Advertisement
E-Paper

গাছে আলোর বাহারে ক্ষতিকর প্রভাব জীবজগতে

পরিবেশ রক্ষা, সবুজায়নের জন্য সচেতনতার প্রচার ও বছরভর নানা কর্মসূচি পালন করে প্রশাসন। প্রশ্ন উঠছে, তাদের নজরে কেন এই বিষয়টি আসে না?

An image of tree

—প্রতীকী চিত্র।

কাজল গুপ্ত

শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:০০
Share
Save

বড়দিন থেকে বর্ষবরণ— উৎসবকে কেন্দ্র করে রকমারি বাহারি আলোকমালায় সেজেছে শহর। বাদ যায়নি রাস্তার ধারের গাছও। এখনও গাছে জড়ানো রং-বেরঙের আলো রাতভর জ্বলতে থাকে। কলকাতার দেখাদেখি শহরতলি জুড়েও এখন এই আলোয় সাজানোর প্রতিযোগিতা। বিধাননগর, দক্ষিণ দমদম, উত্তর দমদম এবং দমদম পুরসভাও তাই পিছিয়ে নেই। কিন্তু এই আলোয় ব্যাহত হচ্ছে পাখি, কীট-পতঙ্গের শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া। পরিবেশবিদদের মতে, এর প্রভাব সরাসরি পড়ছে পরিবেশে।

পরিবেশ রক্ষা, সবুজায়নের জন্য সচেতনতার প্রচার ও বছরভর নানা কর্মসূচি পালন করে প্রশাসন। প্রশ্ন উঠছে, তাদের নজরে কেন এই বিষয়টি আসে না? দমদম থেকে বিধাননগরের বহু বাসিন্দার অভিযোগ, অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরেও রাতভর আলোর বন্যা বয়ে যায় এলাকায়। কেন গভীর রাতে আলো নেভানো হয় না? এই প্রশ্ন রাখা হয়েছিল বিধাননগর, দক্ষিণ দমদম, উত্তর দমদম এবং দমদম পুর কর্তৃপক্ষের কাছে। তাঁরা
জানিয়েছেন, এই নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হবে।

পরিবেশবিজ্ঞানী স্বাতী নন্দী চক্রবর্তী জানাচ্ছেন, উদ্ভিদকে ঘিরে জীববৈচিত্র রয়েছে, সেখানে রাতে এমন আলোয় অবশ্যই ক্ষতি হয় জীবজগতের। পাখি, কীটপতঙ্গের শারীরবৃত্তীয় ও জৈবিক কার্যকলাপ ব্যাহত হয়। আলোয় যে কৃত্রিম তাপ উৎপন্ন হয়, তাতেও বহু কীটপতঙ্গ মারা যায়। এটা চিন্তার বিষয়। কারণ, এই ক্ষতি দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলছে। এমন আলোর ব্যবহার দ্রুত বন্ধ করা প্রয়োজন।

কিন্তু ক্ষতি জেনেও তা আদৌ বন্ধ হবে কি? যেমন, সব জেনেও বহু বছর ধরে চলে আসছে গাছে পেরেক লাগিয়ে হোর্ডিং-ব্যানার লাগানোর কাজ। সর্ব স্তরের অভিযোগ, প্রশাসন মুখে বললেও আদৌ কোনও পদক্ষেপ করে না। দমদমের বাসিন্দা সুস্মিত রায়ের কথায়, ‘‘যে কোনও সামাজিক বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেই গাছে আলো দেওয়ার রেওয়াজ শুরু হয়েছে। সে সব রাতভর জ্বলে। এই বিষয়ে কেউ ভাবেন না। অথচ, এ সব রুখতে কড়া আইন থাকা উচিত। সে সব আছে কি? থাকলেও ক’জন জানেন?’’

বিধাননগরের মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী জানান, পরিবেশের রক্ষা করতে প্রশাসন সব চেষ্টা চালাচ্ছে। উৎসব শেষ হলে ওই সব রঙিন আলো খুলে ফেলা হয়। তবুও এই কাজ নিয়ন্ত্রণ করতে, সব পুর প্রতিনিধিদের নিয়ে চেষ্টা করা হবে। এ বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে জোর দেওয়া হবে। দমদম পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান বরুণ নট্ট দাবি করেন, গাছের গায়ে পেরেক পুঁতে ব্যানার-হোর্ডিং লাগানো বন্ধ করার বিষয়ে পুরসভা ইতিমধ্যেই পদক্ষেপ করেছে। তবে রাতে গাছে আলো লাগানো নিয়ে আলোচনা করা হবে। দক্ষিণ দমদম এবং উত্তর দমদমের পুরকর্তাদের অনেকেই জানাচ্ছেন, গাছে আলো লাগানোর বিষয়টি বন্ধ করা নিয়ে এখনও কোনও ভাবনাচিন্তা হয়নি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Lights Trees animals

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}