অ্যাপোফিস। ছবি- নাসার সৌজন্যে।
আইফেল টাওয়ারের মতো উঁচু সুবিশাল একটি গ্রহাণু (‘অ্যাস্টারয়েড’) এসে পড়েছে পৃথিবীর কাছেপিঠে। যা ফের পৃথিবীর কাছেপিঠে আসবে ৮ বছর পর। ২০২৯-এ। এই গ্রহাণুটিকে নিয়ে খুবই উদ্বেগে, দুশ্চিন্তায় রয়েছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। কারণ ৮ বছর পর এটি এতটাই কাছে চলে আসবে পৃথিবীর যে, তা সভ্যতার পক্ষে হয়ে উঠতে পারে অত্যন্ত বিপজ্জনক।
গ্রহাণুটির নাম ‘অ্যাপোফিস’। প্রাচীন মিশরের রাক্ষস। যার প্রথম আবিষ্কার হয়েছিল ১৭ বছর আগে। ২০০৪-এ।
নাসা জানিয়েছে, পৃথিবী থেকে চাঁদ যতটা দূরে রয়েছে (প্রায় ৩ লক্ষ কিলোমিটার) এই গ্রহাণুটি শনিবার দুপুরে তার ৪০ গুণের একটু বেশি দূর দিয়ে বেরিয়ে যাবে সৌরমণ্ডলের অন্য প্রান্তে। পৃথিবীর এতটা কাছাকাছি গ্রহাণুটি আসবে আবার ২০২৯ সালের ১৩ এপ্রিল। সেই সময় গ্রহাণুটি চলে আসবে পৃথিবীর দূরের কক্ষপথের মধ্যে। যে কক্ষপথে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে চলেছে বেশ কয়েকটি কৃত্রিম উপগ্রহ।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, সেই সময় কক্ষপথে থাকা কৃত্রিম উপগ্রহগুলিকে সজোরে ধাক্কা মারতে পারে অ্যাপোফিস। সে সময় তার গতিবেগ যদি আরও বেশি থাকে, তা হলে এমনকি তা আছড়েও পড়তে পারে পৃথিবীতে। তা হলে আরও সর্বনাশ। এত বড় আকারের গ্রহাণু আছড়ে পড়লে মহাবিপর্যয়ের আশঙ্কা থেকেই যায়। অতীতে বহু বারই পৃথিবীতে প্রাণের গণবিলুপ্তি ঘটেছে বিশাল গ্রহাণু আছড়ে পড়ার জন্যই।
নাসার ‘জেট প্রোপালসান ল্যাবরেটরি (জেপিএল)’-র রাডার বিশেষজ্ঞ মারিনা বোরজোভিক বলেছেন, ‘‘৮ বছর পর আমাদের জন্য কতটা বিপজ্জনক হয়ে উঠতে চলেছে অ্যাপোফিস, তা বুঝতে সাহায্য করবে এ বার গ্রহাণুটির পৃথিবীর কাছেপিঠে আসা। সেখান থেকেই আমরা পরিমাপ করতে পারব, কেমন গতিবেগে সেটি আমাদের কাছে আসবে ৮ বছর পর। সেটি কতটা বিপজ্জনক হতে পারে সভ্যতার পক্ষে।’’
নাসা জানিয়েছে, অ্যাপোফিস ১ হাজার ১২০ ফুট বা ৩৪০ মিটার চওড়া। যা খুব শক্ত পাথর, লোহা আর নিকেল দিয়ে তৈরি। সূর্যকে এক বার প্রদক্ষিণ করতে যা ১১ মাস সময় নেয়। পৃথিবী থেকে যতটা দূরত্বে এ বার বেরিয়ে যাবে, অ্যাপোফিস তাতে খালি চোখে তাকে দেখা সম্ভব হবে না। তবে ক্যালিফোর্নিয়ায় নাসার গোল্ডস্টোন ডিপ স্পেস কমিউনিকেশন্স কমপ্লেক্স ও পশ্চিম ভার্জিনিয়ায় বসানো গ্রিন ব্যাঙ্ক টেলিস্কোপ থেকে গ্রহাণুটির উপর কড়া নজর রাখা হচ্ছে বলে নাসার তরফে জানানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy