পালক পতন বা সফ্ট ল্যান্ডিং হয়নি বিক্রমের।
চাঁদের মাটিতে খোঁজ মিলল বিক্রমের। তবে সে ‘জীবিত’ নাকি ‘মৃত’ তা স্পষ্ট হয়নি। এমনকি তার শরীরে আঘাত নিয়েও কোনও তথ্য জানাতে পারেনি ইসরো। রবিবার ইসরোর চেয়ারম্যান কে শিবন জানিয়েছেন, অরবিটারের পাঠানো তাপচিত্র বা থার্মাল ইমেজ থেকে বিক্রমের অবস্থান জানা গিয়েছে। বেঙ্গালুরুর নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র থেকে তার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা হচ্ছে। তবে রবিবার রাত পর্যন্ত যোগাযোগ স্থাপন করা যায়নি। আদৌ তা সম্ভব হবে কি না, তা নিয়েও ধন্দ রয়েছে।
কারণ পালক পতন বা সফ্ট ল্যান্ডিং হয়নি বিক্রমের। চন্দ্রপৃষ্ঠে আছড়ে পড়ায় (হার্ড ল্যান্ডিং) সেটির কলকব্জা কী অবস্থায় রয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। শিবনের কথায়, ‘‘বিক্রমের ক্ষতি হয়েছে কি না, তা এখনও আমরা জানি না।’’ ইসরো বলছে, বিক্রমের ছবিটি চন্দ্রযান-২ এর অরবিটারের ইনফ্রা-রেড ক্যামেরায় তোলা। তবে সে ছবিটি এ দিন তোলা হয়েছে, না কি শুক্রবার গভীর রাতের, তা জানানো হয়নি।
বিক্রম কোথায়?
• চাঁদের মাটিতে। সম্ভবত, অবতরণস্থলের কাছেপিঠেই।
সেটির অবস্থা কী?
• তাপচিত্রে স্পষ্ট বোঝা যায় না। কে শিবন মেনে নিয়েছেন, আছড়ে পড়েছে বিক্রম।
কী ক্ষতি হতে পারে?
• চারটি পা ভেঙে যেতে পারে। অ্যান্টেনা ও সোলার প্যানেলের ক্ষতি হতে পারে। মুখ ঘুরে গেলেও শক্তি জোগাবে না। কাজ করবে না বিক্রম।
কেন এমন হল?
• ইসরো খতিয়ে দেখছে। কেউ বলছেন, গতি নিয়ন্ত্রক রকেট পুরো কাজ করেনি। কারও মতে, অবতরণের সময় পরিস্থিতি প্রতিকূল ছিল।
ফের যোগাযোগ সম্ভব?
• শিবন বলেছেন, ১৪ দিন ধরে চেষ্টা চালাবে। যদিও বিজ্ঞানীদের অনেকেরই ধারণা, কার্যত অসম্ভব।
বিজ্ঞানীদের অনেকে বলছেন, চাঁদকে পাক খাচ্ছে অরবিটার। বর্তমানে সেটি যেখানে রয়েছে, সেখান থেকে বিক্রমের ছবি তোলা সম্ভব নয়। ফলে এটি শুক্রবার গভীর রাতে তোলা ছবি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। তা ছাড়া, এটি আলোকচিত্র নয়, চারপাশের সঙ্গে তাপের তারতম্যের ভিত্তিতে তৈরি এই ছবি স্পষ্ট বা তেমন নিখুঁত নয়। ছবির মান উন্নত নয়। অবশ্য অন্য একটি উন্নত ক্যামেরা রয়েছে অরবিটারে। আগামী দিনে তার ছবি মিলতে পারে।
Indian Space Research Organisation (ISRO) Chief, K Sivan to ANI:We've found the location of #VikramLander on lunar surface&orbiter has clicked a thermal image of Lander. But there is no communication yet. We are trying to have contact. It will be communicated soon. #Chandrayaan2 pic.twitter.com/1MbIL0VQCo
— ANI (@ANI) September 8, 2019
শিবন জানাচ্ছেন ১৪ দিন বিক্রমেরসঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা চলবে। যদিও ইসরোর অনেকে বলছেন, সেটা প্রায় অসম্ভব। বিক্রম তৈরি হয়েছিল সফ্ট ল্যান্ডিংয়ের জন্য। আছড়ে পড়ায় এর চারটি পা ভেঙেচুরে যাবে। ক্ষতি হবে সোলার প্যানেল ও অ্যান্টেনার। কাত হয়ে পড়লেও কাজ করতে পারবে না। বিক্রমের অ্যান্টেনা কিংবা সৌরকোষের প্যানেলের হাল কী, তা অরবিটারের তাপচিত্রে স্পষ্ট হয়নি।
ঐতিহাসিক দ্বিতীয় চন্দ্র অভিযান
শুক্রবার রাতে চাঁদের মাটি থেকে মাত্র ২.১ কিলোমিটার উঁচুতে থাকার সময় যোগাযোগ হারায় বিক্রম। তীরে এসে কেন এই ব্যর্থতা, তা নিয়ে বিশ্লেষণ চলছে ইসরোর ‘ব্যর্থতা বিশ্লেষণ কমিটি’-তে। শনিবার শিবন জানিয়েছেন, অবতরণের শেষ পর্যায় ঠিক মতো হয়নি। ইসরো সূত্রে এ-ও বলা হচ্ছে, বিক্রমের গতি নিয়ন্ত্রক ইঞ্জিন বা থ্রাস্টার রকেটগুলি ঠিক মতো কাজ করেনি। তার ফলেই গতির তাল কেটে গিয়ে গোত্তা খেয়ে থাকতে পারে সে। তার গতিপথের রেখচিত্রেও সেই ইঙ্গিত মিলেছে। কেউ কেউ আবার চাঁদে অবতরণের সময় প্রতিকূল পরিস্থিতির কথাও বলেছেন।
তাপচিত্র বিষয়টি কী?
• সব বস্তু থেকে তাপ বিকিরিত হয়। সেই তাপকে চিহ্নিত করে বিশেষ ক্যামেরায় যে-ছবি তোলা হয়, সেটাই থার্মাল ইমেজ বা তাপচিত্র। মূলত ইনফ্রা-রেড রশ্মি বিকিরণের মাধ্যমে ছবি তোলা হয়।
কেমন ছবি?
অবয়ব ধরা পড়ে। কিন্তু খুঁটিনাটি নয়। ঘোর অন্ধকারেও ছবি সম্ভব।
তবে দেশ-বিদেশের বিজ্ঞানীদের অনেকেই বলছেন, উপগ্রহ বা ভিন্ গ্রহে মহাকাশযানের সফ্ট ল্যান্ডিংয়ের ক্ষেত্রে বিপর্যয় বা ব্যর্থতা অস্বাভাবিক কিছু নয়। ইসরোর ওয়েবসাইট বলছে, বিক্রমের আগে অন্যান্য দেশ মোট ৩৮ বার সফ্ট ল্যান্ডিংয়ের চেষ্টা করেছে। তার মধ্যে ব্যর্থতার হার ৫২ শতাংশ। তাই বিক্রমে ব্যর্থ হলেও ইসরো প্রশংসা কুড়িয়েছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার। তারা
জানিয়েছে, ইসরোর অভিযানে তারা অনুপ্রাণিত। ভবিষ্যতে তারা ভারতের সঙ্গে যৌথ মহাকাশ গবেষণায় আগ্রহী। আর ডিআরডিও-র প্রাক্তন বিজ্ঞানী এ এস পিল্লাইয়ের দাবি, ১০ বছরের মধ্যে চাঁদের ভারতীয় ঘাঁটি হিলিয়াম-৩ নিষ্কাশন শুরু করে দিতে পারবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy