পাড়ি: সোমবার দুপুর ২টো ৪৩। জিএসএলভি মার্ক থ্রি-র যাত্রা শুরু। ছবি: পিটিআই।
পাঁচ, চার, তিন, দুই, এক...। দিগন্তে ছিটকে উঠল বাহুবলী। গুম-গুম শব্দ, ধোঁয়ার কুণ্ডলী ছড়িয়ে মহাকাশে পাড়ি দিল সে। ভারতের দ্বিতীয় চন্দ্রযানকে মাথায় নিয়ে। মিডিয়া সেন্টারের ছাদে হাততালি আর হর্ষধ্বনিতে কান পাতা দায়। সেই উল্লাসে শরিক ইসরোর আধিকারিক, কেন্দ্রীয় তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রকের কর্ত্রী থেকে সাংবাদিক, এমনকি খাবার সরবরাহের দায়িত্বে থাকা কেটারিং সংস্থার কর্মীরাও। ১৪ জুলাই গভীর রাতে (সরকারি হিসেবে ১৫ জুলাই) উৎক্ষেপণের ৫৬ মিনিট ২৪ সেকেন্ড আগে থমকে গিয়েছিল চন্দ্রযাত্রা। তার এক সপ্তাহ পরে, সোমবার বেলা ২টো ৪৩ মিনিটে নির্বিঘ্নে চাঁদে পাড়ি দিল ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো)-র দূত, চন্দ্রযান-২। ইসরো জানিয়েছে, জিএসএলভি মার্ক থ্রি ওরফে বাহুবলী রকেট উৎক্ষেপণের পর ১৬ মিনিট ১৪ সেকেন্ডে চন্দ্রযান-২-কে নির্দিষ্ট কক্ষপথে পৌঁছে দিয়েছে। অর্থাৎ উৎক্ষেপণ সফল।
শ্রীহরিকোটার আকাশে তখনও বাহুবলীর ছেড়ে যাওয়া ধোঁয়া। নয়াদিল্লিতে নিজের সচিবালয় থেকে শুভেচ্ছা জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ইসরোর কর্তারা জানালেন, উৎক্ষেপণের পরেই চন্দ্রযান-২-এর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করেছে বেঙ্গালুরুর বিয়ালুলুতে অবস্থিত ইসরোর ডিপ স্পেস নেটওয়ার্ক অ্যান্টেনা। স্বস্তির ছাপ মুখে, ইসরোর চেয়ারম্যান কে শিবন বললেন, “একটা সমস্যায় প্রথম বার উৎক্ষেপণ থমকে গিয়েছিল। কিন্তু ইসরো প্রবল প্রতাপে ফের অন্য দেশের সঙ্গে লড়াইয়ে ফিরেছে। সে দিন রাত থেকেই ইসরোর ইঞ্জিনিয়ারেরা ঘর-সংসার, বিশ্রাম— সব কিছু ছেড়ে মেরামতিতে নেমে পড়েছিলেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ত্রুটি চিহ্নিত করে রকেট সারিয়ে ফেলা হয়েছিল। সফল উৎক্ষেপণের কৃতিত্ব টিম ইসরোর।”
The historic launch of #Chandrayaan2 from Sriharikota is a proud moment for all Indians. Congratulations to our scientists and engineers for furthering India's indigenous space programme. May @ISRO continue to master new technologies, and continue to conquer new frontiers
— President of India (@rashtrapatibhvn) July 22, 2019
সব প্রস্তুতি সারার পরেও টেনশন ছিল পুরোদস্তুর। উৎক্ষেপণের আগে মিডিয়া সেন্টারে টাঙানো পর্দায় যত বার মিশন কন্ট্রোল সেন্টারে শিবনকে দেখা গিয়েছে. তত বারই উদ্বেগের ছাপ ধরা পড়েছে। এমনকি উপস্থিত প্রাক্তন চেয়ারম্যান কে রাধাকৃষ্ণন এবং এ এস কিরণকুমারকেও যারপরনাই চিন্তিত দেখিয়েছে। উৎক্ষেপণের ১০ মিনিট আগে মিডিয়া সেন্টারের ছাদে দাঁড়ানো ইসরোর মুখপাত্র বি আর গুরুপ্রসাদ বললেন, “প্রচণ্ড টেনশন হচ্ছে। সময় যেন কাটছেই না।” বাহুবলী ৩ হাজার ৮৫০ কিলোগ্রামের চন্দ্রযানকে নিয়ে মেঘের মধ্যে মিলিয়ে যাওয়ার পরেও তাঁর টেনশন কাটেনি।
Indian at heart, Indian in spirit!
— Narendra Modi (@narendramodi) July 22, 2019
What would make every Indian overjoyed is the fact that #Chandrayaan2 is a fully indigenous mission.
It will have an Orbiter for remote sensing the Moon and also a Lander-Rover module for analysis of lunar surface.
কন্ট্রোল রুম থেকে একের পর এক ঘোষণা হচ্ছে: ‘তরল জ্বালানির দহন শুরু’, ‘কঠিন জ্বালানির ট্যাঙ্ক বিচ্ছিন্ন হল’, ‘তরল জ্বালানির ট্যাঙ্ক বিচ্ছিন্ন হল’... । ‘ক্রায়োজেনিক জ্বালানির দহন শুরু’— শুনেই আকাশে মুঠো-হাত ছুড়লেন গুরুপ্রসাদ। এই ক্রায়োজেনিক বা অতি-শীতল জ্বালানি ব্যবহারের প্রযুক্তি পুরোপুরি দেশীয়। এরই ট্যাঙ্কে ত্রুটির কারণে যাত্রা থমকে গিয়েছিল গত সপ্তাহে। ফলে দেশীয় ক্রায়োজেনিক প্রযুক্তির সাফল্যও প্রমাণিত হল জিএসএলভি মার্ক থ্রি-র সফল যাত্রায়। নিজের কাজটি নিখুঁত ভাবে সেরে বাহুবলী মিশেছে মহাকাশে। এ বার যা করার করবে চন্দ্রযান-২। তবে চাঁদেই থামছে না ভারত! বাহুবলী রওনা দিতেই ইসরোর এক কর্তা বলেন, ‘‘মহাকাশে মানুষ পাঠানো (গগনযান প্রকল্প) ২০২২-এর আগে হবে না। তার আগে সূর্যের কাছে পাড়ি দেওয়া যেতে পারে।’’ তাঁর ইঙ্গিত, সূর্যের বাইরের স্তর বা করোনা অঞ্চলে নজরদারির জন্য ‘আদিত্য এল ১’ যেতে পারে ২০২১-এর মধ্যেই।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy