Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

ডাকছে ইসরো, এখনও সাড়া নেই বিক্রমের

তবে ইতিমধ্যে ইসরো জানিয়েছে, এক বছর কাজ করার কথা থাকলেও অরবিটারটি সাত বছর ধরে কাজ করতে পারবে। কারণ,  সফল ও উন্নত উৎক্ষেপণের ফলে অরবিটারের জ্বালানি কম খরচ হয়েছে এবং কর্মক্ষমতা বেড়ে গিয়েছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:৩৩
Share: Save:

বেঙ্গালুরুতে ইসরো’র কন্ট্রোল রুম থেকে যোগাযোগের চেষ্টা চলছেই। কিন্তু সাড়া দিচ্ছে না চন্দ্রপৃষ্ঠে থাকা বিক্রম।

তবে ইতিমধ্যে ইসরো জানিয়েছে, এক বছর কাজ করার কথা থাকলেও অরবিটারটি সাত বছর ধরে কাজ করতে পারবে। কারণ, সফল ও উন্নত উৎক্ষেপণের ফলে অরবিটারের জ্বালানি কম খরচ হয়েছে এবং কর্মক্ষমতা বেড়ে গিয়েছে। বিক্রমের কী অবস্থা, তা জানতে ইসরোর ভরসা ওই অরবিটার।

চন্দ্রযান-২ এর অরবিটার থেকে তোলা তাপচিত্র (থার্মাল ইমেজ) ছাড়া বিক্রমের ছবি এখনও ইসরোর হাতে আসেনি। তাপচিত্রে বিক্রমের উপস্থিতি বোঝা গেলেও সে কী অবস্থায় আছে, তা নিয়ে তাঁরা নিশ্চিত নন বলেই ইসরোর চেয়ারম্যান কে শিবন স্বয়ং সংবাদসংস্থাকে জানিয়েছেন।

তবে জল্পনা চলছেই। ইসরোর একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে একটি সংবাদসংস্থা দাবি করেছে, বিক্রম ভেঙে যায়নি। তাকে গোটা অবস্থায় দেখা গিয়েছে। যদিও দু’টুকরো না হলেও বিক্রম যে অক্ষত অবস্থায় রয়েছে, সে কথা বলা চলে না। দু’কিলোমিটার উপর থেকে আছড়ে পড়লে বা বেশি গতিবেগ নিয়ে অবতরণ করলে তার যন্ত্রপাতির ক্ষতি হতে পারে। সেটা ঘটে থাকলেও বিক্রম কাজ করবে না। ইসরোর এক সূত্রের দাবি, বিক্রমকে পালকের মতো অবতরণ বা সফট ল্যান্ডিংয়ের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। ফলে বেশি গতিবেগ নিয়ে নামলে তার ক্ষতি হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা। সে যেখানে নেমেছে, ঠিক সেখানে ভূমিরূপ কেমন তা-ও জানা নেই। ফলে তাতেও ক্ষতি হতে পারে।

ইন্ডিয়ান সেন্টার ফর স্পেস ফিজিক্সের অধিকর্তা এবং জ্যোতির্বিজ্ঞানী সন্দীপ চক্রবর্তী এ দিন টুইটারে রেখাচিত্র প্রকাশ করে দাবি করেছেন, বিক্রমের সোজা হয়ে নামার কথা ছিল। কিন্তু অবতরণ ব্যর্থ হওয়ায় সে উল্টো হয়ে নামতে পারে। সে ক্ষেত্রে অ্যান্টেনা কাজ করবে না। ইসরোর একটি সূত্রের দাবি, অবতরণের গোলমালে অ্যান্টেনা উল্টে যাওয়া অস্বাভাবিক নয়। ফলে বিক্রমের যোগাযোগ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। সে ক্ষেত্রে বিক্রম কাজ করে চললেও বিজ্ঞানীদের তথ্য জানাতে পারবে না। এ বিষয়েও ইসরো সরকারি ভাবে নিরুত্তর। কিছু বলার মতো তথ্য এখনও তাদের হাতে আসেনি বলেই খবর।

কী ভাবে যোগাযোগের চেষ্টা

• বিক্রমের মাথায় অ্যান্টেনা ১৮০ ডিগ্রি ব্যাসার্ধে যোগাযোগ করতে পারে।

• তার ফলে অরবিটার চাঁদের যে কোনও দিগন্তের উপরে উঠলে যোগাযোগ সম্ভব।

• আবার বেঙ্গালুরুর কন্ট্রোল রুমেও যোগাযোগ সম্ভব।

• বর্তমানে অরবিটার থেকে ক্রমাগত বিক্রমকে সিগন্যাল (পিং করা) পাঠানো হচ্ছে।

• বেঙ্গালুরুর বিয়ালালুতে ইসরোর ডিপ স্পেস নেটওয়ার্ক অ্যান্টেনা আছে। মঙ্গলযান-সহ কৃত্রিম উপগ্রহের সঙ্গে এর মাধ্যমে যোগাযোগ করা হয়।

• ডিপ স্পেস নেটওয়ার্ক থেকেও ক্রমাগত ‘পিং’ করা হচ্ছে হচ্ছে বিক্রমকে।

• মহাকাশে বায়ুমণ্ডল বা অন্য বাধা না থাকায় কম শক্তির প্রযুক্তিতেও যোগাযোগ সম্ভব।

যোগাযোগ না হওয়ার সম্ভাব্য কারণ

• বিক্রমের অ্যান্টেনা ক্ষতিগ্রস্ত

• সোলার প্যানেল ক্ষতিগ্রস্ত। ফলে শক্তি নেই

• বিক্রম মাথা উল্টে পড়ায় অ্যান্টেনা মাটিতে গেঁথে গিয়েছে

শুক্রবার রাতে চাঁদের মাটি থেকে মাত্র ২.১ কিমি উপরে থাকার সময় বিক্রমের সঙ্গে ইসরোর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। পরে তথ্য বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা জানান, অবতরণ ঠিকমতো হয়নি। কিন্তু কেন এই বিপত্তি হল, তা এখনও জানায়নি ইসরো। তারা জানিয়েছে, ত্রুটি খোঁজার জন্য কমিটি নিয়োগ করা হয়েছে। তারা শীঘ্র রিপোর্ট দেবে।

তবে বিক্রমের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান অনেকেই। একটি সূত্রের দাবি, শিবন এই ব্যর্থতা ভুলে আদিত্য অভিযানে মনোনিবেশ করতে বলেছেন।

যদিও ইসরোর অন্য একটি সূত্রের দাবি, প্রত্যেক অভিযানের আলাদা আলাদা দল থাকে, নিজস্ব কর্মসূচিও থাকে। সুতরাং তেমন কিছু বলার প্রশ্ন ওঠে না। চাঁদে দিনের আলো থাকা পর্যন্ত বিক্রম নিয়ে হাল না ছাড়ার কথাই এখনও পর্যন্ত বলা হচ্ছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy