ফাইল ছবি।
৪ রকমের স্নায়বিক রোগে ভুগতে হতে পারে কোভিড রোগীদের। প্রাথমিক উপসর্গহীন অবস্থা থেকে মৃদু ও মাঝারি সংক্রমণে যাঁরা দীর্ঘ দিন ভুগেছেন, এমন কোভিড রোগীদের ক্ষেত্রেই স্নায়বিক রোগে ভোগার আশঙ্কা বেশি। তাঁদের ঘনঘন প্রচণ্ড মাথাব্যথা, ‘ব্রেন ফগ’ বা চিন্তাভাবনা করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলার মতো স্নায়বিক রোগ হতে পারে। স্বাদ ও ঘ্রাণশক্তিও তাঁরা হারিয়ে ফেলতে পারেন। কোভিড চিকিৎসার জন্য যাঁদের কখনও হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়নি, তাঁদেরও ভুগতে হতে পারে এই সব স্নায়বিক রোগে।
আন্তর্জাতিক চিকিৎসা বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘অ্যানালস্ অব ক্লিনিক্যাল অ্যান্ড ট্রান্সলেশনাল নিউরোলজি’-তে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্র এই উদ্বেগজনক খবর দিয়েছে।
প্রাথমিক উপসর্গহীন অবস্থা থেকে মৃদু ও মাঝারি সংক্রমণে দীর্ঘ দিন ভুগেছেন, আমেরিকার ২১টি জায়গার এমন ১০০ জন রোগীকে নিয়ে চালানো হয়েছে গবেষণা। এই কোভিড রোগীদের পরীক্ষা করা হয়েছে শিকাগোর নর্থওয়েস্টার্ন মেমরিয়াল হসপিটালের ক্লিনিকে। গত বছরের মে থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত। প্রাথমিক অসুস্থতার ৪ থেকে ৬ মাসের মধ্যে এই কোভিড রোগীদের পরীক্ষা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
গবেষণাপত্রটি জানিয়েছে এই ১০০ জন কোভিড রোগীর মধ্যে ৫০ জনের রক্তপরীক্ষায় ‘কোভিড নেগেটিভ’ হয়েছিল। বাকি ৫০ জন রক্তপরীক্ষায় ‘কোভিড পজিটিভ’ হয়েছিলেন। গবেষকদের অনুমান, রক্তপরীক্ষায় যাঁদের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছিল, তাঁরা হয়তো তত দিন কোভিড রোগমুক্ত হয়ে পড়েছিলেন।
কী কী দেখেছেন গবেষকরা?
গবেষণাপত্র জানিয়েছে, ১০০ জন কোভিড রোগীর ৮৫ শতাংশের মধ্যেই ৪ ধরনের স্নায়বিক রোগের হদিশ মিলেছে। সবচেয়ে বেশি দেখা গিয়েছে ‘ব্রেন ফগ’ বা চিন্তাভাবনা করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলার মতো রোগ। কোভিড রোগীদের ৮১ শতাংশের মধ্যেই এই রোগে আক্রান্ত হতে দেখা গিয়েছে। ঘনঘন প্রচণ্ড মাথাব্যথায় ভুগতে দেখা গিয়েছে ৬৮ শতাংশ কোভিড রোগীকে। কথা জড়িয়ে যাওয়া বা কথা না বলতে পারার মতো রোগে আক্রান্ত হতে দেখা গিয়েছে ৬০ শতাংশ কোভিড রোগীকে। ৫০ জনেরও বেশি কোভিড রোগী স্বাদ ও ঘ্রাণশক্তি হারিয়ে ফেলেছেন। ঝিমুনিভাব দেখা গিয়েছে ৪৭ শতাংশ রোগীর মধ্যে। ৩০ শতাংশের দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে গিয়েছে। কানে তালা ধরে যাওয়ার সমস্যায় ভুগতে দেখা গিয়েছে ২৯ শতাংশ কোভিড রোগীকে।
গবেষকরা জানিয়েছেন, স্নায়বিক রোগ নয়, এমন সমস্যাতেও ভুগতে দেখা গিয়েছে কোভিড রোগীদের। সেই সব সমস্যার অন্যতম মানসিক ও শারীরিক অবসাদ, ভয়, উৎকণ্ঠা, নিদ্রাহীনতা ও নানা ধরনের আন্ত্রিক রোগ। এই সব রোগ থেকে মুক্ত হয়ে আগের অবস্থায় ফিরতে ৬৫ শতাংশ কোভিড রোগীর প্রায় ৫ মাস সময় লেগেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy