্সা)’, রুশ মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘রসকসমস’-সহ বিশ্বের সবকটি মহাকাশ গবেষণা সংস্থাই।
নাসা-র উদ্বেগের আরও কারণ, পেলোড কম্পিউার কেন বিগড়ে গেল জানতে গত ১২ দিন ধরে যে সব প্রক্রিয়া চালানো হয়েছে নাসার গ্রাউন্ড স্টেশন থেকে, তাতে কম্পিউটার সাড়া দেয়নি। পরে দেবে, এরকম ভরসাও নেই নাসার হাবল প্রকল্পের বিজ্ঞানীদের। সে ক্ষেত্রে হাবল স্পেস টেলিস্কোপটিকে ফের চালু করতে নাসার বিজ্ঞানীরা একটি বিকল্প উপায়ের কথা ভাবতে শুরু করেছেন বলে জেপিএল সূত্রে খবর। সেই উপায়টি হল হাবলে থাকা ব্যাকআপ কম্পিউটারটিকে চালু করা। তবে সে ক্ষেত্রেও কিছু সমস্যা রয়েছে। কারণ, বিগড়ে যাওয়া পেলো়ড কম্পিউটারের ‘মেমোরি মডিউল’-এ বেশ কয়েক দিন আগেই ক্ষয় ধরা পড়েছিল। তাই শেষের দিকে ওই কম্পিউটার ব্রহ্মাণ্ড পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত যে সব তথ্য সঞ্চয় করেছিল আর হাবল টেলিস্কোপের বিভিন্ন যন্ত্রাংশকে পরিচালনার যে সব কমান্ড দিয়েছিল তা ব্যাকআপ কম্পিউটারে পাওয়া যাবে কি না তা নিয়েও যথেষ্টই সংশয়ে নাসা। ব্যাকআপ কম্পিউটারটি হাবল টেলিস্কোপে জুড়ে দিয়ে আসা হয়েছিল ২০০৯ সালে। কিন্তু তার পর সেটিকে আর পরখও করে দেখা হয়নি মহাকাশে। তাই ব্যাকআপ কম্পিউটারও কাজ করবে কি না, নিশ্চিত হতে পারছেন না নাসার এই প্রকল্পের বিজ্ঞানীরা।
নাসা আর যেটা করতে পারত এখন সেটাও করতে পারছে না। সেটা হল- মহাকাশচারীদের পাঠিয়ে কক্ষপথ থেকে হাবলের বিগড়ে যাওয়া পেলোড কম্পিউারটিকে সারিয়ে তোলা। কিন্তু ২০১১-র পর হাবলের জন্য স্পেস শাটল পাঠানোর অভিযানও বন্ধ করে দিয়েছিল নাসা।
এত সব উদ্বেগের মধ্যে আশার খবর একটাই। তা হল, হাবলের চেয়েও আধুনিক জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ (জেডব্লিউএসটি) এ বছরের শেষাশেষি মহাকাশে পাঠাচ্ছে নাসা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy