ট্রোজান গ্রহাণুদের মুলুকে পাড়ি জমাল নাসার লুসি মহাকাশযান। শনিবার বিকেলে। ছবি- টুইটারের সৌজন্যে।
সৌরমণ্ডলের যে মুলুকে এর আগে আর ‘পা’ পড়েনি সভ্যতার, নাসার মহাকাশযান এ বার গেল সেই গন্তব্যে। সৌরমণ্ডলের বৃহত্তম গ্রহ বৃহস্পতির কক্ষপথে থাকা ট্রোজান গ্রহাণুদের (ট্রোজান অ্যাস্টারয়েডস) পাড়ায়।
ভারতীয় সময় শনিবার বিকেল ৩টা ৫ মিনিটে আমেরিকার ফ্লোরিডায় কেপ ক্যানাভেরাল থেকে ‘অ্যাটলাস ভি’ রকেটে চেপে ট্রোজানদের পাড়ায় যাওয়ার লক্ষ্যে মহাকাশে পাড়ি জমাল নাসার ‘লুসি’ মহাকাশযান। লুসি-ই প্রথম কোনও সৌরশক্তি চালিত মহাকাশযান যা কি না সৌরমণ্ডলে সূর্য থেকে এতটা দূরে যাচ্ছে। আদিমতম মানুষের বিশেষ একটি প্রজাতির নামেই নামকরণ করা হয়েছে নাসার এই মহাকাশযানের।
টানা ১২ বছর ধরে বৃহস্পতির কক্ষপথের ওই পাড়ায় ৮টি ট্রোজান গ্রহাণুকে খুব কাছ থেকে চিনতে, জানতে, বুঝতে। সেগুলির রং কেন কোনওটা লালচে হলে অন্যটা ধূসর বা কালো অথবা বাদামি, কেন সেই নানা রঙের খেলা ট্রোজানদের মুলুকে, সৌরমণ্ডল তৈরি হওয়ার সময় সোনা, প্ল্যাটিনাম, লোহা, নিকেল, কোবাল্টের মতো কী কী মূল্যবান মৌল দিয়ে সেগুলি গড়ে উঠেছিল, আর সেই সব মূল্যবান অথচ অতি প্রয়োজনীয় মৌলগুলি ট্রোজান গ্রহাণুগুলিতে কী পরিমাণে রয়েছে, তা জরিপ করতেই নাসার এই অভিযান।
নাসার তরফে জানানো হয়েছে, এই অভিযান তো সৌরমণ্ডল তৈরির আদত ইতিহাস জানতে সহায়ক হবেই, পৃথিবীর প্রাকৃতিক সম্পদ যখন দ্রুত নিঃশেষ হওয়ার মুখে তখন ওই সব গ্রহাণু থেকে নানা ধরনের মূল্যবান মৌল নিয়ে আসা সম্ভব কি না, তা কী পরিমাণে পৃথিবীতে আনা সম্ভব হতে পারে, তা বুঝতেই লুসি যাচ্ছে ট্রোজান গ্রহাণুদের মুলুকে।
যাত্রাপথে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণের বাড়তি শক্তি নিতে এই নীলাভ গ্রহটির পাশ দিয়েও তিন বার উড়ে যাবে লুসি। ১২ বছরে। সৌরমণ্ডলের বাইরের প্রান্তে গিয়ে লুসি-র আগে আর কোনও মহাকাশযানই আবার পৃথিবীর কাছাকাছি ফিরে আসেনি। তাই এ ব্যাপারেও লুসি দৃষ্টান্ত গড়ে তুলতে চলেছে বলে জানিয়েছে নাসা।
নাসার সায়েন্স মিশনের অ্যাসোসিয়েট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর থমাস জুরবুচেন বলেছেন, ‘‘যে ট্রোজান গ্রহাণুগুলিতে যাচ্ছে লুসি, তার প্রত্যেকটিই সৌরমণ্ডল তৈরির ইতিহাস জানাতে পারবে। আগামী দিনে পৃথিবীর ফুরিয়ে আসা প্রাকৃতিক সম্পদের বিকল্প পথেরও হদিশ দিতে পারবে এই ট্রোজান গ্রহাণুগুলি।’’
ঠিক ৪ বছরের মাথায় ২০২৫-এ লুসি প্রথম যে গ্রহাণুটিতে পৌঁছবে তার নাম ‘ডোনাল্ড জোহানসন’। এটি কিন্তু বৃহস্পতির কক্ষপথে ট্রোজান গ্রহাণুদের মুলুকে নেই। রয়েছে মঙ্গল ও বৃহস্পতির মাঝখানে যে গ্রহাণুপুঞ্জ (‘অ্যাস্টারয়েড বেল্ট’) রয়েছে, সেখানেই। আদিমতম মানুষের বিশেষ প্রজাতি লুসি-র আবিষ্কারকের নামেই নামকরণ করা হয়েছে গ্রহাণুটির।
লুসি বাকি ৭টি গ্রহাণুতে যাবে ২০২৭ থেকে ২০৩৩ সালের মধ্যে। সেই সবকটিই রয়েছে বৃহস্পতির কক্ষপথে। সেগুলি ট্রোজান গ্রহাণু।
গ্রাফিক সৌজন্যে- নাসা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy